পাতা:স্বদেশ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য সভ্যতা Տց (: প্রতিষ্ঠা করিয়াছি। আমাদের সর্বপ্রধান কর্তব্যের আদর্শ এই একটি মন্ত্রেই রহিয়াছে— so ব্রহ্মনিষ্ঠে গৃহস্থ: স্যাৎ তত্ত্বজ্ঞানপরায়ণ: | যদ্যৎ কর্ম প্রকুবীত তদ ব্রহ্মণি সমৰ্পয়েৎ ॥ এই আদর্শ যথার্থভাবে রক্ষা করা ন্যাশনাল কর্তব্য অপেক্ষ দুরূহ এবং মহত্তর । এক্ষণে এই অাদর্শ আমাদের সমাজের মধ্যে সজীব নাই বলিয়াই আমরা যুরোপকে ঈর্ষা করিতেছি । ইহাকে যদি ঘরে ঘরে সঞ্জীবিত করিতে পারি, তবে মউজর বন্দুক ও দমদম বুলেটের সাহায্যে বড়ো হইতে হইবে না ; তবে আমরা যথার্থ স্বাধীন হইব, স্বতন্ত্র হইব, আমাদের বিজেতাদের অপেক্ষ নূ্যন হইব না। কিন্তু তাহদের নিকট হইতে দরখাস্তের দ্বারা যাহা পাইব তাহার দ্বারা আমরা কিছুই বড়ো হইব না । পনেরো ষোলো শতাব্দী খুব দীর্ঘ কাল নহে। নেশনই যে সভ্যতার অভিব্যক্তি, তাহার চরম পরীক্ষা হয় নাই । কিন্তু ইহা দেখিতেছি, তাহার চরিত্র-আদর্শ উচ্চতম নহে। তাহা অন্যায় অবিচার ও মিথ্যার দ্বারা আকীর্ণ, এবং তাহার মজ্জার মধ্যে একটি ভীষণ নিষ্ঠুরতা আছে। এই ন্যাশনাল অাদর্শকেই আমাদের অাদর্শ রূপে বরণ করাতে অামাদের মধ্যেও কি মিথ্যার প্রভাব স্থান পায় নাই ? অামাদের রাষ্ট্রীয় সভাগুলির মধ্যে কি নানা প্রকার মিথ্যা চাতুরী ও আত্মগোপনের প্রাদুর্ভাব নাই ? আমরা কি যথার্থ কথা স্পষ্ট করিয়া বলিতে শিখিতেছি ? আমরা কি পরম্পর বলাবলি করি না যে, নিজের স্বার্থের জন্য যাহা দুষণীয় রাষ্ট্রীয় স্বার্থের জন্য তাহা গর্হিত নহে ? কিন্তু আমাদের শাস্ত্রেই কি বলে না— ধর্ম এব হতো হস্তি ধর্মে রক্ষতি রক্ষিত: | তস্মাৎ ধর্মে ন হস্তব্যে মা নো ধর্মে হতো বধীৎ |