পাতা:স্বর্ণকুমারী দেবীর নূতন গ্রন্থাবলী.djvu/২১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

<SNe তাহার পর মাটা হইতে শূন্ত কলিকাটি হাতে লইয়া তন্মধ্যে গাজা ঠাসিতে লাগিলেন । করুণাময়ী নীরবে বসিয়া রছিলেন । কাৰ্য্য শেষ হইলে হাত তুলিয়া আশীৰ্ব্বাদ করিয়া করুণাময়ীকে ভৈরণী বলিলেন, "ভাল হোক্ বেটী, তোর ভাল হোক । কি চাস তুই ?” বলিয়া তিনি চিমটার দ্বারা অগ্নিকুণ্ডের আগুন উঠাইয়া গাজা ধরাইয় তাহাতে টান দিলেন । করুণাময়ী বলিলেন, “সেই আশীৰ্ব্বাদই চাইতে এসেছি, ভৈরবী-ম। আমাকে দয়া করুন ।” ভৈরবী তখন মুখ হইতে ধুম ত্যাগ ফরিয়া বলিলেন, “কেই বা ভাল করে, কেই বা মন্দ করে ! কি বা ভাল, কি-ই বা মন্দ রে বেটী ?” করুণাময়ী বলিলেন, “ও কথা শুনবে না আমি, ভাল করতেই হবে আমার, নইলে পায়ে হত্য দিয়ে প’ডে থাকুব ।” ভৈরবী গাছিলেন,— *१भ् १अ १म् ११भ् बिभ्र ९९म् ८ष्ठङ्गव।। ८ङझरी, জুনিয়া জোড়া সাগর-তুফান, তোরা কে মরবি আর কে ব্ল’বি ।” তাহার পর হঠাৎ বলিয়া উঠিলেন, “তুই কি বেটা সন্তানহারা ।” করুণাময়ার ভক্তি আরও বাড়িয়া উঠিল ; অশ্রু মুছিয়া বলিলেন, “তুমি ত বুঝতেই পারছ সব। আমি অধিক কি আর বলব । আমি, মা, বড় দুঃখী, অনেকগুলি সস্তানকে অকালে যমের হাতে তুলে দিয়েছি। সম্প্রতি কোলের ছেলেটিকেও তাকে দিয়ে এসেছি। আশীৰ্ব্বাদ কর, ভৈরবী-ম, যে ক'টি এখনও বাকী আছে, তাদের যেন না হারাই। গ্রহশাস্তির জষ্ঠ যা তুমি চা’বে, তাই দেব আমি " করুণাময়ী এই কামনায় সাধু-সন্ন্যাপী দৈবজ্ঞ প্রভৃতি অনেকরই উদরপূৰ্ত্তি করিয়৷ আসিতেছেন । ভৈরবী একটু হাদিয়া কলিকাটা মুখ হইতে হাতে লইয়া বলিলেন, “টাকা-কড়ির ভাবনা অনেক কাল এড়িয়েছি, বেটী! শাস্তি-অশান্তিও আমার হাত ধরা নয় রে ; ভজন-পূজন, সিদ্ধি-সাধন সব মিছে রে বেটী, সব মিছে । তাঁর পিছে কেন ঘুরে বেড়াচ্ছিস্ ?” স্বর্ণকুমারী দেবীর গ্রন্থাবলী করুণাময়ী দেখিলেন, টাকার কথা বলির তিনি ভুল করিয়াছেন। মিনতির স্বরে কহিলেন, "ভৈরবীমা, অজ্ঞানের দোষ নিও না। আমার ছেলেগুলি যেন রক্ষা পায়, এই দয়াটুকু তোমায় করতেই হবে * ভৈরবী বলিলেন, “তোর এখন ক’টি ছেলে বেটী ।” করুণাময়ী বলিলেন, “সাতটি ছেলের মধ্যে এখন মোটে দাড়িয়েছে তিনটি, ভৈরবী-ম৷ ” র্তাহার কথা শেষ হইতে না হইতে ১৩ বৎসরের একটি বালক আসিয়া মাতার পিঠের দিকে বসিয়া র্তাহার গলা জড়াইয়। ধরিল । করুণাময়ী ভৈরবীকে বলিলেন, “এইটি আমার বড় ছেলে ।” ভৈরবী প্রফুল্ল দৃষ্টিতে তাহাকে নিরীক্ষণ করিয়া দেখিতে লাগিলেন । মাতা পুত্রকে বলিলেন, *ধ সাগর, ভৈরবীকে প্রণাম কর।” বালক প্রণাম করিবার পর ভৈরবী ভূপত্তিত এক খণ্ড অঙ্গার হস্তে গ্রহণ করিয়া তাহার দ্বারা বালকের কপালে তিলক-রেখা টানিয়া দিয়া কহিলেন, "যা বেটী, তোর আর কোন মার নেই ।” করুণাময়ী অনিশিত চিত্তে ভৈরবীকে পুন: প্ৰণাম করিয়া পুত্রকে কহিলেন, “যা বাবা, তুই তোর ভাই দু'টিকে এখানে নিয়ে আtয় দেখি ।” বালক চলিয়া গেল । ভৈরবী বলিলেন, “তোর এমন সব ছেলে রয়েছে বেটী, তুই তবু কাস্ ি?” করুণাময়ী কহিলেন, “আগে ত বলেছি, মা, সাতটির মধ্যে এখন তিনটিতে ঠেকেছে, তাইতে ভয় পাই ।” ভৈরবী বলিলেন, “তবু ভ তিনটিও তোর সঙ্গে আছে, বেটী, আমার যে একটিও নেই।” এই দুঃখের স্বর করুণাময়ীর মৰ্ম্ম স্পর্শ করিল। ভৈরবী আবার বলিলেন, "তোর সস্তানগুলি যে যম গ্রহণ করেছে, আর আমি বে আমার মিজের ছেলেকে নিজের হাতে জলে তাসিয়ে দিয়েছি - করুণাময়ী স্তম্ভিত হইয়া গেলেন । ১২ বৎসর পূৰ্ব্বকার কথা তাহার মনে পড়িল । তাহার প্রথম গর্তের শিশু হারাইয়। তিনি তখন বড় কণভর হইয়া পডিয়াছিলেন । স্বামী নিখিলচাদ স্ত্রীকে সুস্থ