পাতা:স্বদেশ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নববর্ষ 9 S ভারতবর্ষের এই একাকী থাকিয়া কাজ করিবার ব্রতকে যদি আমরা প্রত্যেকে গ্রহণ করি, তবে এবারকার নববর্ষ আশিসবর্ষণে ও কল্যাণশস্তে পরিপূর্ণ হইবে। দল বাধিবার, টাকা জুটাইবার ও সংকল্পকে স্ফীত করিবার জন্য স্থচিরকাল অপেক্ষা না করিয়া যে যেখানে, আপনার গ্রামে প্রাস্তরে পল্লীতে গৃহে, স্থিরশাস্তচিত্তে, ধৈর্যের সহিত, সন্তোষের সহিত, পুণ্যকর্ম মঙ্গলকর্ম সাধন করিতে আরম্ভ করি ; আড়ম্বরের অভাবে ক্ষুব্ধ না হইয়া, দরিদ্র আয়োজনে কুষ্ঠিত না হইয়া, দেশীয় ভাবে লজ্জিত না হইয়া, কুটীরে থাকিয়া, মাটিতে বসিয়া, উত্তরীয় পরিয়া, সহজভাবে কর্মে প্রবৃত্ত হই ; ধর্মের সহিত কর্মকে, কর্মের সহিত শাস্তিকে জড়িত করিয়া রাখি ; চাতক পক্ষীর ন্যায় বিদেশীর করতালিবর্ষণের দিকে উর্ধ্ব মুখে তাকাইয়া না থাকি— তবে ভারতবর্ষের ভিতরকার যথার্থ বলে আমরা বলী হইব । বাহির হইতে আঘাত পাইতে পারি, বল পাইতে পারি না ; নিজের বল ছাড়া বল নাই । ভারতবর্ষ যেখানে নিজবলে প্রবল, সেই স্থানটি আমরা যদি আবিষ্কার ও অধিকার করিতে পারি, তবে মুহূর্তে আমাদের সমস্ত লজ্জা অপসারিত হইয়া যাইবে । ভারতবর্ষ ছোটো বড়ো, স্ত্রী পুরুষ, সকলকেই মর্যাদা দান করিয়াছে। এবং সে মর্যাদাকে দুরাকাজক্ষার দ্বারা লভ্য করে নাই। বিদেশীরা বাহির হইতে ইহা দেখিতে পায় ཞཱ་) ༦ཁ ব্যক্তি যে পৈতৃক কর্মের মধ্যে জন্ম গ্রহণ করিয়াছে, যে কৰ্ম যাহার পক্ষে স্থলভতম, তাহা পালনেই তাহার গৌরব ; তাহা হইতে ভ্ৰষ্ট হইলেই তাহার অমর্যাদা । এই মর্যাদা মচুন্যত্বকে ধারণ করিয়া রাখিবার একমাত্র উপায়। পৃথিবীতে অবস্থার অসাম্য থাকিবেই, উচ্চ অবস্থা অতি অল্প লোকেরই ভাগ্যে ঘটে ; বাকি সকলেই যদি অবস্থাপন্ন লোকের সহিত ভাগ্য তুলনা করিয়া মনে মনে অমর্যাদা অনুভব করে তবে তাহারা আপন দীনতায় যথার্থই ক্ষুদ্র হইয়। পড়ে। বিলাতের শ্রমজীবী প্রাণপণে কাজ করে বটে, কিন্তু সেই কাজে