পাতা:স্বর্ণকুমারী দেবীর নূতন গ্রন্থাবলী.djvu/১৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

るbペー আজ্ঞা হোকৃ, আসতে আজ্ঞ হোকৃ”-- বলিতে বলিতে নমস্কার-অভিবাদন সহকারে গাড়ী হইতে নামাইয়া ড্রয়িং রুমে আনিয়া বসাইয়া বলিলেন, “আজ আমার পরম সৌভাগ্য ! দদার পদধূলিতে গৃহ পবিত্ৰ হ’য়ে গেল। বাড়ীর মঙ্গল ত ? হেম ভাল আছ ত ?” কৰ্ত্তার এইরূপ সৌজন্ত-সমাদরে কৃষ্ণলাল এরূপ মুগ্ধ অভিভূত হইয়া পড়িলেন যে, ইহার প্রতিব্যবহারে তাহার মুখ হইতে যেরূপ ভদ্রতার কথা শোভনীয় হইত,- সেরূপ বিছুই এ স্থলে বলা হইল না । তবে তিনি এখানে আসিয়া সঙ্কোচের পরিবৰ্ত্তে ক্রমশ: বেশ ফুপ্তির ভাবই বোধ করিতে লাগি লেন এবং মাঙ্গলিক শেষ করিয়া সুজন রায় যখন অন্য কথা পাড়িলেন, তখন ক্রমশঃ তাহার কথাও যোগইতে লাগিল । স্বজন রায় কহিলেন, "নরেন্দ্র ত বোম্বাই গিয়াছে শুনেছি—শচীন কি করছে এখন।” কৃষ্ণলাল বুঝিলেন—fবজনকুমারের নিকট হইতে মুঞ্জন রায় তাহার ঘরের অনেক খবর পান । তাহার প্রশ্নের উত্তরে তিনি কহিলেন, ‘শচীন এখন বি-এ পাশ দিয়েছে ।” "বি-এ পাশ দিয়েছে । তা বেশ বেশ ! শুনলেও আহ্লাদ হয়। আমার ছেলেট। ত একেবারেই অকালকুষ্মাও ! আমি তাই গিল্পীকে বলি- তোমার ছেলের বে। মিলবে না।” হেম সেই অবসরটা বুথ যাইতে দিল না - বলিল, “তার পাশের কি দরকার বলুন ? বীপের জমীদারীই তার পশি, বিজন ত আমাদের বাড়ীতে প্রায়ই যাওয়া আসা করে--বেীঠাকরণ ত তার রূপেগুণে মুগ্ধ:- তার ভারী ইচ্ছা তাকে জামাই করেন ।” সুজন রায় বুঝিম্বা লইয়াছিলেন– ইহীদের আগমনের উদ্দেশ্য কি ; সুতরাং তিনি এজন্য প্রস্তুত ছিলেন । হেমের কথার উত্তরে বিনয় সহকারে বলিলেন, “আমার ছেলে দাদার, তার মেয়ে আমার আপনার হবে, এর চেয়ে আর কি সৌভাগ্য হ’তে পারে বল ? তবে ছেলেটাকে কোন একটা কাজে ঢুকিয়ে দিয়ে তবে এ কাজ করব ভাবছি।” সুজন রায়ের মনো-নয়নে তখন জ্যোতিৰ্ম্ময়ীর জ্যোতিঃ জাগিতেছিল । দাদ। ইহাতে সায় দে গুয়া ছাড়া আর কি বলিতে পারেন । হেম এই সময় কি একটা কথা বলিতে ৰাইতেছিল, তৎপুর্বেই স্বজন রায় আবার স্বর্ণকুমারা দেবার গ্রন্থাবলী বলিলেন, “আগে ইচ্ছা ছিল ওকে বিলাত পাঠাব--- কিন্তু এখন মনে হয়, দেশে থেকেও কাজ করা যায়। দেশের industryর দিকে লক্ষ্য দেওয়াই আপাততঃ আমাদের প্রধান কৰ্ত্তব্য। একটা দেশলাইয়ের কাটিও আমাদের বিদেশ থেকে আসছে। বঙ্গবিভাগ নিয়ে দেশের লোক ক্ষেপে উঠেছে,–কিন্তু এ সুব কাৰ্য্য নিয়ে ক্ষেপেছে ক’জন বল ত দাদা ? অথচ এই পথই আমাদের দেশের প্রকৃত মুক্তির পথ ।” কৃষ্ণলাল প্রশংসাপূর্ণ দৃষ্টি তাহার মুখের উপর স্থাপিত করিয়া কছিলেন, “সে ত ঠিক কথা !” “তুমি ত দাদা বলে ঠিক কথা ; আমাদের জমীদার ভায়ারা এদিকে মোটেই ধেসতে চান না ; তারা পলিটিকস্ নিয়েই ব্যস্ত ।” অতুলেশ্বরকে লক্ষ্য করিয়াই তিনি এই কথা বলিলেন । হেম বলিল, “হ্যা, আপনি টক্সের ভেতরে যেতে চান না ।” “আমি মনে করি,–ও-সবের মধ্যে যাওয়াটা নিতান্ত নিৰ্ব্বদ্ধিতা,– লাভ কিছু নেই, লোকসান সমুহ ।” কৃষ্ণলাল বলিলেন,"কথাটা আমি সঙ্গত বিবেচন। করি। আজকালকার ছেলের পলিটিক্স নিয়ে কেন যে এত মাথা ব্যথা করে, বুঝতেই পারিনে। আমরা বল্লেই কি ইংরাজরা ভারতবর্ষ আমাদের ছেড়ে দিয়ে চ’লে যাবে ?” হেম বলিল, “না, তা কেউ ত চায় না । আমরা ত ইচ্ছা করিনে যে, ইংরাজের ধাকৃ ;–রাজ্যশাসনে সমক্ষমতা আমরা পেতে চাই,—যে সব অন্যায় রাজনৈতিক নিয়ম দেখতে পাই—তার প্রতিবিধান চাই,—এই মাত্র।” কৃষ্ণলাল বলিলেন,"র্হ্যা, সে ত হওয়া উচিতই,— তাতে ত ইংরাজদেরও আপত্তি হবার কোন কারণ দেখিনে ৷” স্বজন বলিলেন, “তোমার মত সরল মন ত; দর কি দাদা ! তারা ভাবে বেশী ক্ষমতা আমাদের হাতে দিলে ক্রমশ: একেবারেই তাদের ক্ষমতা চলে যাবে—তাদের দিকটাও বুঝে দেখ ।” হেম বলিল, “তাদের দিক ত তারা খুব বেশী ক’রেই দেখছে, আমাদের দিক যে একটুও দেখতে চায় না ।” “কিন্তু ভায়া, আমরা বল্লেষ্ট কি তারা দেখবে ?” “সে কথা পলিটিসাল্লুরাই বলতে পারেন, তবে শুনেছি পলি