পাতা:স্বর্ণকুমারী দেবীর নূতন গ্রন্থাবলী.djvu/১৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বপ্নবাণী "রাজা বাইরে যাচ্ছেন—আমায়ও সঙ্গে যেতে হবে, —একটা কথা বলতে এলুম হাসি ! তোমার মাকে ব’লো মা, পরশু আমি নরেনকে আশীৰ্ব্বাদ করতে যাব।" হাসি বলিল, “আচ্ছা বলব । আপনি ভা হ’লে বোধ হয় শীঘ্র ফিরবেন না ; প্রণাম ক’রে নিই।” হাসি প্রণাম করিল। শুiমাচরণ অার একবার বলিলেন, "হাসি, তা হ’লে ব'লে। মা তোমার মাকে যে, পল্পগু বিকালের দিকে আমরা যাব। বেশী আয়োজন যেন না করেন । অণশীৰ্ব্বাদে সমারোহ পৰ্ব্ব কিছু থাকবে না,—বড় জোর দু-একটি বন্ধুকে মাত্র সঙ্গে নিতে পারি—” হালি যথাসমরে বাড়ী আসিয়া সকলকে এই খবর দিল । একাদশ পরিচ্ছেদ গুণমাচরণ আজ নরেনকে আশীৰ্ব্বাদ করিতে আসিবেন, অন্তঃপুরে রন্ধনের ধূম লাগিয়াছে। যদিও গুণমাচরণ বলিয়াছেন, সঙ্গে বেশী লোকজন আনিবেন না, তবুও গোণাগুন্তি গোটকতক করিয়া বাজারে জলখাবারেই ত আর পাত সাজান যায় না।– আর হ্যামাচরণকে বিশ্বাসই বা কি ? শেয প্রহরে যদি মত পরিবর্তন করিয়া স-বন্ধুবান্ধবেই আসিয়া হাজির হন। তখন মুখুয্যে-বাড়ীর স্বনাম রক্ষণ হইবে কিরূপে ? বিশেষতঃ রন্ধনকলার পরিচয়প্রদানের এই ত উত্তম অবসয় – এ বাড়ীর মেয়ের এমন নিৰ্ব্বদ্ধি কেহ নহেন যে, শুiামাচরণের কথায় এই সুযোগটি খোয়াইবেন ! দ্বিপ্রহরের পর হইতে মুখুয্যে-ঘরণী পোলাও কালিয়া কোপ্ত প্রভৃতির আয়োজনে ব্যস্ত—আর মিষ্টান্ন প্রস্তুতের ভার গ্রহণ করিয়াছিলেন হাসি ও হাসির দিদিমা । দু’জনে মিলিয়া, রসগোল্লা, খাজা, পান্ধয়া, সন্দেশ, সরভাজা, মালাইভোগ, এ সকল প্রস্তুভ করিয়া ফেলিয়াছেন, বাকি কেবল বাদসাহী মিঠাই । বেশনের বড় বড় দাম তপ্ত কড়া হইতে বাঝরিযোগে উঠাইয়া সবে মাত্র এখন দিদিমা তাহী রসে ফেলিতেছেন। পরে ইহার সহিত সর ক্ষীর প্রভৃতি নানা মসলা মিশাইয় রন্ধন-কাৰ্য্য সমাধা করিবেন। এই মিষ্ট ভোগ মুখুয্যে-বাড়ীর নিজস্ব কলা। এই বিদ্যালাভ-পিপাসায় অনেক ঘরণী ゞb°。 ইহাদের শিষ্যত্ব গ্রহণ করিয়াছেন বটে, কিন্তু কেহই এ পৰ্য্যন্ত গুরুমৰ্য্যাদা রক্ষা করিতে পারেন নাই। এক এক রকম মিষ্টান্ন যেমন প্রস্তুত হইতেছে, অমনি নাতনির রসনারূপ কষ্টিপাথরযোগে দিদিম। তাহার ভাল-মন্দ যাচাই করিয়া লইতেছেন। মিষ্ট চাকিতে চাকিতে বেচারী হাসির আকণ্ঠ পুর্ণ হইয়া উঠিয়াছে। বিদ্রোহী হইয়াও ফল নাই, অহুযোগ অনুরোধের •দায়ে তাহাকে শেষে বশ মানিতেই হইবে। তবে এই ঝগড়া-বাটির মধ্যে পড়িয়া তাহদের হাতের মিষ্টগুলা কিন্তু অধিকতর মিষ্টতা লাভ করিয়াছে। বেলা যখন প্রায় ছয়টা, তখন শচীন রন্ধনশালায় গিয়া মাকে বলিল, “গাঙ্গুলি মহাশয় এসেছেন।” মুগুযে-ঘরণী জিজ্ঞাসা করিলেন, “ক’জন তারা ?” শচীন উত্তর করিল, “তা আমি দেখি নি । তোমার কথামত র্তার গাড়ীখানা বাড়ী ঢুকতেই আমি খবর দিতে এলুম। মোট দেখলুম একখানা গাড়ী ; তা হ’লে চার জনের বেশী লোক ত নয়ই ।” মা বলিলেন, “তুই য। শচীন, দৌড়ে ভোর দাদাকে পাশের বাড়ী থেকে ডেকে নিয়ে আয়, লক্ষ্মীছেলে । অমলের সঙ্গে সে দেখা করতে গেছে । ডাকলেই আসবে বলেছে।” ब्रांब्रांघरब्रग्न ठिंद श्रृंit*हे मिटेitब्रब्र घञ्च । *प्लौटनग्न গলা শুনিয়া দিদিম৷ ডাকিলেন, ‘শচীন এসেছিস্ ? আয়, আয়, মিষ্টি গোটাকতক চেকে যা।” হালির মা শাশুড়ীর উদেশে একটু উচ্চ গলায় কহিলেন, “ঠাকুর জামাই এসেছেন মা, শচীন যাকৃ— নরেনকে ওবাড়ী থেকে ডেকে আমুক । ফিরে এসে মিষ্টি চাকবে এখন ।” কিন্তু শচীন লোভ-সংবরণে কৰ্ত্তব্য পালন করিবার ছেলে নয় । সে তাড়াতাড়ি দিদিমার কাছে হাজির হইল । তখন চুল হইতে মিঠাইএর খোলা নামিয়াছে, তিনি রন্ধনের ভার হাসিকে অর্পণ করিয়া সরতাজা,রসগোলা ও পাস্তুয় এক একটা শচীনের হাতে দিয়া বলিলেন, “শুiমাচরণ এসে পড়লো, এখনও নরেনের দেখা নেই! আচ্ছ ছেলে যা হ’ক ] খেয়ে নিয়ে শীঘ্র যা, ডেকে নিরে আtয় তাকে ।” শচীন বলিল, “যাচ্ছি যাচ্ছি—এত তাড়াতাড়ি কি ! বাবা ত ঘরে আছেন ; জলে ভ পড়েন নি র্তার। আমাকে আর খান সরভাজা আর ফুট পাস্তুর দাও।” দিদিমা তাহার প্রার্থন পূর্ণ করিয়া বলিলেন, “এইবার যা, ডেকে নিয়ে আয় দাদাকে। একখানা