পাতা:স্বর্ণকুমারী দেবীর নূতন গ্রন্থাবলী.djvu/১৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বপ্নবাণী বড় সুন্দর, কিন্তু ইহায় পরিকল্পনা ঠিক বুঝিতে পারছি নে। কৃষ্ণলাল ডাকিলেন, “হাসি, তোমার ছবিখানির অর্থ রায়মণায়কে বুঝিয়ে দণ ৭ ত ম৷ ” হসি নিকটে আপিয়া দাড়াইল, কৃষ্ণলাল ওঁ শবেীর দিকে চাহিয়া রহিলেন । রাজা কহিলেন, “আপনি ত খুব সুন্দর ছবি আঁকেন ? ছবিখানি ঠিক স্বপ্ন দৃশ্লর মত দেখাচ্ছে ।” হালি বিস্ময় প্রকাশ করিয়া কহিল, “ঠিক ত ধরেছেন আপনি ! সভাই ওখান আমার স্বপ্ন ত্র । আমি স্বপ্ন দেখেছিলুম-যেন ছোট্ট একখনি নৌকা ক'রে সমুদ্রে ভেসে চলেছি ;–হঠাৎ সমুদ্রটা আকাশ হয়ে গেল, আর নৌকাখানা আকাশ পথে উড়ে চলতে লাগলোঁ | চলেছি ত চলেছি, উড়ন্ত নৌকায় ছুটে ছুটে চলেছি,—আর থামার সাধ্য নেই,—নামার সাধ্য নেই,— আকাশের তারাগুলো সব আমাকে ঘিরে দাড়িয়েছে – আমার মাথা ঘুরে উঠলো, নিশ্বাস বন্ধ হয় এল,— প্রাণ আকুলি ব্যাকুলি করতে লাগলো, হঠাৎ একখানা কাল মেঘের ভিত্তর থেকে কার ব৷fশ বেজে উঠলো, আর আমার ঘুমও ভেঙ্গে গেল ।” রাজা স্বপ্ন-কথা নিবিষ্ট-চিত্তে শুনিতে লাগিলেন, হাসির কাহিনী শেষ হইলে, রাজা সহাস্তে কহিলেন, — “স্বপ্নটি যেমন বিচিত্র, তার-জগতের মধ্যে স্বপ্নদেবীর এই মূৰ্ত্তিটও সেইরূপ চমৎকার! আপনি বুঝি সেই সন্ধ্যায় কিন্নব-হ্রদে বেড়াচ্ছলেন ?” হাসির মনে পড়িল গত পুৰ্ব্ব-অপরাহেব কথা, সে সলজে কহিল, “ঠিক মনে পড়ছে না ।” রাজ। কহিলেন, “আপনার ছবিখানি দেখে আমার একটি গান মনে পড়ছে । ছবিটির সঙ্গে গানটির যে বিশেষ মিল আছে তা নয়, কিন্তু ছবিখানি দেখছি আর সেই গানটি আমার মনে আসছে।" হাসি অসুনয়ের স্বরে কহিল, “আপনি গাবেন সেই গানটি ।” এখন মধুর দৃষ্টিতে চাহিয়া উহাকে হাসি এই অনুরোধ কfএল যে, সেই দৃষ্টিতে দৃষ্টানবদ্ধ করিয়া সহসা রাজা আnস্মহারা ইহয়া পাড়া লন, তাহার সৰ্ব্বাঙ্গে বহুদিনের বিস্কৃত পুলক-শিহরণ উঠিল । রাজা কোন উত্তর কারবার পুৰ্ব্বেই গুণমাচরণ কহিলেন, Tর রী রাধু বাহান্থর বেশ গাইতে পারেন । ছেড়েনি। মা ওঁকে, ধ’রে পড় " অাজ সহসা শ্যাম{চরণ তোতলা হুষ্টয়া পড়িয়াছেন, রায়মহাশয়ের নামটা ক্রমাগতই তাহার মুখে বাধয়। যাইতেছে । শুধুমাচরণ কাজের মাছুষ, এই কথা বলিতে বলিতে બ}-૨૮ Sసిరి দেওয়ালের বড় তানপুরাটা খুলিয়া তক্তার উপর রাখিয়া দিলেন। হাসি আবার বলিল, “গানু না আপনার মনের গানটি " রাজা কহিলেন, “আমারও কিন্তু অনুরোধ আছে, তার পর আপনাকেও গাইতে হবে!” এই সময় শুীমাচরণ ও শব্দের দিক হইভে মুখ ফিরাষ্ট্রয় একবার বালয় উঠিলেন, “আপনি হাসিকে আপনি আপনি করছেন—বড় বেমানান শোনাচ্ছে, তুমিই বলিবেন ওকে ” রাজ। এ কথার কোন উত্তর না করিয়া তক্তায় আসিয়া বসিয়া তানপুরাটা হাতে তুলিয়া লইলেন। কিছুক্ষণ তাহার কান টেপাটুপি করিয়া মুর মিলাইয়া গান ধরিলেন— কে আমারে বারেবারে করুণ স্বরে ডাকে সুদূরে ? ভবনবাসী মন আমার ভূবনপানে উড়ে । চিনেছি গো বাশিটি তার, সুরে শুনি হাসিটি তার, পারে যেতে বারেক শুধু দেখেছি বঁধুরে, সেই বিদেশী বঁধুরে; সে যে স্মৃতির খেয়া বেয়ে চলে স্বপ্ন নদীর পুরে । ওগো কেমন ক’রে মিলবে তীরে হার ? যেমন ক’রে সন্ধ্যা-তারা, পুব গগনে দিশাঙ্কার, তোরের বেলী অরুণ-ধারায় भिल हेai १iब्र ; তেমনি ক’রেই মিলবে, তাহার-- লুটুবে পায়ে ঘুরে সে যে স্মৃতির খেয়া বেয়ে চলে স্বপ্ন নদীর পুরে । মিলবে তারে কবে ওগো কথন ? তথন ওগে। তথন— ফাগুন হাওয়া আগুন হ’য়ে, কাল- ব'শেথের দে। লা ব'য়ে চলবে যখন ঝড়ের আগে আগে, ঘনঘটা শু{ rার মেঘে—- ইন্দ্ৰধন্থ চুপে চুপ, প্রবাশ হয়ে মোহন রূপে লুকিয়ে পড়বে যখন পুনঃ নিfবড় অসুরাগে,— তখন ওগো তথম.---- রুদ্রতালে বন্ধু তোমার নাচবে মধুরে—