পাতা:স্বর্ণকুমারী দেবীর নূতন গ্রন্থাবলী.djvu/২৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নব ডাকাতের ডায়েরি দিই। অথচ কোথায় যে শান্তিপুর, তাহীও কখন দেখি নাই ;--সেখানে জমীদার অtছে কি নাই, তাহার পুত্ৰই বা কে, তাহাও জানি না। একদিন সত্যসত্যই পুলিস শান্তিপুর হইতে শশধরনামক একটি ছেলেকে আমার নিকট অনিয়া হাজির । এ জমাদারপুত্র নয়, তাহার শুtলকপুঞ্জ। তাহাতে কি আসে যায় ! শশধর নামও সে ধরে আর স্কুলেও পডে। তার ঘরে কংগ্রেসওয়ালার দু’একখান ছবি, দু" একখানা যুগান্তর, সৰ্ব্বোপরি গীতার ছোট্ট এডিসন পকেট-বুক দু’একখানাও নাকি পাওয়া গিয়াছে ; প্রমাণ চূড়ান্ত ! তবুও আমি কিন্তু তাহাকে চিনিলাম না । ইহার ফলে লাঠীর সামান্ত গুতে থাইয়। সে বেচারা বিদায় লাভ করিল— কিন্তু আমার মদৃষ্টে যে পীড়ন লাভ হইল, তাই এমনই ভীষণ হইতে ভীষণত্র যে, অবশেষে তাহার নিবৃত্তি হইল কোথায় – তাহ। আমার মনে নাই । কষ্টে যখন চোখ বুঝিলাম, তখন মনে হইল, যমদূত আমার শিয়বে দাড়াইয়া ! কিন্তু আমার ত বঁচিবার সাধ তখনও মিটে নাই ! ধরণী কি মুনীর । পিতার স্নেহ, পিসীমা”র আদর, বয়স্তপ্রীতি, শাস্তাব ভালবাসা সকলই কি সুন্দর । ( পিতা যে লোকান্তরে, সে কথা ভুলিয়া গিয়া ছিলাম । ) সৰ্ব্বোপরি সুন্দর আমার দেশ । তাহার বন্ধন এখনও ঘুচtঠতে পারি নাই,-- আমাৰ কাৰ্যও ত ফুরার নাই ! ঐ দেখা যাইতেছে, স্বাধীনতার উন্মুক্ত অমৃতভাণ্ডারদ্বীব, দুই পদ অগ্রসর হইবামাত্র ব্যাকল প্রাণের তৃষ্ণ দূর হইবে, অমৃতপানে জীবন অমর হইয়া উঠিবে,- পারিব না, আমি মরিতে পারিব না, আমার কাষ এখনও ফুরায় নাই, আমার দেশমাতৃকা এখনও অধীনতার শৃঙ্খলে বাধা ! চোখ খুলিয়া গেল! এ কি, কোথায় আছি ! এ ত আমার সে কারাগুহ বা পীড়নগুছও নয়! পুলিসের লোকরাই বা কোথায় ? আমি পাশ ফিরিলাম , —এ fক কাহার স্নেহময় চক্ষু আমার মুখের উপর স্থাপিত ? কেমিক্যাল সাহেব না ? কেমিক্যাল সাহেব আমার কপালে হাত দিয়া আনন্দপূর্ণ কণ্ঠে বলিলেন, “ভাল আছ তুমি, নযকুমার ?” ૨.૭છે

  • ই্য ভালই আছি। এখানে কি ক’রে এলুম ? আপনি এনেছেন ?”
  • এ হাসপাতাল । তোমার অসুখ করেছিল— তাই এখানে আছ । আর একটু ভাল হও, তখন বাড়ী যেতে পাবে। তুমি মুক্তি পেয়েছ ।”

এ কথায় বিশ্বাস করিতে যেন সাহস হয় না। ক্ষীণকণ্ঠে অৰ্দ্ধস্কুটস্বরে আনন্দ-বিশ্বরে জিজ্ঞাসা করিলাম--মুক্তি পেয়েছি ?”

  • ই্যা, তুমি মুক্তি পেয়েছ। মিথ্যা-মিধ্যি পুলিস তোমাকে কষ্ট দিয়েছে—নিশ্চয়ই তুমি দোষী নও।” কেমিক্যাল সাহেবের হাত ধরিয়া আনন্দকৃতজ্ঞতায় বালকের স্থায়ই আমি কাদিতে লাগিলাম । বলা ব:হুল্য, কেমিক্যাল সাহেবষ্ট আমার পক্ষে দান্ডাষ্টয়া আমি যে মুচরিত্র—এই প্রমাণে আমাকে পুলিসের হস্ত হইতে মুক্ত করিয়াছেন।

আশ্বিন মাস ; বোধন বীপ্তের আগমনী-সঙ্গীতে চারিদিক্‌ আনন্দপূর্ণ হইয়া উঠিয়াছে --আমি মহাশক্তিকে ভক্তি জানাইতে গিয়া কেমিক্যাল সাহেবের প্রতিই ভক্তিনত হইয়া ভাবিলাম—“যদি ভারতে এইরূপ দশ বিশটা ও কেমিক্যাল সাহেব থাকিতেন, তাঙ্গ হইলে ইংরাজ-রাজা আজি প্রেমরাজ্য হইয়া छे%िछ ।* aan etfs zisee good boy, at:5 st দিলার মানসে আবার স্কুলে ভৰ্ত্তি হইয়াছি, খুন ড{কাতী যে স্বাধীনতার পথ নয়, ই হ{ আমি বেশ বুঝিতে পাব্লিয়’ছি । কিন্তু তবুও- ! তবুও আমার চিন্তু প্রশান্ত হয় না । অধীনতাবন্ধন ছেদন করি 1ার আকুলতা ও এখনও নিবে নাই । যদি সময় আসে, যদি কোন পথ-প্রদর্শক কাম্যফললাভের উজ্জ্বলতর উৎকৃষ্টতর পথ দেখাইয়া দেন— তবে আমি যে সৰ্ব্বtগ্রে জীবন-মরণ-পণে পুনরায় র্তাহার নিশানতলে গিয়া দাড়াইব, তাহাতে সন্দেচমাত্র নাই । কে বলিতে পারে, কেমিক্যাল সাহেবের দ্যায় কোন বিদেশী মহাপুরুষই তাহার হস্তের বিশাল মশাল-আলোকে আমাদের অন্ধকার পথ আলোকিত করিয়া তুলিবেন না ? হিউস সাহেবও ত ছিলেন বিদেশী !