পাতা:স্বর্ণকুমারী দেবীর নূতন গ্রন্থাবলী.djvu/১৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՏԳԵ তাই তিনি গৃহিণীকে বৌ-ঠাকরুণ বলিয়াই ডাকেন। বামুনকে থাল উঠাষ্টয়া লইয়া যtষ্টতে ইঙ্গিত করিয়া গৃহিণী তাড়াতাড়ি মাথায় কাপড় টানিয়া দিয়া উঠিয়া দাড়াইয়। যখন বলিলেন--"এস ভাই” তখন স্যামাচরণের মস্তক তাহার পারের দিকে অপনত হুইয়াছে। গৃহিণীকে প্রণাম করিয়া উঠিয়। দাদীর দিকে দৃষ্টিপাত করিয়া তিনি বলিলেন, “ঘরে আসবেন বৌঠান, কথা আছে একটু ।” পাশেই অন্তঃপুরের বসিলার ঘর, ঘরের এক ধীরে নীচে থালচে পশু, অঙ্গধীরে দুইচারি পানী চৌকি-কোঁচের ব্যবস্থা। গৃহিণী গ্রামাচরণকে ঘরে আনিয়! একখানি গদি-খাট বড় চৌকিতে বসিতে অনুরোধ করিলেন। শুমাচরণ না বসিয়া চৌকির পিঠে একখানা হাত রাগিয়া বণিলেন, “অরি ব’সব না বোঠান, দাড়িয়েই কথাটা সেরে নিই, বেলা হ’য়ে গেছে ; এথনি যেতে হবে ।” “কথাটা কি শুনি ?” *আপনার ভুকুম নিতে এসেছি বৌঠান ; হুকুম পেলেই আগামী অসীপেষ্ট বিয়ের একটা দিন স্থির করে ফেলতে পারি।” গৃহিণী এক স্থাতে অলিম্বিত অঞ্চলের খুটটা ধরিয়৷ অন্ত হাতে তাই পাকাষ্টতে পাকাইতে নতদৃষ্টি হইয়াই কহিলেন, “আর একটু দেরী কর না তই, হাসির বিয়েটা হ'য়ে বাকু না আগে ।” শুiমাচরণ কহিলেন, “পাত্র কি ঠিক আছে ?” গৃহিণী মুখ তুলিয় তাহার দিকে দৃষ্টিপাত করিলেন , সে দৃষ্টি ক্রোধপূর্ণ। তিনি ফুদ্ধ স্বরে কঙ্গিলেন, — “কি ক’রে ঠিক হবে ? কত দিন থেকে কৰ্ত্তকে বলছি বিজনকুমারের বীপের কাছে একটি বার যাও, গিয়ে বিয়েটা ঠিক ক’রে এস ; তা গুঁকে কি বাগাতে পারছি ? তুমি ভাই যদি এ ভারটি গ্রহণ কর ।” শুীমাচরণ সর্পভীতের দ্যtয় সহসা সবেগে দুই হাত তফাতে সরিয়া দাড়াইয়া কছিলেন, “বাস্ রে । র্তার কাছে কি আমি এগোতে পারি ? সে ক্ষমতা আমার নেই, মাপ করবেন বৌঠান, আর যা বলবেন—তা বরঞ্চ আমি ঘাড় পেতে মেনে নেব।” গৃহিণী নিরাশ হইয়। বলিলেন, “কি বলব আর ঠাকুরজামাই তবে,—হাসির অদৃষ্টে যা আছে হবে। তবুও ব’লে রাখছি, একটি ভাল পাত্রের চেষ্টায় থেকে ভাই ।” “সে কথা আর আমাকে অধিক বলতে হবে না বৌঠান, হাসিকে নিজের মেয়ের তুল্যই দেখি ।” স্বর্ণকুমারী দেবীর গ্রন্থাবলী এই কথা এইরূপে শেষ করিয়া শুীমাচরণ নিজের মেয়ের বিবাহ-প্রসঙ্গ তুলিলেন। বলিলেন, “অঘ্রাণে বিয়ে দিতেই হবে কোঠান ; আপনার পাজি-পুথি দেখে দিনটা স্তির ক’রে আমাকে ব’লে পাঠালেই আমি প্রস্তুত হ’য়ে নেব । নরেন্দ্র আশ্বিন মাসে এখানে ত আসছে,—সেই সময় আমি একদিন এসে আশীৰ্ব্বাদ ক’রে যাব। এই কথা রইল, কেমন ?” এতদিন বিবাহের সম্বন্ধ হষ্টয়া আছে, কিন্তু এ পৰ্য্যন্ত আশীৰ্ব্বাদ পানপত্রাদিও হয় নাই । যথাসময়ে হইবে এইরূপ মনে করিয়া উভয়পক্ষই নীরব ছিলেন। e গৃহিণীর সম্মতি আদায় করিয়া লইয়া শুমাচরণ আর একবার গেলেন কৰ্ত্তীর নিকট । এ বাড়ীতে আসিয়া প্রথমে যখন তিনি কৰ্ত্তার ঘরে যান, তখন তিনি ছিলেন স্বানের ঘরে । শুীমাচরণ কাজের লোক, তাহার অপেক্ষায় বসিয়া না থাকিয়া ইতিমধ্যে অন্তঃপুরট সুরিয়া আসিলেন। এখানে আসিয়া দেখিলেন, কর্তা তাহার লেখার টেবিলের নিকট বসিয়! ওঁ-শব্দ-চিত্রিত একখানি কাগজ হন্তে পরিয়া পার্শ্বে উপবিষ্ট হাসিকে দর্শনতত্ত্ব বুঝাইতে ব্যস্ত আছেন । গুণমাচরণকে দেপিয়া তিনি অস্বস্তি বোধ করিলেন, তাহার নমস্কারটা পৰ্য্যন্ত ফিরাইয়া দিতে ভুলিয়৷ গিয়া অপীর ভাবে বলিলেন । “একটু কাজে আছি ভাই, বাড়ীর ভিতরটা একবার বেড়িয়ে এস না ।” শুiমাচরণ হাসিয়৷ বলিলেন, “বাড়ীর ভিতর থেকেই আসছি । অস্ত্ৰাণেই অণুভার বিয়ে।” কৰা কাগজের দিকেই দৃষ্টি রাথিয়া বলিলেন, “বিয়ে ! নিমন্ত্রণ করতে এসেছ বুঝি । তা বিয়েতে কিন্তু অর্থও আছে, অনর্থও অাছে।” বাবার কথায় হাসি হাসিয়া অস্থির হইল ; তখন কৃষ্ণলাল মুখ তুলিয়া নিজেই হা হা করিয়া হাসিয়া উঠিলেন। খামাচরণ হাসিয়া বলিলেন, “শুধু নিমন্ত্রণ করতে নয়, নিমন্ত্রণ নিতেও এসেছি । অস্ত্ৰাণে তোমার ছেলের সহিত আমার মেয়ের বিয়ে ঠিক হ’য়ে গেল, বুঝলে ত?” কৃষ্ণলাল বলিলেন, “এত শীগগির । তা গিরি কি বলেন ।” “র্তার মত না নিয়ে কি তোমার কাছে এসেছি ?” কর্তা অধীর অনুনয়ে কহিলেন, “গিন্নি মত দিয়েছেন, তা হ’লেই হোল। আজ একটু ব্যস্ত আছি