পাতা:স্বর্ণকুমারী দেবীর নূতন গ্রন্থাবলী.djvu/১৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বপ্নবাণী লোকের কাপড় যোগানে-বাংলা বোম্বায়ের " চারটি মিলের কৰ্ম্ম নয় গে৷ ” অনাদি চড়। মেজাজে কছিল, "ক্রমশঃ আরো হবে ।”

  • আশা ভ সেইরূপই করি। কিন্তু যতক্ষণ তা না হয় অনাদি, ততক্ষণ !”—এ কথা বলিলেন, জ্যোতিৰ্ম্মী অাশাভঙ্গের স্বরে। উত্তর হইল, “ততক্ষণ বিলিতি কাপড়গুলোকে কৰ্ম্মনাশা-জলে নিক্ষেপ কর । ধ্বংসের উপর গঠন আরম্ভ চিরদিনই হয়ে আসছে। এর মধ্যেই এ কাজ স্বরু হয়েছে। কলকাতার ছেলেরা পখ দেখিয়েছে, বিষাদপুরেও শুনছি ইতিমধ্যে অগ্নিকাণ্ড— লুটপাট হয়ে গেছে। বিজনকুমার এ দলের এক জন গুপ্ত নেতা, তিনি এখন ঘোর স্বদেশী । এবার অামাদের পালা, আমর। সব ক্লবের ছেলেরা এ জন্ত প্রস্তুত আছি। দোকানদারদের একবার কেবল নোটিশ দিতে বাকী—আর রাজকুমারী দিদির হুকুমের অপেক্ষণ *

জ্যোতিৰ্ম্ময়ীর মুখমণ্ডল সহসা আরক্তিম হইয়। উঠিল, তিনি ক্ৰোধদীপ্ত স্বরে কহিলেন,—“অনাদি, ভুলে গেছ কি তোমাদের শপথ ? অত্যাচার নিবারণ করাই তোমাদের ব্রত, তার পরিবর্তে অযথা পীড়নে, পৈশাচিক উন্মাদন কাণ্ডে তোমর প্রবৃত্ত হ’তে যাচ্ছ । আর এ কার্য্যে আমার অনুমোদন প্রত্যাশা কর ?” পণ্ডিত মহাশয় “বন্দে মাতরং” ধ্বনিতে সংক্ষেপে জ্যোতিৰ্ম্মীর পোষকতা করিয়া কহিলেন, “বৎসে, আয়ুষ্মতী হও—” এই সময় এক জন দাসী আসিয়া সংবাদ দিল-— “ডাক্তারবাবু আসিতেছেন।” তৃতীয় পরিচ্ছেদ শরৎকুমার গৃহাগত হইয়া অন্ত দিনের স্তায় সাদর অভ্যর্থন লাভ করিলেন না। এমন কি, তৎকর্তৃক নমস্থত হইয়া রাজকুমারী তাহাকে প্রত্যভিবাদন করিতে পৰ্য্যন্ত ভুলিয়া গেলেন। গৃহের এই অস্বাভাবিক মৌনভাব লক্ষ্য করিয়া শরৎকুমার প্রথমটা কিংকৰ্ত্তব্যবিমূঢ় হইয়া পড়িলেন। কিন্তু পর-মুহূর্বেই প্রকৃতিস্থ ভাবে অনাদিকে সম্বোধন করিয়া কছিলেন, *ৰরের আবহাওয়াটা বড় Stuffy ব’লে মনে হচ্ছে ; ব্যাপারটা কি হে অনাদি ?” ब्रांजकूबांग्रेौद्ध छ९ जनांशांछ ५८कखांरब्र बTर्ष झग्न ると● নাই। কিন্তু বীর বালক অনাদি মেীনতায় সে অভিমান-জালা গোপন রাখিয়া দেয়াল-উদ্ধে স্বৰ্য্যোদয়তৈলচিত্রের নিম্নদেশে রক্ষিত বিবেকানন্দ স্বামীর মুন্দর প্রতিমূৰ্ত্তিখানির দিকে ওমভাবে চাহিয়াছিল এবং এই অপ্রকাশু জ্বালার যত কিছু চাপভার, সবটা ডান পদের বুদ্ধাঙ্গুষ্ঠে চাপিয়া ধরিস্থ প্রতিশোধ-পৃহাপরতন্ত্র মার্জার-শাবকের দ্যায় তদ্বারা মেজিয়ার বহুমূল্য কোমল কার্পেটের পশমগুলিকে আক্রমণবিধ্বস্ত করিয়া তুলিয়াছিল। গৃহে চুকিয়াই দেশী চটি জুতা জোড়াটাকে চৌকিয় তলায় সে বিশ্রাম প্রদান করিয়াছিল। আজকাল অনাদি বিলাতি জুতা ত্যাগ করিয়াছে। অনাদির অভিমানে দুঃখ অপেক্ষ ক্রোধের কাজটাই ছিল বেশী। “স্ত্রীলোকের কি একটুও মতিস্থিরতা নাই ! এত দিন ধরিয়৷ স্বদেশানুরাগে হৃদয় জালাইয়া তুলিয়া, দেশের কাষে জীবন উৎসর্গ করিতে শিখাইয়া আঞ্জ যখন ঠিক কায করিবার সময়টি আসিয়া দেখা দিল, তখন কি ন জ্যোতিৰ্ম্মী বলিয়া বসিলেন, "বিলিতি জিনিষ ধ্বংস কোরে না । হে চাণক্যদেব, কি সার কথাই তুমি বলিয়া গিয়াছ ! তোমার বুদ্ধিকে নমস্কার! স্ত্রীবুদ্ধি প্রলয়ঙ্করী বলিয়া প্রলয়ঙ্করী । বিশ্বাস করিও ন৷ তাঁহাকে,—কেহ বিশ্বাস করিও না, কথনে না,-এ জীবনে না, পরজীবনেও না।” শরৎকুমারের প্রশ্নে তাহার ক্রুদ্ধ চিন্তায় বাধা পড়িল । তাহার দিকে চাহিয়া কি উত্তর দিবে— ভাবিয়া ঠিক করিয়া লইবার পূৰ্ব্বেই রাজকুমারী উত্তরস্বরূপ কহিলেন, “এরা বিদেশী অনুকরণে পীড়ননীতি অবলম্বন ক’রে স্বদেশী হ’তে চান । দোকানদারদের যত বিলিতি পণ্য এরা জালিয়ে দেবার মতলব এটেছেন। জুলুম ক’রে এর দেশোদ্ধার ক’রবেন, হায় রে । কার উপর যে আশা বাধব । আপনিও কি এই অত্যাচার অমুমোদন করেন ডাক্তার-দ1 ?” উত্তর হইল,—“মোটেই না।” উচ্চারণে বেশ জোর দিয়াই শরৎকুমার এই কথা বলিলেন। হঠাৎ যেন দক্ষিণ বাতাসের একটা ঝাপটা আসিয়া গৃহের উত্তপ্ত রুদ্ধবায়ুকে ছিন্নভিন্ন করিয়া উড়াইয়া দিল, সেই স্বাস্থ্যপূর্ণ স্নিগ্ধ বায়ু হৃদরোগীর স্তায় সজোরে নিশ্বাসে গ্রহণ করিতে করিতে হৃত-আশা পুনৰ্ণাভ করির রাজকুমারী অনাদির দিকে দৃষ্টিপাত করিলেন। সে দৃষ্টির অর্থ—“শুনিলে ত অনাদি, কি বল তুমি देहांग्ड ?”