পাতা:স্বদেশ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ব্রাহ্মণ ግሯጭ বাণিজ্য সমাজরক্ষার পক্ষে অত্যাবশু্যক কৰ্ম । সেই সামাজিক আবখ্যক -পালনকে এক সম্প্রদায় যদি আপন সাম্প্রদায়িক কর্ম, আপন কৌলিক গৌরব বলিয়া গ্রহণ করেন, তবে বণিগকৃত্তি সর্বত্রই পরিব্যাপ্ত হইয়া সমাজের অন্যান্য শক্তিকে গ্রাস করিয়া ফেলে না । তা ছাড়া কর্মের মধ্যে ধর্মের অাদশ সর্বদাই জাগ্রত থাকে। ধর্ম এবং জ্ঞানার্জন, যুদ্ধ এবং রাজকাৰ্য, বাণিজ্য এবং শিল্পচর্চা, সমাজের এই তিন অত্যাবহ্যক কৰ্ম । ইহার কোনোটাকেই পরিত্যাগ করা যায় না। ইহার প্রত্যেকটিকেই ধর্মগৌরব কুলগৌরব দান করিয়া সম্প্রদায়বিশেষের হস্তে সমর্পণ করিলে তাহাদিগকে সীমাবদ্ধও করা হয়, অথচ বিশেষ উৎকর্ষসাধনেরও অবসর দেওয়া হয় । কর্মের উত্তেজনাই পাছে কর্তী হইয়া আমাদের আত্মাকে অভিভূত করিয়া দেয়, ভারতবর্ষের এই আশঙ্কা ছিল । তাই ভারতবর্ষে সামাজিক মানুষটি লড়াই করে, বাণিজ্য করে ; কিন্তু নিত্য মানুষটি, সমগ্র মানুষটি শুদ্ধমাত্র সিপাই নহে, শুদ্ধমাত্র বণিক নহে । কর্মকে কুলব্রত করিলে, কর্মকে সামাজিক ধর্ম করিয়া তুলিলে, তবে কর্ম সাধনও হয় অথচ সেই কৰ্ম আপন সীমা লজঘন করিয়া, সমাজের সামঞ্জস্য ভঙ্গ করিয়া, মাতুষের সমস্ত মকুন্যত্বকে আচ্ছন্ন করিয়া, আত্মার রাজসিংহাসন অধিকার করিয়া বসে না । যাহারা দ্বিজ তাহাদিগকে এক সময় কর্ম পরিত্যাগ করিতে হয়। তখন তাহারা আর ব্রাহ্মণ নহেন, ক্ষত্রিয় নহেন, বৈশু নহেন, তখন র্তাহারা নিত্যকালের মানুষ ; তখন কর্ম র্তাহাদের পক্ষে আর ধর্ম নহে, সুতরাং অনায়াসে পরিহার্য । এইরূপে দ্বিজসমাজ বিদ্যা এবং অবিদ্যা উভয়কেই রক্ষা করিয়াছিলেন ; তাহারা বলিয়াছিলেন, অবিদ্যয়া মৃত্যুং তীরত্ব বিদ্যয়ামৃতমশ্বতে। অবিদ্যার দ্বারা মৃত্যু উত্তীর্ণ হইয়া বিদ্যার দ্বারা অমৃত লাভ করিবে । এই চঞ্চল সংসারই মৃত্যুনিকেতন, ইহাই 4