পাতা:স্বদেশ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নূতন ও পুরাতন סא কেমন করে বলব ? এই মথ্যমান সংসারসমুদ্রের মধ্যে সেই নিস্তব্ধতার অবসর কোনো জাতিই পায় নি ; মনে হয়, কেবল ভারতবর্ষই এক কালে দৈবক্রমে সমস্ত পৃথিবীর মধ্যে সেই বিচ্ছিন্নতা লাভ করেছিল এবং অতলম্পর্শের মধ্যে অবগাহন করেছিল । জগৎ যেমন অসীম, মানবের আত্মাও তেমনি অসীম, যারা সেই অনাবিষ্কৃত অন্তর্দেশের পথ অনুসন্ধান করেছিলেন তারা যে কোনো নূতন সত্য এবং কোনো নূতন আনন্দ লাভ করেন নি তা নিতান্ত অবিশ্বাসীর কথা । ভারতবর্ষ তখন একটি রুদ্ধদ্বার নির্জন রহস্যময় পরীক্ষাকক্ষের মতো ছিল ; তার মধ্যে এক অপরূপ মানসিক সভ্যতার গোপন পরীক্ষা চলছিল। যুরোপের মধ্যযুগে যেমন আলকেমি-তত্ত্বাম্বেষীরা গোপন গৃহে নিহিত থেকে বিবিধ অদ্ভুত যন্ত্রতন্ত্র-যোগে চিরজীবনরস (Elixir of Life) আবিষ্কার করবার চেষ্টা করেছিলেন, আমাদের জ্ঞানীরাও সেইরূপ গোপন সতর্কতা-সহকারে অধ্যাত্মিক চিরজীবন-লাভের উপায় অন্বেষণ করেছিলেন। তারা প্রশ্ন করেছিলেন, যেনাহং নামৃতা স্যাম কিমহং তেন কুর্যাম । এবং অত্যন্ত দুঃসাধ্য উপায়ে অস্তরের মধ্যে সেই অমৃতরসের সন্ধানে প্রবৃত্ত হয়েছিলেন। ** তার থেকে কী হতে পারত কে জানে! আলকেমি থেকে যেমন কেমিস্ট্রর উৎপত্তি হয়েছে তেমনি তাদের সেই তপস্যা থেকে মানবের কৗ এক নিগুঢ় নূতন শক্তির আবিষ্কার হতে পারত তা এখন কে বলতে পারে! কিন্তু হঠাৎ দ্বার ভগ্ন করে বাহিরের দুর্দান্ত লোক ভারতবর্ষের সেই পবিত্র পরীক্ষাশালার মধ্যে বলপূর্বক প্রবেশ করলে এবং সেই অন্বেষণের পরিণামফল সাধারণের কাছে অপ্রকাশিতই রয়ে গেল। এখনকার নবীন দুরন্ত সভ্যতার মধ্যে এই পরীক্ষার তেমন প্রশাস্ত অবসর আর কখনো