পাতা:স্বর্ণকুমারী দেবীর নূতন গ্রন্থাবলী.djvu/১৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ゞくが8 ডাক্তারের এই জোর কথায় অনাদির মনটাও যেন ডিগবাজি খেলিয়া ঠিক স্থানটির উপর গিয়া পড়িল । শরৎকুমারের বিদ্যাবুদ্ধির উপর ভাঙ্গর সুগভীর শ্রদ্ধা । তিনিও যখন তাহাদের কল্লিভ কাৰ্য্যকে দেশের পক্ষে অহিতকর বলিয়াই জ্ঞান করিতেছেন, তখন অপর যে বাছাই বলুক, সে কাৰ্য্য তাছার পরিত্যজ্য । এষ্ট ভাব মনে আসিবামীর পাথরের মত শক্ত রাগটাও তাছার জল গুচয়া পড়িল । টেবিলের ঘড়ীট ঠং করিয়া উঠিয়া জানান দিল—“সময় বহিয়৷ যায় যে, ভাবনাথেষ্ট দিন কাটাইলে চলিবে না ত!” অনাদি ধড়ার দিকে চাহিয়। অতঃপর সহজ ভাবেই বপিল, “দিদি ভাই, ৮টা বাজলো, স্কুলে যাবার জন্ত প্রস্তুত হয়ে নিষ্ট গে । আমাদের কৰ্ত্তব্য, রাণীদিদি, তোমরা দু’জনে মিলে মীমাংসা ক’রে রাখ ।” ব1জকুমারী বুঝিলেন, অনাদিব মনের গতি ফিরিয়াছে । শরৎকুমারকে এজন্ত স্বগত ধন্যবাদ দিয়া প্রকাণ্ডে ইষ্টচিত্তে অনাদিকে কহিলেন, “তুমি ভাই স্কুলে গিয়ে ব্যায়াম-সমিতির ছেলেদের আজ ষিকালে বাগানে আসতে ব’লো। ব্যারাম খেলার দিন আtঙ্গ নয় ; না ডাকলে কেউ এ দিকে আসবে না । আমার রাখি-বন্ধনের নিমন্ত্রণ সবাইকে জানিয়ে ७ि ।” "যে আজ্ঞা” বলিয়া অনাদি তাছার চটি জুতা জোড়ার খোজে প্রবৃত্ত হইল। এই সসন্মান স্বীকারোক্তিতে রাজকুমারীকে সে নিরুত্তর করিয়াছে বলিয়াই মনে করিয়াছিল—কিন্তু তাহার ভুল ভাঙ্গাইয়া জ্যোতিৰ্ম্ময়ী অাবার কহিলেন, "যে অণজ্ঞে’ নয় ! –আমার হাতের ‘রার্থী’ প’রে অণুজ তোমাদের অীর একবার শপথ করতে হবে যে ; দেশের নামে তোমরা কোন অত্যাচার করবে না । ব্যায়াম-সমিতির উদেশ্ব যদি তোমরা কেউ ভুল বুঝে থাক ত সে ভুল আজ ভেঙ্গে যাকৃ। বুঝলে ত অনাদি ?” “বুঝেছি, বুঝেছি আর বেশী বলতে হবে না।” আর একটা কি কথা সে বলিতে যাইতেছিল –কিন্তু চাপিয়া লইয়া করায়ত্ত জুতা জোড়াকে পদায়ত্ত করিয়া চটুপটু গৃহ-নিন্ত্রণস্ত হইল । পণ্ডিত মহাশয় বলিলেন, “আমায়ও এখনি যেতে হবে, ন’টা বাজ লেই উঠব । মায়ের কাছে এলে আর যেতে ইচ্ছ করে না ।" শরৎকুমার বলিলেন, "যেঙ্গে হৰে সকলেবই এক সময়ে—ব্যস্ত হচ্ছেন কেন ।” স্বর্ণকুমারী দেবীর গ্রন্থাবলী রাজকুমারীর এতক্ষণে হাঁস হইল, শরৎকুমার আসিয়া পৰ্য্যন্ত বসেন নাই, অনুশোচিত চিত্তে উঠিয়া দাড়াইয়া বলিলেন, “ডাক্তার-দা, বক্ষন, কি বৰ্ব্বর আমি ! অতিথিকে অভ্যর্থনা করতে পৰ্য্যন্ত ভুলে যাই । মাপ কৰ্ব্বেন ।” শরৎকুমার একটা চৌকির মাথায় হাত রাথিস্থা যেমন দাড়াইয় ছিলেন, তেমনি রহিলেন ; বসিবার কোন লক্ষণই প্রকাশ না করিয়া সহস্তে কহিলেন, “ভয়ে কব, না নিৰ্ভয়ে, অজ্ঞা করুন।” উত্তর হইল -“অবশু নিৰ্ভয়ে ।” আশ্বস্ত হইয়া শরৎকুমার কহিলেন, “আমাদের শাস্ত্রকারগণ যেহেতু শিষ্টাচার প্রয়োগে সাধারণ আলাপের মধ্যে ক্ষম প্রার্থনার যুক্তি দিয়ে যান নি, সেই হেতু বৰ্ত্তমানে আপনার ভাষাকে বিদেশী অমুকরুণভাব-দুষ্ট বলা যায় কি না ? পণ্ডিত মহাশয় তাহার বিচার করুন ।” পণ্ডিত মহাশয় বলিলেন, “এ বিচারের ভার এখনি আমি গ্রহণ করতে অপারক। মমুসংহিতা এবং পাণিনি -এই উভয়বিধ শাস্ত্র আয়ত্ত ক’রে নিয়ে তবে এ প্রশ্নের উত্তর দান করা যেতে পারে, একটু অপেক্ষা করতে হবে বাবাজী।” জ্যোতিৰ্ম্ময়ী সহাস্তে কহিলেন, “আচ্ছা, ক্ষমা করতে হবে না, বম্বন ডাক্তার-দা ?” ডাক্তার বলিলেন, ক্ষমা করবার অধিকারও ত অামাদের নেই রাজকুমারি । মানুষে দোষ করে — দেবতারা ক্ষমা করেন, আমরা মানুষ—আপনারা দেবী -ক্ষমা করতে হয় যদি, সে-ও আপনারাই কৰ্ব্বেন —” পণ্ডিত মহাশয় লোকটি রসগ্রাহী ; ডাক্তারের বাক্যে প্রত হইয়া হস্তোত্তোলনপুৰ্ব্বক কছিলেন, “সাধু-সাধু।” ডাক্তার মস্তক-আনতিতে তাহাকে ধন্যবাদ প্রদানপুৰ্ব্বক জ্যোতিৰ্ম্মীর দিকে চাহিয়া আবার কহিলেন, “আমার এখনি যেতে তবে রাজকুমারী, বসবার ত বেশী সময় নেই ; তা ছাড়া গৃহকত্রী যখন দাড়িয়ে আছেন—তখন—“ জ্যোতিৰ্ম্ময়ী বলিলেন, হ্যা, তখন আপনি বসেন কি ক’রে ? আপনি যে মূৰ্ত্তিমান বিনয়—সে কথাটা ভুলে যেতে হয় ।” কথা কহিতে কহিতে একগাছি “রার্থী’ তুলিয়া লইয়া জ্যোতিৰ্ম্ময়ী জুই এক পদ অগ্রসর হইলেন ; মনের ইচ্ছ “রার্থী’ গাছটি শরৎকুমারের হাতে বাধিয়া দেন । কিন্তু সে ইচ্ছাটা কার্য্যে পরিণত কfখতে