পাতা:স্বর্গীয় ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর - রজনীকান্ত গুপ্ত.pdf/৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

(২)

ফল দিয়া, ক্ষুধার্তের ক্ষুধাশান্তি করিয়া থাকে, শাখা-বাহু বিস্তার করিয়া, শত শত বিহঙ্গকে আশ্রয় দান করে, তিনিও সেইরূপ গৃহাগত ভিক্ষার্থীকে দান করিয়া, জীবসমূহকে অন্ন দিয়া, অতিথি, অভ্যাগত ও আর্ত্তজনের আশ্রয়স্বরূপ হইয়া, ভূলোকে স্বর্গীয় শোভা বিকাশ করিতেন।” এইরূপ কঠোর কষ্টসহিষ্ণুতার সহিত অদম্য উদ্যম ও অধ্যবসায়, এবং এইরূপ পরার্থপরতার সহিত সর্ব্বজনহিতৈষিতা ও সর্বার্থত্যাগের দৃষ্টান্ত, আমাদের প্রাচীন ইতিহাসে অনেক প্রাপ্ত হওয়া যায়। কিন্তু পরিবর্ত্তনশীল কালের অনন্ত মহিমায় বা নিয়তির বিচিত্র লীলায়, এখন আমাদের সমাজের দশান্তর ঘটিয়াছে। এখন সে বিলাসবিদ্বেষ সৌখীনতার আবর্ত্তে পড়িয়া নিমজ্জিত হইয়াছে, সে কষ্টসহিষ্ণুতা আলস্য ও শ্রমবিমুখতার সহিত সংগ্রামে পরাজয় স্বীকার করিয়াছে, সে পরনিষ্ঠতা ও নিঃস্বার্থভাবের স্থলে বিকট স্বার্থপরতার কঠোরপীড়নে আশ্রয় প্রার্থী আর্ত্তজন কাতর ভাবে হাহাকার করিতেছে। এই অধঃপতন ও অধোগতির কালে, এই দুঃখ ও দুর্গতির শোচনীয় সময়ে, আমাদের মধ্যে আবার একটি অপূর্ব দৃশ্যের বিকাশ হইয়াছিল। আবার এই পরনিগৃহীত, পরপদদলিত, পরাবজ্ঞাত জাতির মধ্যে একটি মহাপুরুষ আবির্ভূত হইয়া, সেই পূর্বতন স্বর্গীয় ভাব—সেই মহিমান্বিত আর্য্যসমাজের মহত্তর কার্য্যের অবতারণা করিয়াছিলেন। ভীষণ মহামরুতে সুচ্ছায় বৃক্ষ বা সুপেয়জলপূর্ণ সরোবর পাইলে, মরীচিকায় উদ্‌ভ্রান্ত ও আতপ তাপে ক্লান্ত পান্থ যেমন শান্তিলাভ করে, সেই মহাপুরুষকে পাইয়া, রোগজীর্ণ ও সাংসারিক জ্বালাযন্ত্রণায় অবসন্ন লোকেও সেইরূপ শান্তি লাভ করিয়াছিল। “বীরপুরুষ রণস্থলে বিজয়িনী শক্তির পরিচয় দিয়া বীরেন্দ্রবর্গের বরণীয় হইতে পারেন, প্রতিভাশালী প্রতিভা খোইয়া সর্ব্বত্র প্রশংসালাভ করিতে পারেন, গবেষণাকুশল পণ্ডিত