পাতা:স্বর্ণকুমারী দেবীর নূতন গ্রন্থাবলী.djvu/২২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বপ্ন না কি উৎক্ষিপ্ত উচ্ছাসে, কোথাও বা ক্ষীণধারায় নীচের পাষাণদেহে পড়িয়া নিরুদ্ধেশ প্রবাহে দূরদূরাস্তরে যাত্রা করিতেছিল। এই বনস্থলের কোন অদৃশু স্থানে বসিয়া গৌরী তপস্তারত, কে জানে। কি রুদ্ৰগম্ভীর দৃষ্ঠ ! দেখিয়া মনে হইল, এমন মৰ্ম্মস্পশী শোভা বুঝি আর কখনও দেখি নাই । . গতবৎসর দার্জিলিংয়ে বাচ্চছিলের রূপেও যে এইরূপ মোহিত হইয়াছিলাম, সে কথা এখন একেবারেই ভুলিয়া গেলাম। হায় রে বিভ্রান্তচিত্ত মানব । কতক্ষণ আমি এইরূপ মুগ্ধচিত্তে ৰসিয়া ছিলাম, বলিতে পারি না । আহারের ডাকে হঠাৎ চমক ভাঙ্গিল । তথন দেখিলাম, বেশ ক্ষুধার উদ্রেক হইয়াছে, অবিলম্বে রন্ধনস্থানে আসিয়া উপনীত হইলাম। দিদি আমার পাতে খিচুড়ী চালিতে ঢালিতে বলিলেন, “দেখার সাষ মিটেছে ত ? এবার ক্ষিদে মিটিয়ে ভাল ক’রে খ দেখি ।” এই সময় কাঠের ৰোঝা বহিয়া কতকগুলি বুনো মেয়ে কিছু দূরে একটা গাছতলায় আসিয়া দাড়াইল । জামাই বাবু বলিলেন, “দেখার সাধ না মিটে থাকে ত ঐ বনদেবীদের একবার ভtল ক’রে দেখে নাও। দেশে গিয়ে এমন রূপ অীর দেখতে পাবে না ।” আমি বলিলাম, কেন, ওরা কি দেখতে মন্দ্র না কি ? কেমন সুগঠিত বলিষ্ঠ দেহ । আমাদের বাঙ্গালী মেয়েদের মধ্যে এক জনেরও যদি ও রকম চেহারা দেখতে পেতুম ত রাজার হালে বাজারে ব'সে স্বরাজ ঘোষণা কর্তুম। আহা, ক্যামেরাট। সঙ্গে না এনে বড় ভুল করেছি।” জামাই বাবু খিচুড়ীর গ্রাস মুখে তুলিয়া বলিলেন, “বাস রে, শুনছ ত তোমার ভাইটির কথা । দেখো তায়া, বনের মাঝে যেন মনটি হারিয়ে রেখে ঘেও না—ত হ’লেই সৰ্ব্বনাশ, এ আমি ব’লে श्रृंtशाञ ।” এইরূপ হাসাহালি গল্পে আহারটি জমিল ভাল, কিন্তু থাওয়া শেষ করিয়াই ভগিনীপতি গৃহে ফিরিবার খুয়া ধরিলেন। তখন মাত্ৰ ৰেলা ২টা। পাহাড়ের দিগ্বিদিকৃ সুৰ্য্যোজল, বনের ছায়াগুলাতেও সোনার রং ফুটিয়া উঠিয়াছিল। পাহাড়ে निश्चt cबज़ ऎवtब्र मश्रं उ ५छ् । बांषि चिनि ধরিলাম, তা হবে না। আর একটু ঘুরে ফিরে সেই ৪টার সময় বাড়ী ফেরা যাবে।” ২২৩ জামাই বাবু কিন্তু নিজের মতলবে অটল থাকিয়া বলিলেন, “বেশ, তুমি তা হলে আর একটু থেকে যাও । মগরাকে তোমার কাছে রেখে যাচ্ছি। বাড়ী গিয়ে একটু বিশ্রাম না করলে ত আমার চলবে না । আর পথে নারী-বিবজ্জিত। ক’রেও যেতে পারব না। দেখিস্ রে মগরা, বাবুকে তাল ক’রে পাহাড় দেখিয়ে দিম্। তবে ফিরতে যেন রাত না হয় । তোদের এ ভূতুড়ে দেশ থেকে সন্ধ্যার অাগেই নিশ্চয় বাড়ী ফের চাই।” মগরা বলিল, “যে আলে।” বহু দিন হইতে বাঙ্গালীর বাড়ী কাষ করিয়া সে বেশ এক রকম ভাঙ্গা তাঙ্গ চলনসই বাঙ্গালী বলিতে পারিত। তাহারা চলিয়া গেলেন। আমি একটু এ-দিক ও-দিক্‌ ঘূরিয়া খানিকট উপরে উঠিয়া ঝরণার ধীরে বসিয়া খেীসমেজাজে গান ধরিলাম— ওগো মানসপুরপ্রবাসী, আঁখি তব দরশন-পিয়াসী— আশায় স্বপনে মিলায়ে, থেকে না গো দূরে, ভুলীয়ে-- এস এ বক্ষ অtলয়ে দুঃখ-কুয়াস নাশি ।” গানের শেষ কথাটার ই—ই করিয়া বেশ একটু টান দিয়াছিলাম । পিছনে হাসির রোল উঠিল ; ফিরিয়া দেখি, হাসির আবেগে মগরার মোটা-সোটা শরীর কিন্তুতকিমাকার তঙ্গীতে আঁকিয়া-বাকিয়া উঠিতেছে। আমিও হাসিলাম । না হাসিয়াই বা কি করিব ? অসভ্য বুনে মগর যে আমার গানের সমজদার হইবে, এরূপ মনে করাই ত বোকামী । স্বয়ং তানসেনও ইহাদিগের তৃপ্তিসাধন করিতে পারেন না। তাই অক্ষুব্ধ চিত্তে বলিলাম, “ব্যাপারখানা কি ? এত হাসি কেন তোর ?” মগরা। বাবুজীর গান গুনে বড় খুদী আসিল । আমি । বটে, তা বেশ । আচ্ছ, তবে এবfর তুই একটা গান ধুনিয়ে আমার মেজাজটা খুনী কল্প দেখি । * মগরা । শুনবে, বাবুজী ? তোমাদের রসিক বাবু আমার জন্য একটা গান বেঁধে দিয়েছে । আমি । রসিক বাবু লোকটা কে ? মগৱা। জান না বাবুজী ?