পাতা:স্বর্গীয় ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর - রজনীকান্ত গুপ্ত.pdf/৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

(২৮)

উদ্দেশে, তাঁহারই পবিত্র নামে সেই ব্রতপালনে যত্নশীল হইয়া, তাহার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করিব না? পঞ্চদশবর্ষীয় বালকের অপূৰ্ব স্বার্থত্যাগ ও তেজস্বিতার দৃষ্টান্তে সমগ্র পঞ্জাব সাধনায় অটল, সহিষ্ণুতায় অবিচলিত ও তেজঃপ্রভাবে অনমনীয় হইয়াছিল। আজপর্যন্ত গুরু-গগাবিন্দের মহামন্ত্রের মহীয়সী শক্তি তিরোহিত হয় নাই। সেই শক্তিতেই শিখগণ আজপর্যন্ত সজীব রহিয়াছে সেই শক্তিতেই বেদকীর্তিত পবিত্র পঞ্চনদে অপূর্ব্ব বীরত্বের বিকাশ দেখা গিয়াছে। যিনি পরসেবাতেই সমস্ত বিষয়ের উৎসর্গ করিয়াছিলেন, তাহার উপদেশ কি তদীয় স্বদেশবাসিগণের কর্তব্যবুদ্ধির উদ্দীপক হইবে না? তাহার পবিত্র নামে যে পাঠাগারের প্রতিষ্ঠা হইয়াছে, তদুপলক্ষে আমরা এই স্থানে সমবেত হইয়া তাহার প্রতি ভক্তি ও শ্রদ্ধা প্রকাশ করিতেছি। আশা আছে, সর্বত্র এইরূপ ‘লোকহিতকর কার্য্যের অনুষ্ঠান হইতে থাকিবে। মহাপুরুষের দৃষ্টান্তে আবার এই দেশে অমৃতপ্রবাহের আবির্ভাব হইবে। আবার এই দেশ হীনতাপঙ্কে নিমজ্জিত না হইয়া, মহৎকার্যে পুণ্য ক্ষেত্র বলিয়া পরিগণিত হইবে। যে জাতি শত তাড়াতেও বিচলিত হয় না; “শত আঘাতেও বেদনা বোধ করে না,” শত উত্তেজনা তেও জাড্যদোষে জলাঞ্জলি দেয় না, সেই জাতি স্বার্থপরতার মোহিনী মায়ায় ভ্রুক্ষেপ না করিয়া, পরানুগত্য—পরমুখপ্রেক্ষিতায় আপনাদের হীনভাব না দেখাইয়া, এবং সর্ববিষয়ে নির্জীব নিশ্চেষ্ট, ও নিষ্ক্রিয়” না হইয়া, বিশ্বজয়ী পুরুষসিংহের প্রবর্তিত পথানুসরণে ‘বিশ্বসংসারে প্রসিদ্ধিলাভ করিবে।