পাতা:স্বর্ণকুমারী দেবীর নূতন গ্রন্থাবলী.djvu/১৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

$be কৃষ্ণলাল সন্তুষ্ট হইয়া কছিলেন, "ওম্ অক্ষরের প্রথম গ্রস্থিবিন্দু পরমাত্মাবাচক চিহ্ন, মধ্যবিন্দু পরমাত্মা ও জীবাত্মার মিলনগ্ৰন্থি চিহ্ন। আর যদি ওঁকারশব্দের অস্তেীপান্ত এষ্টরূপে মিলিত কর, তখন ইহা চক্ররূপ ধারণ করে । এই চক্রাস্তের মধ্যে নিখিল বিশ্ব স্থিত, রক্ষিত, ঘূর্ণ্যমান। বুঝলে হাসি ” "হ্যা বাবা ! অামার বড় ভাল লাগছে।” *আর ওঁ-শব্দের মাথার উপর এই যে চন্দ্রবিন্দু, এর অর্থ কি জান ? জীবাত্মা-আমরা যখন পরমাস্মীকে আপনাতে অনুভব করি - তখন তিনি ওঙ্কার পুরুষ—আর যখন তা করিনে, তখন আমরা তাহার অৰ্দ্ধরূপই দেপিতে পাই। তখন তিনি চন্দবিন্দু আকারে সাক্ষিস্বরূপ রূপে আমাদের উদ্ধে বিরাজিত থাকেন । বুঝলে মা ?” “কিন্তু জীবাত্মা ও পরমাত্মার এই একীয়তা অমুভব করণ কিরূপে ?” এই প্রশ্নে কৃষ্ণলীণ অত্যন্ত সন্তুষ্ট গঠলেন,— কহিলেন, “আঃ সেই ত কথা । গাগাঁও ঠিক তোমারই মত এইরূপ প্রশ্ন করেছিলেন । আমার ইচ্ছা কি জান—হাসি ? তুমি যদি গাগীর মন্ত--” ঠিক এই সময় কি গৃহিণী সম্মুখে আসিয়া গঁড়াইবেন । তাহfর অন্ধকার মুখ দেখিয়া কৰ্ত্তার বাপরোধ হইয়া গেল । হাতের কলমটা টেবিলে ফেলিয়া শোচনীয় দৃষ্টিতে প3ীর দিকে চাহিয়া রহিলেন। কিন্তু এ দৃষ্টিতে গিল্পীর পাষাণ হিস্থ গলিল না । তিনি হাসিকে চলিয়; যাইতে অনুজ্ঞা করিয়া দৃঢ় গম্ভীরস্বরে স্বামীকে কহিলেন, “অপাপেই নরেন্দ্রের বিয়ে ঠিক হ’য়ে গেল –কিন্তু তার আগে গসির একটি পাত্র ঠিক করা চাই-ই চাই। মুজন রায়ের ওখানে আজ তোমাকে যেতেই হবে।” কৰ্ত্ত মুখটি চুণ করিয়া বলিলেন, “সে কথা কি আমার মনে নেই ? আমি সে জণ্ঠ দিনের মধ্যে পঞ্চাশবারের জায়গায় একশবার হেমকে তাগিদ দিচ্ছি।” গৃহিণী চড়াস্বরে কহিলেন, "হেমর্টেম আমি জানিনে—তোমাকেই নিজে আজ সেখানে যেতে হবে ।” যেন কৰ্ত্তার স্বজন রায়ের বাড়ী না যাওয়াতেই বিবাহটী বন্ধ আছে !

  • আচ্ছা বেশ, তাই যাব-কিন্তু একটু সময় দাও, লক্ষ্মীটি,—একলা ত যেতে পারিনে,—হেম অণস্বৰু ”

স্বর্ণকুমারী দেবীর গ্রন্থাবলী

  • আবার বলছি, হেম আসবে কি না আসবে —আমি জানিনে—আমি শুধু জানতে চাই—তুমি আজ সেখানে যাবে কি না ? বিকাল পর্য্যস্ত আমি সময় দিচ্ছি,—আর যদি না যাও ত—”

কৰ্ত্ত ব্যতিব্যস্ত হইয়া উঠিয়া বলিলেন, “আর বলতে হবে না -আমি ঠিকই যাব, আজই ষাব, নিশ্চয়ষ্ট যা । শশী —শশে—শশধর, শশাঙ্কলাঞ্ছন —কোথায় তুমি!” ● কৰ্ত্তীবাবুর ডাক তাকে তাহার ভূত্য শশী আসিয়া উপস্থিত হইল – কুদ্ধ গৃহিণী কষ্টে হাস্ত সংবরণ করিয়া এই সময় সরিয়া পড়িলেন।--শশীর প্রিয় মুখদর্শনে কৃষ্ণলালের রুদ্ধ জ্বালামুখী উচ্ছ্বাস হৃদয়ে উথলিয়া উঠিল ; তিনি চীৎকার করিয়া কহিলেন, “কোথায় ছিলি এতক্ষণ অজবুদ্ধি গজানন ?” “এজ্ঞে এইখানেই ত তাছি।” “এইখানেই ত আছিস, তবে ডাকণে সাড়া প। ওয়া যায় না কেন ? হেমকে ডেকে নিয়ে অtয় !" "এজ্ঞে, তিনি এপনো আইসেন নি।” “এখনও অাসে নি ! অ’ জকাল ত দেখছি তার বড় গাঁফেলি হয়েছে । 'ই তবে যা—” “এজ্ঞে চলাম —” “অমনি চল্লাম ! কি বলছি আগে শোল্‌ ৷” “বলতে অজ্ঞে ঠোকু-—” "এখনি গিয়ে তাকে ধ’রে নিয়ে আর,--বুঝলি ত ? খবরদার দেরী করিসনে ৷” “বে আজ্ঞে” বলিয়া সে ফ্রতপদে অদৃপ্ত হইয়া গেণ এবং ইহার পর বার বার—কৰ্ত্তীবাবুর উচ্চ কণ্ঠনিঃস্থত আদরের এবং অনাদরের ডাক-হাকেও তাহার সাড়া-শব্দ পাওয়া গেল না ; তিনি হতাশচিত্তে দ্রুত নিশ্বাস ফেলিতে ফেলিতে চেকিতে বসিয়া চক্ষু মুদ্রিতপূৰ্ব্বক ধ্যানমগ্ন হইলেন। অষ্টম পরিচ্ছেদ ছেম কৃষ্ণলাল বাবুর প্রথম পক্ষের স্ত্রীর ভ্রাত} — অতএব স্মৃতি এবং সম্পর্কের বন্ধনীস্বরূপ । এক সময় কৰ্ত্তাবাবু ইহার অভিভাবক ছিলেন—এখন কর্তারই ইনি সৰ্ব্বেসৰ্ব্ব দক্ষিণহস্ত। হেম নহিলে ত তাহার বিষয়কৰ্ম্ম চলেই না,—তাহ ছাড়া অন্ত অনেক কাজেই হেম তাহার নির্ভরস্থল,—এক কথায় হেম র্তাহীর সর্ববিষয়ের ম্যানেজার। লোকটি যেমন কশ্মিষ্ঠ তেমনি খাটি, হিসাবনিকাশে এক আধলীর গরমিল হইলে সে দিন তাহার