পাতা:স্বর্ণকুমারী দেবীর নূতন গ্রন্থাবলী.djvu/২৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২২৮ সপ্তাহখানেক হ’ল, তিনি শিমুলতলায় এসে পূজোর সময় আমাদের দেশে নিয়ে যাবার জন্তে পাড়াপীড়ি লাগিরেছিলেন । আমাকে কিছুতেই রাজি করাতে ন পেরে শেষে মেয়েকেই চুরী করে নিয়ে গেলেন ।* “কিন্তু হলদিঝোরাতে নিয়ে গেলেন কেন ?” *এটা আর বুঝলে না, দিদি ! সোজা রাস্তায় গেলে যে লোকের মজরে পড়বে ! তাই বনের মধ্যে খানিকক্ষণ লুকিয়ে রেখে রাতারাতি ষ্টেশনে নিয়ে যাবার মতলবে ছিলেন ।” এতক্ষণ পরে আমি বলিলাম, “কিস্তু কোন ভদ্রলোক ত ডুণার সঙ্গে ছিল না ।”

  • ত কেন থাকবে । বুড়ে ষ্টেশনে অপেক্ষ করছিল । অন্ধকারে রোগী ব’লে চালিয়ে রেলে তুলে দিত। কিন্তু এর পর যে কি করবে, সেই ভাবনষ্ট এখন আমাকে পাগল ক’রে তুলছে, দিদি।"

দিদি বলিলেন, *যদি অবিলম্বে মেয়ের একটি বিয়ে দিয়ে দিতে পার, তবেই কিন্তু তিনি জাদ হয়ে शृन ।" “ত ত ঠিকই বলেছ, ভাই, আর দাদাও একটি স্বপাত্র ঠিক করেছেন । ছেলেটি ওকালতী পড়ছে, মেজাজও ভাল মনে হয় ; সে-ও শিমুলতলায় এসেছে অtর মাঝে মাঝে দাদার বাড়ী আসা-যাওয়া করে, কিন্তু তবু তার প্রতি আমার মনটা কেমন প্রসন্ন নয় ; ঘনশুমের সঙ্গে তাঁর একটা কি বকম দূর-সম্পর্ক আছে – ভাইপো না কি হয় ।” দিদি যলিলেন, "এ ভাই তোমার অক্ষায় । কথায় বলে কায়েতেয় কুটুম ! সম্পর্ক ধরতে গেলে ঠগ বাছতে গা উজাড় হয়ে যায় ।” মিত্রাণী বলিলেন, "কিন্তু সে ছেলে সে দিন সকালে এসে ব’লে গেল যে, ইস্দিঝোয় দেখতে যাচ্ছে, তার পর এই ৩৪ দিনও আর তার দেখা নেই। সে-ও এই ষড়যন্ত্রের মধ্যে লিপ নেই ত ?” এই কথা শুনিয়া হঠাৎ আমার মনে সেই যুবার কথা জাগিয়া উঠিল---সাহাকে আমি গুঙ্গর মধ্যে বন্ধনমুও করিয়াছিলাম । এই ত সেই যুব নয় । হয় ত বা পথের কণ্টক বিবেচনায় ঘনশুমে বাবুই ইহাকে এইরূপে সরাইবার চেষ্টায় ছিলেন। কিন্তু এই অসম্ভব কল্পনা বেশীক্ষণ মনে স্থান পাইল না । স্বর্ণকুমারা দেবার গ্রন্থাবলী মিত্ৰাণী দিfদর হাত ধরিয়। সকাতর অনুরোধে বলিলেন, “ভাই, একবার যাকে রক্ষা করেছ, আর তাকে বিপদের মুখে ফেলে রেখে না। তোমাদের বউ ক’রে একে ঘরে তুলে নাও * দিদি আমার দিকে চাহিয়া হাসিয়া বলিলেন, “ত মেয়ে ত অপছনের নয় - কি বলিস তুই ? আমি মনে মনে বলিলাম, "অমুতে অরুচি কfব 1* fকন্তু ইহা ত প্রকাশ করিয়া বলা যায় না, তাই মৃদু হাসিয় মৌনে সন্মতি প্রকাশ করিয়া চলিয়া গেলাম। ঘরে আসিয়া অtয়নার সাম্নে দাড়াইয়া ভাবিলাম, "চেহারাথtনা বড় বেমানান বলে মনে হ’চ্ছে । তা মনাই বা কি ? রাধা ত শ্ৰীকৃষ্ণের কালে রূপেই মজেছিলেন ” “শুভস্ত শীঘ্রম বলিয়া ভগিনীপতি কৃষ্ণপক্ষ পার হইতে দিলেন না। তাড়িত বাৰ্ত্তা বহন করিয়া র্তাহার মেজাজটিই হুইয়াছে ত্বরিতগতি ; তাহার পর এ ক্ষেত্রে তিনি ঘনগুlম বাবুকে ব্যর্থ করিবার পক্ষে এই চালটাকেই অব্যর্থ জ্ঞান করিলেন। নবমী তিথিতে যে শুভ.গ্র পাওয়া গেল, সেই লগ্নেই তিনি মঙ্গল অহুষ্ঠান সমাধা করিবার সঙ্কল্প করিলেন । দিদির বাড়ীতেই বিবাহের আয়োজন— খুব চুপচাপে-পুরোহিত ও ২৪ জন অগুরঙ্গ বন্ধু ছাড়। আর কাহাকেও বলা হইল না । বৈকালে বরদজ্জ শেষ করিয়া দিদির ক'নে সাজাইতে গেলেন । আমি রাঙ্গাবস্ত্র ও ফুলচন্দন পরিয়া বারনিদায় অসিয়া বসিলাম । তখনও সুর্য্যের আলে৷ কনক ঝরণায় দিগ দিগন্তে ফুরিত হইয়া উঠিয়াছিল। রাস্তার অত্রগুল দিব-পষ্ঠোতের ন্যায় ঝিকৃমিক্‌ করিয়া উঠিতেছিল ; পাশের মাঠে কাশগুচ্ছের উপরে স্বর্য্যের কনকপ্রভা থেলিয়া যাইতেছিল । শিউলী ফুলের স্বগন্ধ শরৎকালে সস্ত জাগাইয়া তুলিয়াছিল। বর্ণের শোভায়, গন্ধের হিরোলে চারিদিকে যেন মুখের তরঙ্গ বহিয়13 যাইতেছিল । কিন্তু এই আলোকদৃশু সম্মুখে রাখিয়৷ আমার মনে জাগিয়া উঠিল সেই অন্ধকার-ওহার কথা । কে সে যুবক 1 হইতে পারে, ইহারই সহিত মনোরম বাগদত্ত হইয়াছিল। বালিকা যে মনে মনে তাহাকে তালবাসে না, তাহাই বা কে বলিতে পারে ? বিবাহের মুহুর্তে সে যদি আসিরা উহাকে দাবী করে—তখন ? বুদ্ধিতে বুঝিতেছিলাম যে, ইহা