পাতা:স্বদেশ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গ্রন্থপরিচয় У e > সমস্ত ক্ষুদ্রতা ও দীনতার দিকে চাহিয়া চাহিয়া বিলাপ-পরিতাপ করিবার জন্য এখানে আসি নাই। এখানে নূতনতার নিস্তব্ধ সমুদ্রের মধ্যে অবগাহন করিয়া লইব । এখানে কালিও যে নূতন ছিল, আজিও সেই নূতনই রহিয়াছে, কেবল আজ প্রভাতে আমাদের চিন্তাকীটজীর্ণ জীবনযাত্রার অতি ক্ষুদ্র প্রাচীনত্বটাকে ক্ষণকালের জন্য সরাইয়া দিয়া সেই যুগযুগান্তরের অবসানহীন নবীনতার দিকে দৃষ্টিপাত করিবার অবসর লইয়াছি । আমাদের ক্লাস্তজীবনে যখন নূতনত্ব খুজি, তখন ক্রমাগত বৈচিত্র্য এবং উত্তেজনার আশ্রয় লইয়া থাকি । সেই অবিশ্রাম চাঞ্চল্য অাম।দিগকে কেবলি নবতর ক্লান্তি ও জরার দিকেই অগ্রসর করিয়া দেয় । বৈচিত্র্যের খণ্ড খণ্ড ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নূতনত্বকে মুহূর্তে মুহূর্তে গ্রহণ ও বর্জন করিয়া সেই আবর্জনার মধ্যে অন্ত:করণকে কবর দেওয়া হয় । আজ চিরনূতনের রহস্য এই প্রাস্তরবাসিনী প্রকৃতির কাছে শিক্ষা করিয়া লইব । — বঙ্গদর্শন। বৈশাখ ১৩০৯, পৃ. ৩১-৩৪ ৷ ৭ ৷ দেশীয় রাজ্য দেশভেদে জলবায়ু ও প্রাকৃতিক অবস্থার প্রভেদ হইয়া থাকে, এ কথা সকলেই জানেন । সেই ভেদকে স্বীকার না করিলে কাজ চলে না । যাহারা বিল-খালের মধ্যে থাকে, তাহারা মৎস্ত্যব্যবসায়ী হইয়া উঠে, যাহারা সমুদ্রতীরের বন্দরে থাকে, তাহারা দেশবিদেশের সহিত বাণিজ্যে প্রবৃত্ত হয় ; যাহারা সমতল উর্বরাভূমিতে বাস করে, তাহার। ক্লষিকে উপজীবিকা করিয়া তোলে । মরুপ্রায় দেশে যে অণরব বাস করে, তাহাকে যদি অন্যদেশবাসীর ইতিহাস শুনাইয়া বলা যায় যে, কৃষির সাহায্য ব্যতীত উন্নতিলাভ করা যায় না, তবে সে উপদেশ ব্যর্থ হয় এবং কৃষিযোগ্য স্থানের অধিবাসীর নিকট যদি প্রমাণ করিতে বসা