পাতা:স্বদেশ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Ե-Ե- স্বদেশ বলিয়া, তাহার পক্ষে অনেক সময়েই দ্বিতীয়বার বিবাহ নিতান্ত আবখ্যক । এই নিয়ম যুরোপীয় সমাজতন্ত্ররক্ষার অনুকুল বলিয়াই মুখ্যত ভালো ; ইহার অন্য ভালো যাহা-কিছু আছে, তাহা আকস্মিক, তাহা অবাস্তর। সমাজে অবিশ্বকের অকুরোধে যাহা প্রচলিত হয়, ক্রমে তাহার সহিত ভাবের সৌন্দর্য জড়িত হইয়া পড়ে। বয়ঃপ্রাপ্ত কুমার-কুমারীর স্বাধীন প্রেমাবেগের সৌন্দর্য যুরোপীয় চিত্তে কিরূপ স্থান অধিকার করিয়াছে, তাহা যুরোপের সাহিত্য পড়িলেই প্রতীতি হইবে । সেই প্রেমের আদর্শকে যুরোপীয় কবিরা দিব্য ভাবে উজ্জল করিয়া বর্ণনা করিয়াছেন । আমাদের দেশে পতিব্ৰতা গৃহিণীর কল্যাণপরায়ণ ভাবটিই মধুর হইয়া হিন্দুচিত্তকে অধিকার করিয়াছে। সেই ভাবের সৌন্দর্য আমাদের সাহিত্যে অন্য সকল সৌন্দর্যের উচ্চে স্থান পাইয়াছে। সে আলোচনা আমরা অন্য প্রবন্ধে করিব । কিন্তু তাই বলিয়া যে স্বাধীন প্রেমের সৌন্দর্যে সমস্ত যুরোপীয় সমাজ উজ্জল হইয়া উঠিয়াছে তাহাকে অনাদর করিলে আমাদের অন্ধতা ও মূঢ়তা প্রকাশ হইবে । বস্তুত, তাহা আমাদের হৃদয়কে স্পর্শ করে । যদি না করিত তবে ইংরাজি কাব্য উপন্যাস আমাদের পক্ষে মিথ্যা হইত। সৌন্দর্য হিন্দু বা ইংরাজের মধ্যে জাতিভেদ রক্ষা করিয়া চলে না। ইংরাজি সমাজের আদর্শগত সৌন্দর্যকে সাহিত্য যখন পরিস্ফুট করিয়া দেখায় তখন তাহা আমাদের জাতীয়সংস্কারকে অভিভূত করিয়া হৃদয়ে দীপ্যমান হয়। তেমনি আমাদের হিন্দু পারিবারিক আদর্শের মধ্যে যে একটি কল্যাণময়ী সৌন্দর্যন্ত্রী আছে, তাহা যদি ইংরাজ দেখিতে না পায় তবে ইংরাজ সেই অংশে বর্বর । যুরোপীয় সমাজ অনেক মহাত্মা লোকের স্বষ্টি করিয়াছে ; সেখানে সাহিত্য শিল্প বিজ্ঞান প্রত্যহ উন্নতিলাভ করিয়া চলিতেছে ; এ সমাজ নিজের মহিমা নিজে পদে পদে প্রমাণ করিয়া অগ্রসর হইতেছে ; ইহার