পাতা:স্বর্ণকুমারী দেবীর নূতন গ্রন্থাবলী.djvu/১৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

واناوا ولا “ফুলের নাম * শরৎকুমার ব-অক্ষর আদি ফুলের নাম মনে করিতে চেষ্টা করিলেন—“বকুল, বেলা, বন-তুলসী, বংশীবট, কই ব-ওয়াল ফুলের নাম ত বেঙ্গ মনে আসছে না গুরুজী ? তবে বধু ব’লে অভিধানে একটা কথা আছে, কাব্যকারগণ ফুলের সঙ্গে তার তুলনা ক’রে থাকেন বটে!” পণ্ডিত মহাশয় যে বিপত্নীক, তাহ শরৎকুমার জানিতেন না। গুরুজী একটু অপ্রতিভ হইয়া উত্তরে কছিলেন,—- “কেন, বন্ধু শৰ । আসল ব্যাপারটাও বাবাজি তাই। এই—এই—ধর অরবিন্দ । আমি তা’কে হৃদয় বন্ধু ব’লে মনে করি কি না—তার প্রতি আমার অসীম শ্রদ্ধাভক্তি। কে জানে তা থেকে এমন উণ্টে৷ উৎপত্তি হবে । উপর অংশ বাদ দিয়ে পাখী হতভাগাটা কি না শেষটুকুই ধরলে!” “ভবিষ্যতে সাবধান হবেন,—দেখছেন ত কোথাকার জল কোথায় গড়ায় ! কোন দিন শেষে সাগরিকার সারির মত আপনার পাখী একটা কাওক৷রখান ক'রে বসবে।” এই কণা বলিয়া শরৎকুমার জ্যোতিৰ্ম্মীর দিকে চাহিয়া বিনয়পুৰ্ব্বক বলিলেন, *আপনার গুরুজীকে উপদেশ দিতেও সাহসী হচ্ছি রাজকুমারী, দেথছেন ত--ডাক্তারেরও মতিভ্রম झग्न !” পণ্ডিত মহাশয় বলিলেন, “মতিভ্রম নয়, ঠিক বলেছ বাবাজি,-আমার মনের মধ্যে একটা ভাবনা ধ’রে গেল ! দেখো মা, এ কথাটা যেন কুন্দের কানে না যায়। তিনিও ত এ থেকে উণ্টো বুঝতে श्रृंiरब्रम * তাহার এই অমুনয়-ভঙ্গীতে কণ্ঠগিত হাস্তোছালকে বহ কষ্টে চাপিয়া লইয়। রাজকুমারী কৰুি লেন, “কুনদিদির বাড়ী থেকে আসতে এখনো দেরী আছে, তিনি যত দিনে আসবেন, তত দিনে এ কথাটা চাপা প’ড়ে যাবে।” রাজকুমারীর এ প্রসঙ্গ ভাল লাগিতেছিল না, তিনি অতঃপর ইহা বন্ধ করিবার অভিপ্রয়ে শরৎকুমারের দিকে চাহিয়া গম্ভীরভাবে কছিলেন, - “ডাঙ্কণর দা, আপনি এখানে হঠাৎ এ সময় কেন এলেন, তা ত এখনও বলেন না ।" পণ্ডিত মহাশয় একবার ঘড়ীর দিকে দৃষ্টিপাত করিয়া বলিয়া উঠিলেন, “আমারও যে কৌতুহল জন্মাল,—এখনো পাচ মিনিট অপেক্ষা করতে পারি, कषाके ७tबहे रुहेि " সকলের কৌতুহল নিবারণ করিয়া শরৎকুমার স্বর্ণকুমারী দেবীর গ্রন্থাবলী উত্তর করিলেন, “রাজাবাহাঙ্কুরের দৌত্য নিয়ে এসেছি । আগামী সপ্তাহের রবিবারে প্রসাদপুরে বঙ্গবিভাগ-প্রতিবাদ-কনফারেন্স হবে ; অতিথিসম্বন্ধনীর জন্য আপনি প্রস্তুত হয়ে নিন। সভার প্রোগ্রামও আপনাকেই ঠিক করতে হবে।” জ্যোতিৰ্ম্মী সোৎসাহে বলিয়া উঠিলেন, সত্যি ! বেশ বেশ ৷ অতিথিসৎকারের জন্ত ভাবিনে ডাক্তার-দা। সে বন্দোবস্ত ত আপনারাই করবেন, কিন্তু গানের রিহাসেল জন্ত সমর্মটা যেন একটু সংক্ষেপ মনে হচ্ছে।” শরৎকুমার বলিলেন, “আজ শুক্রবার, এথনো পূর্ণ ১১টা দিন হাতে আছে ; তার মধ্যে আপনার রিহাসেল খুব হয়ে যাবে।” পণ্ডিত মহাশয় এইবার প্রস্থানোদেশে পদ বাড়াইয়া বলিলেন, “ভাবিত হয়ে না মা, আমরা তোমার সহায় আছি । এখন আসি তবে, বিকালে সৰ্ব্বাগ্রে ছুটে আগব ।” পণ্ডিত মহাশয় চলিয়া গেলেন। জ্যোতিৰ্ম্ময়ী বলিলেন, “আমার বড় আহলাদ হচ্ছে ডাক্তার-দা ; অনেকদিন ধ’রে এখানে একটা জাতীয় সভা আহবান করবার কথা আমি বাবাকে বলছি। দেশের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বিশেষতঃ সুরেন্দ্র বাবুর সঙ্গে আলাপ করার ইচ্ছ। বহুদিন ধ’রে আমার মনে জেগেছে, তা বোধ হয় আগেই একদিন আপনাকে বলেছি। খুব সু-খবর ডাক্তার-দৗ *

  • আরও একটি স্ব-খবর আছে রাজকুমারি । মকদ্দমায় আমরা বে-কমুর মুক্তিলাভ করেছি।”

রাজকুমারীর মুখকান্তি জ্যোতিৰ্ম্ময় হইয়া উঠিল, তিনি পূর্ণানলে কহিলেন, “ম্যাজিষ্ট্রেট সাহেব সত্যই দ্যায়াবতার। কালই বিকালে গিয়ে আমি তাদের রাখী পরিয়ে ধন্যবাদ দিয়ে আসব। আর দেখব যদি এই প্রতিবাদ-কনফারেন্সের প্রেসিডেন্ট তাকেই করতে পারি। ডাক্তার-দা, আজ বিকালে রার্থীবন্ধনের সময় আপনিও আসছেন ত ?” “নিশ্চয় । কিন্তু না, সম্ভবতঃ আসতে পারব না, হাসপাতালে আজ বিকালে একটা অস্ত্রচিকিৎসা আছে।” - রাজকুমারী একটু ক্ষুণ্ণ হইয়া পড়িলেন, দু-এক মুহূৰ্ত্ত সময় লইয়া বলিলেন, “তবু চেষ্টা করবেন, :আমি অপেক্ষা করব।--ফিরতে যদি সন্ধ্যা হয়ে ৰাজ তবুও আমি অপেক্ষা করব।” এ কি মধুরতা ! এ কি মাদকতা ! এই দুই চারিটি কথায় শরৎকুমারের মনঃপ্রাণ সহসা