পাতা:স্বর্ণকুমারী দেবীর নূতন গ্রন্থাবলী.djvu/১৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

> sobo হইয়া আসিল,—জীবনপুরের পুল পার ছষ্টয়া বন্ত রাস্তায় পড়িবfমাত্র ঘোড়া থমকিয় দাড়াইল : তেজস্বী আরব প্রভুর একান্ত বাধ্য, কিন্তু আজ রঞ্জিার ইঙ্গিতে সে চলিল না, কাম পাড় কবি নাড়াইল । রাজা এদিক ওদিক চাহিয়া কিছুষ্ট দেপিতে পাইলেন না, রাত্রি হইয়া পড়িলে বিপদ ঘটিতে পারে তিনি ঘোড়ীকে কশাঘাত করিলেন--"অগত্যা ঘোড়া ছুটিল, কিন্তু দশপদ জমা অগ্রসর হইতে না হইতে হঠাৎ গাছ হইতে একটা বিকটাকার জন্তু রাজার মাথার উপরে লাফ তথা পড়িল—এষ্ট অসন্তকিত অবস্থায় ঘোড়া ও অশ্বারোহী দু’জনেই পড়িয়া গেলেন । জন্তুটা ও সঙ্গে সঙ্গে নীচে পড়িয়া স্তম্ভিত ভাবে দীড়াইল রাজাকে অত্রমণ করিবে বা ঘোড়াকে সে যেন ভাবিবার জ9 মুহূৰ্ত্তকfণ সময় গ্রহণ করিল। এই অবসরে ভূপতি ও অবস্থাতেষ্ট বক্ষের পিস্তল ডান ভস্তে বাহির করিয়া লষ্টয় রাজা তাঙ্গাকে লক্ষ্য করিয়া ছুড়িলেন। কুটকুষ্ট শব্দে কা গুরোক্তি করিয়া জন্তুটা শুষ্টয়া পড়িল । রাজা তখন দেখিলেন, সে একটা বনমানুধ । সেই সময় রাজার পশ্চাৎবর্তী ঘোড়সওয়ার দুই জন রঙ্গস্থলে আসিয়া পড়িয়া মড়ার উপর পাড়ার ঘা চালাঙ্গতে বিলম্ব করিল না। রাজা পড়ি81 জানুcদশে বিশেষ আধাত পাষ্ট্ৰয়াছিলেন । সওয়াবদের সাহtuয্য কষ্টে-শ্রষ্ট পুনরায় ঘোড়ার উপর লসিয়াই কোনরূপে বাডী আসিয়া পড়িলেন,—র্তাহ }র মৃত শীর্ণ lর ৪ তাতার সঙ্গে আনীত হইল । প্রসাদপুরের টেলিগ্রাম অফিস ৯টার পর বন্ধ হইয়া যায়, সুতরাং সে রাত্রে অব কলিকাতায় তার পৌছিল না। পরদিন সংবাদ পাইয়া খামাচরণ ভট্টাচাৰ্য্য যথাসময়ে ডাক্তারাদি সহ যে প্রসাদপুরে আসিয়া উপস্থিত হইলেন, তাঙ্গ পাঠক ইতিপূৰ্ব্বেই অবগত অাছেন । রাজবাড়ীর সকলেই বুঝিল—এই মূতন রকম উৎপাৎ সুজন রায়েরই স্থষ্টি । তাহীর পিতা মাতা কেন যে পুত্রের দুর্জন নাম না দিয়া অনর্থক এই সাধু নামটির পর্য্যন্ত অবমাননা করিয়াছেন, এই পুরাতন আক্ষেপোক্তি আবার অনেকেরই মুথে নূতন স্বরে ধ্বনিত হইতে লাগিল । কিন্তু রাজবাড়ীর মনের কথা বাহিরে প্রকাশ হইতে না হইতে স্বজন রায় নিজেই রাজীকে নিরতিশয় দুঃখ-প্রকাশপুৰ্ব্বক লিখিলেন যে, “ৰ্তাহার পলাতক পোস্য নরবানর কর্তৃক রাজা আহত হইয়াছেন শুনিয়া তাহার দুঃখের শেষ স্বর্ণকুমারী দেবীর গ্রন্থাবলী নাই। বহু চেষ্টাতেও তাছার লোক জন এ কয় দিন উহাকে ধরিতে পারে নাই, রাজা উহাকে মারিয়া ভাগই করিয়াছেন " পত্রে এইরূপ সহানুভূতি প্রকাশ করিয়াই তিনি ক্ষান্ত রহিলেন না, এক দিন য়াজীকে দেখিতেও আসিলেম । তখন জ্যোতিৰ্ম্ময়ী পিতার নিকটে ছিল, তাহার মহিমময়ী সৌন্দৰ্য্য তাহাকে অভিভূত করিয়া তুলিল । জীবনে এই প্রথমবার মনে একটা অনুতাপও জাগিল—যে ইহাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ, অত্যাচার ত{হার কৰ্ত্তব্য হয় নাই। সঙ্গে সঙ্গে তাহার উর্বর মস্তিষ্কে সংকল্প জাগিল যে, এই কন্যার সহিত বিজনকুমারকে বিবাহস্থত্রে গাথিয়া উভয় রায়বংশকে এক করিবেন। ইহাতে রাজকন্যা এবং রাজত্বের অধিকারী হইবেন র্তাহারা— এবং পরম্পরের মনোমালিন্তও চিরদিনের মত বিলুপ্ত হইবে। এ সঙ্কল্প কার্য্যে পরিণত করিবার চেষ্টায় তিনি বিলম্ব করিলেন না, রাজাকে দেখিবার পর মহারাণীর চরণধুলি গ্রহণ-বাসনায় অস্তঃপুরে গমন করিলেন এবং রীতিমত ভাবে এই প্রস্তাব উত্থাপিত করিলেন। মহারাণী ইহাতে মনে মনে সস্তুষ্ট হইলেন, মেয়ের ত বিবাহ দিতেই হইবে, এমন সুবিধামত ঘর বর আর মিলিবে কোথা । তবে নিজের ছেলের উপর তার বিশ্বাস নাই,—রাজ যে এ প্রস্তাবটা কি ভাবে গ্রহণ করিবেন—তাই ত বলা যায় না ! মহারাণী তাই আহলাদ প্রকাশের মধ্যেও একটু কুষ্ঠিত ভাবে বলিলেন,--“আমার ত বা বা খুবষ্ট ইচ্ছা দু’ছাত বাধা পড়ে, দুই পরিবার এক হয়ে যায়। কিন্তু আজি কাল সেদিন নেই তা ও ত দেখছ বাবা । মেয়েকে যে রকম স্বাধীন ক’রে তুলেছে বাপ, কোন দিন সে কারে গলায় নিজে মালা তুলে না দিলে বাচি । সুজন রায় হাসিয়া বলিলেন,—“তা স্বয়ম্বর সভায় আমার ছেলে যদি বসে, তার গলাতেই মাল উঠবে - কাকীমা ; সে বিষয়ে আপনি নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন ।” - মহারাণীও হাসিলেন, বলিলেন, “তা বেশ । বিজনকুমার কি এখানে এসেছে ? তাকে তবে পাঠিয়ে-টাটিয়ে দিও। মেয়ে-ছেলে দুজনের পরিচয় আগে হোকৃ। আজকাল ত আমাদের ইচ্ছাতেই শুধু কাজ হবে না ।” রায়মহাশয় বলিলেন,—“fবজন কলকাতাতেই আছে । আমি যত শীঘ্ৰ পারি বাড়ী গিয়ে তাকেই জমীদারী দেখতে এখানে পাঠাব।”