পাতা:স্বর্ণকুমারী দেবীর নূতন গ্রন্থাবলী.djvu/১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৩ “কিন্তু লাষ্টব্রেরীর পথে অস্ত্রশালায় প্রবেশাধিকার ত নিষিদ্ধ। বিশেস কারণ ছাড়া সে দরঙ্গ ত সচরাচর বন্ধ থাকারই কথা । আজকাল কি সেটা খোলা থাকে ?” অস্বাধ্যক্ষ জড়সড় হুষ্টয় কহিলেন, "খোলা থাকে ন—তবে ছেলেরা লাইব্রেরীঘরে এসে যদি কেউ অস্ত্রশাল দেখতে চায় ত থেল হয়ে থাকে। এটা ত অtদেশবিরুদ্ধ না ।” “কিন্তু চৌরকার্য্যে ক্স বসব প্রদান কর। ত সে আদেশের গুঢ় তাৎপৰ্য্য নয়। ছেলেরা পাঠাগারে পড়তে এলেও তাদের উপর অলক্ষে পা বা দেওয়ার জন্য আপনার অধীনে একাধিক সহকাবা নিযুক্ত আছেন। তারা কি কেউ কর্তব্যপালন করেন না ? ছেলের কেই পাঠাগারে এলে বা ত স্থাগার দেখতে চাইলে তারা কি সঙ্গে উপস্থিত থাকেন না ?” অধ্যক্ষ কিংকৰ্ত্তব্যবিমূঢ়ভাবে উত্তর করিলেন— "থাকেন বই পি---থাকৃপাপি ত কথা- তবে কোনো সময় ধদি কেহ কৰ্ত্তব্যভঙ্গ ক’রে থাকেন—তা ত বলতে পারি নে ; ভধনামধারী ছেলেদেব সব সময় ত অবিশ্বাস করা যায় ন; }" “কিন্তু নিয়ম পালন ও অবিশ্বাস করা এক কথা আপনার প্রধান সহকারী কে ? “সন্তে। যকুমার চক্রপ স্তী " “বিশ্বাসী লোক ? “খুবই বিশ্বাধী কেবল বিশ্বাসী নন, তিনি কৰ্ম্মপটু এবং কর্তব্যপরায়ণ। তিlনষ্ট ত সৰ্ব্বাগ্রে প্রাণের মায়ামমতা ত্যাগ ক’রে চোর ধবৃতে যান ।” অস্ত্ৰtধ্যক্ষ এইবার রাজার মুথের দিকে চাহিরা বেশ সোৎসাহে এষ্ট কণাগুলি বলিলেন । রাজা প্রশ্ন করিলেন—“চে1র ধরা পড়েছে ?” “না, ধৰ্ম্ম বতার। সন্তোধকে পিস্তলের গুলাতে জখম ক'রে সে চ'লে যায় ।” "সন্তোষ ছাড়া আর কেহই কি তখন চোরের কাছে এগোতে সাহস করে নি ? প্রসাদপুর তা হ’লে ত দেখছি এত দিন ধ'বে কাপুরুষের দলই পোষণ করছে।” অস্ত্রীধ্যক্ষ পুনরায় অবনতমুখে দুই হাতের আঙ্গুলগুলা একত্র সংলগ্নপুৰ্ব্বক মোচড়াইতে আরম্ভ করিয়া বলিলেন, “আঙ্কে না তা বলছি নে, ধৰ্ম্মাবতার ; ধন্থকের শব্দ পেয়েই আtর সকলে অস্ত্রশালায় ঢুকেছিল, চোর কিন্তু তখন লাইব্রেরীঘরে এসে পালাবার চেষ্টা করছিল—সস্তোয প্রথমে এই স্বরে এসে নক্স ! পুলিসের গোচর করা হয়। স্বর্ণকুমারা দেবীর গ্রন্থাবলী তাকে ধবৃতে গিযে নিজে জখম হয়ে পড়ে। তা’র পর গুলীর শব্দে অন্য লোক সেখানে গিয়ে আর তা’র দেখা পার নি ।” “সন্তোষের আঘাত কি সাংঘাতিক ?” “তা ত বোঝা যায় নি। হাসপাতালে সে রকম বিজ্ঞ ডাক্তার ত এখন কেহ নেই, সে তা তিনি ঠিক বুঝতে পারেন । তবে রোগীকে অচেতন অবস্থাতেই দেখে এসেছি। ডাক্তার শরৎ বাবু যদি তা’কে চিকিৎসা করেন, তা হ’লে বোধ হয় এ যাত্রা সে রক্ষা পেলেও পেতে পারে ।” - “আচ্ছ, সে ব্যবস্থা আমি করব ।” অতঃপর দেওয়ানের দিকে মুখ ফিরাইয়া কহিলেন,-- "কোতোয়ালীতে কি এ সংবাদ দেওয়া হয়েছে ?” এই প্রশ্ন হইতে পাঠক বুঝিতেছেন, প্রসাদপুরে কোতোয়ালী নামধেস্থ একটা কাৰ্য্যবিভাগ এখন ও বৰ্ত্তমান । কিন্তু প্রকৃতপক্ষে মুসলমান আমলের ভূতপূৰ্ব্ব করদ রাজাদিগের সেই ক্ষমতা-গৌরব-নিলয় বর্তমানে অনুষ্ঠানঠাটরূপেই বর্তমান । যে স্থলে পুৰ্ব্বে প্রভূত ক্ষমতা প্রাপ্ত রাজ-কোতোয়াল বহু সৈষ্ঠের অধ্যক্ষরূপে সহররক্ষ। কার্য্যে নিযুক্ত রহিয়া যুদ্ধার্থ প্রস্তুত থাকিতেন, সেই স্থল এখন সৈন্তনিবাসের পরিবর্তে ক্ষুদ্র একটি আদালতঘর মাত্র । অঙ্গুলিগণ্য শস্থধারী প্রহরীর অধিনায়ক রাজ-কোতোয়ালের অধুনা প্রধান কাজ গোয়েন্দাগিরি—অর্থাৎ প্রসাদপুরের ফৌজদারী ঘটনাবলী ইংরেজ গভর্ণমেণ্টের হুকুমে পুলিসকে তিনি জানাইতে বাধ্য। তবে কোন ঘটনা পুলিসকে জানাইতে হইবে, রাজার তাহ নির্ণয় করিবার অধিকার আছে । সাধারণতঃ ফৌজদারীসংক্রান্ত সামান্ত ঘটনাবলীর বিচার কোতোয়ালী হইতেই নিম্পন্ন হইয়া যায় । জটিল মোকৰ্দমাই নছিলে গভর্ণমেণ্ট রাজাকে দায়ী করিতে পারেন। রাজার প্রশ্নে দেওয়ান উত্তর করিলেন,—“আণজ্ঞে, ছা, কোভোয়ালীতে সংবাদ দেওয়া হয়েছে। তবে পুলিসকে সংবাদ দেওয়া হবে কি না--তা আপনার অনুমতিসাপেক্ষ ।” - রাজা বলিলেন,—“এ ঘটনাটা পুলিসকে জানা উচিত মনে হয় । কি বলেন, শুমাচরণ বাৰু?” হ্যামাচরণ বাবু এভক্ষণ মৌনভাবে বিচারপ্রশ্নোত্তর শুনিয়া যাইতেছিলেন, রাজার জিজ্ঞাসায় উত্তর করিলেন,—“হ্যা উচিত বই কি । তাহ ছাড়া এই চুরীর কথা সংবাদপত্রে প্রকাশ করা উচিত।”