পাতা:স্বর্ণকুমারী দেবীর নূতন গ্রন্থাবলী.djvu/১১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিচিত্রা “তুমি কথা দাও, এবার হারে বা জেতে, আর কখনও এ রকম বাজির খেল খেলবে না ? “যদি শপথ না করি ?”

  • তা হ’লে টাকা দেব না।”

শরৎকুমারের স্বর দৃঢ়-শচীন বুঝিল, উপায়ান্তর নাই। খানিকক্ষপ চুপ করিয়া রছিল-- তাহার পর বলিল,—“বেশ তাই হবে, আমি শপথ করছি, এই আমার শেষ বাজি খেলা ৷” শরৎ পকেট হইতে ৩•• শত টাকা বাহির করিয়া শচীনকে দিল । সৌভাগ্যক্রমে এবার শচীন জিতিল, তাহার ঘোড়া দ্বিতীয় হইল ! ইহাতে ৫০০ শতের উপর সে টাকা পাইয়া গেল, কিন্তু তবুও তাহার সব ধার শোধ গেল না। বিজনকুমার তাহাকে যত টাকা ধার দিয়াছিল, সব টাকা কাটিয়া লইয়া কেবল ৫০ টাক মাত্র তাহার হাতে দিল । তাহাই শরৎকে দিয়া শচীন সামুনরে বলিল, “শর-দ, তুমি কিছু মনে ক’র না, দেখলে ত বিজন-দণ আগে তার টাকা সব কেটে নিলে ; আমি মনে করেছিলুম তোমাকেই আগে দেব ; কিন্তু তা আর হ’ল না। নাই দিকৃগে, ভয় পেয়ো না—আমি নিশ্চয়ই কাল তোমাকে টাকা পাঠিয়ে দেব।” বার বার এইরূপে শর-দাকে আশ্বাস প্রদান করিয়া বিদায় গ্রহণপূর্বক টমটমে আসিয়া উঠিল এবং গাড়ী স্থাকাইয়া দুই বন্ধুতে গৃহযাত্রা করিল। চতুর্থ পরিচ্ছেদ বাজি খেলার নেশা হইতে শচীনকে রক্ষা করিতে পারিল, এই ভাবিয়া শরৎ বেশ একটু আনন্দ অনুভব করিল। তবে এই আনন্দ তাহার আত্মপ্রসাদে পরিণত হইত, যদি ঋণের বদলে টাকাটা সে শচীনকে জানরূপেই দিয়া দিতে পারিত। তাছা পারে নাই ৰলিয়া শরৎকুমারের মনে একটা দুঃখ রহিয়া গেল ; একটা ধিক্কারেরও উদয় হইল। এত বড় হইয়াছে সে, এখনো একটা পয়সার জন্য মামার উপর নির্ভর করিতে হয়। তাছার বৃদ্ধ বয়সের ব্যয়ভার কোথায় সে লাঘব করিবে, -- না এখনও তাহার জন্ত মামারই ভাবিতে হয়। শরৎ বিলাত গেলে এ ভাবনা র্তাহার কত বাড়িয়া বাইবে । সে যদি কলিকাতায় বসিয়া थTांकृछेिन करब्र, खांश श्रण अवश्च ७ नांग्र इहेtउ SS& তিনি মুক্তিলাভ করেন । ধৈর্য্য ধরিয়া কাজ করিলে অল্পদিনের মধ্যে এখানে তাহার পসার জমিবারও সম্ভাবনা—কারণ, সে সার্জারিতে সৰ্ব্বপ্রধান হইয়াছে, কিন্তু মামারই যে বিশেষ ইচ্ছা সে বিলাত যায়,— তিনিই ত একান্ত উৎসাহ সহকারে তাহাকে ইংলণ্ডে পাঠাইতেছেন । কি করিয়া পিতৃতুল্য মাতুলের গভীর স্নেহ-প্রণোদিত মঙ্গল-ইচ্ছাকে সে উপেক্ষা করিবে ? তাহার নিজেরও যদি ইহাতে অনিচ্ছা থাকিত, তাহা হইলেও সে র্তাহার এ ইচ্ছাকে অগ্রাহ করিতে পারিত না । কিন্তু শরতের মনেও এ ইচ্ছা চিরদিনই প্রবল। একদিন এই ভিত্তিমূলে আশাআকাঙ্ক্ষার যে সুন্দর প্রাসাদের নক্সা জাকিয়াছিল, নিরাশার জলে তাহ মুছিয়া গিয়াছে,—তবুও সে বিলাত যাইতে চায় ; কেন না ইহাই এখন তাহার শাস্তিলাভের উপায় । শরৎ শচীনের নিকট হইতে টাকা ফিরাইয়৷ পাইবার অপেক্ষায় রহিল । রবিবারে টাকা পাইবার কথা, কিন্তু মঙ্গলবারেও টাকা আসিল না । তবে কি শচীনকে টাকার জন্ত শরৎ চিঠি লিখিবে ? কিন্তু তাগাদ করিতেও তাহার প্রবৃত্তি হইল না। নিশ্চয়ই শচীন টাকাটা সংগ্ৰছ করিতে পারে নাই,--- পারিলেই নিজে আসিয়া দিয়া ধাইত । চিঠি লিখিলে তাহাকে কেবল বিত্রত করা হইবে মাত্র । কিন্তু আমার কাছে কি বলিয়া জবাবদিহি করিবে সে ? কি করিয়া আবার অগজ টাকা চাহিবে ? শুীমাচরণ ভট্টাচার্য্য র্তাহার শুশলীপতি রাজা অতুলেশ্বরের ষ্টেটের ম্যানেজার। রাণীগঞ্জে ইহার যে কয়লার খনি আছে—প্রায় শনিবারে শুামাচরণ তাহার তত্ত্বাবধান করিতে ষান,–এবং হিসাব নিকাশ সহ প্রায়ই সোমবারে বাড়ী ফেরেন। এবার তিনি সোমবারের পরিবর্তে বুধবারে বাড়ী ফিরিলেন, কিন্তু তখনও শরতের টাকা আসিল না, শরৎ বুঝিল, আর টাকা পাইবার অাশা নাই।— এই ছশ্চিন্তার মধ্যে বিলাত যাওয়ার ইচ্ছাটাও তাহার যেন একরকম ডুবিয়া গেল । মামা খাওয়া দাওয়ার পর অফিসঘরে কাগজের দপ্তরের সম্মুখে টেবিলের নিকট চৌকিতে বসিয়া একটা পায়রার পালকে কান চুলকাইতেছিলেন, এমন সময় শরৎ আসিয়া প্রণাম করিয়া দাড়াইল । পলিকটা টেবিলে কলমদানীতে রাখিয়া তাহাকে সম্মুখের চৌকিতে বসিতে ইঙ্গিত করিয়া বলিলেন,— “ক্যাবিনের টিকিট কেন হ’লে ?” “না, এখনও হয় নি ?”