পাতা:স্বদেশ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নূতন ও পুরাতন Y & কি চৌকিটেবিল কাগজপত্র এবং স্তরে স্তরে সুসজ্জিত ল-রিপোর্টের প্রতি মমতা প্রকাশ করলে চলে ? বর্তমান কালে ব্রাহ্মণের সেই বিশেষত্ব আর নেই। কেবল অধ্যয়ন অধ্যাপনা এবং ধর্মালোচনায় তারা নিযুক্ত নন। তারা অধিকাংশই চাকরি করেন, তপস্যা করতে কাউকে দেখি নে। ব্রাহ্মণদের সঙ্গে ব্রাহ্মণেতর জাতির কোনো কাৰ্যবৈষম্য দেখা যায় না, এমন অবস্থায় ব্রাহ্মণ্যের গণ্ডীর মধ্যে বদ্ধ থাকার কোনো সুবিধা কিম্বা সার্থকতা দেখতে পাই নে । কিন্তু সম্প্রতি এমনি হয়ে দাড়িয়েছে যে, ব্রাহ্মণধর্ম যে কেবল ব্রাহ্মণকেই বদ্ধ করেছে তা নয়। শূদ্র, শাস্ত্রের বন্ধন যাদের কাছে কোনো কালেই দৃঢ় ছিল না তারাও, কোনো এক অবসরে পূর্বোক্ত গণ্ডীর মধ্যে প্রবেশ করে বসে আছেন ; এখন আর কিছুতেই স্থান ছাড়তে চান না । পূর্বকালে ব্রাহ্মণেরা শুদ্ধমাত্র জ্ঞান ও ধর্মের অধিকার গ্রহণ করাতে স্বভাবতই শূদ্রের প্রতি সমাজের বিবিধ ক্ষুদ্র কাজের ভার ছিল, স্বতরাং তাদের উপর থেকে আচারবিচার মন্ত্রতন্ত্রের সহস্ৰ বন্ধনপাশ প্রত্যাহরণ করে নিয়ে তাদের গতিবিধি অনেকটা অব্যাহত রাখা হয়েছিল। এখন ভারতব্যাপী একটা প্রকাও লুতাতন্তুজালের মধ্যে ব্রাহ্মণ শূদ্র সকলেই হস্তপদবদ্ধ হয়ে মৃতবৎ নিশ্চল পড়ে আছেন । না তারা পৃথিবীর কাজ করছেন, না পারমার্থিক যোগসাধন করছেন। পূর্বে যে-সকল কাজ ছিল তাও বন্ধ হয়ে গেছে, সম্প্রতি যে কাজ আবিস্তক হয়ে পড়েছে তাকেও পদে পদে বাধা দেওয়া হচ্ছে । অতএব বোঝা উচিত, এখন আমরা যে সংসারের মধ্যে সহসা এসে পড়েছি এখানে প্রাণ এবং মান রক্ষা করতে হলে সর্বদা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আচারবিচার নিয়ে খুতখুত করে, বসনের অগ্রভাগটি তুলে ধরে, নাসিকার অগ্রভাগটুকু কুঞ্চিত করে, একান্ত সস্তপণে পৃথিবীতে চলে বেড়ালে চলবে না— যেন এই বিশাল বিশ্বসংসার একটা পঙ্ককুও, শ্রাবণ মাসের র্কাচ