পাতা:স্বর্ণকুমারী দেবীর নূতন গ্রন্থাবলী.djvu/২৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२88 একই সঙ্গে, কিন্তু শাস্তি পাশ হইল প্রথম বিভাগে-- আর কান্তিচন্দ্র টায়টেtয়ে দুই চার নম্বর গ্রেসে– থার্ড ডিভিসনে পাশ-নাম রক্ষা করিল। পরীক্ষকদিগের একান্ত পক্ষপাতিতাবশতঃই যে এমনটা হইল, মেয়ে বলিয়াই যে শাস্তি র্তাহাজের নেৰুনজরে পড়িয়াছে, ইহাতে কান্তিচন্দ্রের বা তাহার বন্ধুগণের বিন্দুমাত্র সন্দেহ রহিল না । এই উপলক্ষে কিছুকাল ধরিস্থ প্রত্যেক পরীক্ষকের আগুশ্রাদ্ধের আলোচনায় কাস্তিচন্দ্রের মজলিসম্বরটি বেশ সরগরম হইয়। উঠিল। কিন্তু ইহার পর কাস্তিবাবু যখন শুনিলেন, শাস্তি এল্‌-এ পরীক্ষায় দাড়াইবারও সঙ্কল্প করিতেছে, তখন র্তাহার মন এতই খারাপ হইয়া গেল যে, বন্ধুদিগের খাস মজলিস এবং খোসগল্প কিছুই আর তাহাকে খুনী করিতে পারিল না। বে-ইজৎ হইবার ভয়ে, স্কুল-কলেজের সহিত সম্পর্ক উঠাইয়া--গান্ধী মহারাজের জয়গানে মাতিয়া তিনি ননকোনিশান ধরিলেন। পিত অনুনয়-বিনয় করিয়া বলিলেন, “গান্ধী মহারাজার জয়গান গাচ্ছিস—গা বাবা, বেশ ; আমরাও ত গাচ্ছি—বিশ্বসংসারশুদ্ধ সবাই গাচ্ছে, কিন্তু স্কুল-কলেজ ছাড়বি কেন বাবা, সে জন্ত, ভদ্রলোকের ছেলে হয়ে শেষে গণ্ডমূর্থ হয়ে शंकfय ।* ছেলে উত্তর করিল, “গণ্ডমূর্থ হয়ে থাক ত আমার উদ্বেগু না,-পড়াশুনা অামি ঘরেই করব, পরীক্ষা না দিলে কি আর লোকে বিদ্বান হয় না ? রবিবাবু ত এতবড় বিধান লোক, তিনি ক’টা পাশ করেছেন, বলুন ত ।” কান্তিচন্দ্র পিতা-মাতার সবেধন নীলমণি ! কি জানি, বেশী পীড়াপীড়ি করিলে যদি বা সে বিবাণী-ই হইয়া যায়, অতএব জার উচ্চবাচ্য না করিয়া ছেলের পড়ার জন্য ঘরে মাষ্টীর রাখিয়া দিয়াই তিনি মনের ক্ষোভ নিবৃত্তি করিলেন। এ দিকে দৈবনিৰ্ব্বন্ধে, শাস্তির ভাগ্যবলে,— হইতে পারে কান্তিরও অদৃষ্টজোরে - হঠাৎ শাস্তির একটি ভাল বর জুটিয়া গেল, ফলে পাশের সংস্কল্পে তাহার এইখানেই ইতি পড়িল । কাচিন্তন্দ্র হাফ ছাড়িয়া বঁচিলেন । ননকোর কৈফিয়ৎ যন্তই টামুন না, তিনি বি এ, এমৃ:এ-ধারী বোনের পাশে এট্রেন্স পাশ ভাই ! কথাটা এমন বিক্র গুনাইত ঘরে বলিয়। স্বর্ণকুমারী দেবীর গ্রন্থাবলী এ খৰ্ব্বতার হাত হইতে অব্যাহতি পাইঃ। বন্ধুদের লইয়া বোটানিক্যাল গার্ডেনে গিয়া সে এক দিন পিকৃনিক করিয়া আসিল । পাশের পড়া ছাড়িল বলিয়া শান্তি কিন্তু লিখাপড়া ছাড়িল না। বিষাহের অল্পদিন পরেই ইঞ্জিনিয়ার হইবার মানসে স্বামী বিলাতে চলিয়া গেলেন --আর শাস্তি স্বামীর মনের মত হইবার মানসে যথাসম্ভব বিদ্যাবুদ্ধির পরিচালনায় প্রবৃস্ত হইল। ছেলেবেলা হইতেই শান্তির গল্পকবিতা লিথার দিকে বোক ছিল, . ষত্ব পরিশ্রমে তাহার রচনা-প্রতিভা দিব্য ফুটিয়া উঠিতে লাগিল । মাঝে মাঝে দুই একটি গল্প কবিতা বেনাম। সহীতে মাসিক পত্রিকার সম্পাদকগণের নিকট সে পাঠাইয়। দিত এবং পরে আনন্দ-বিস্ময়ে দেখিত, কোন কোনটি যথাসময়ে প্রকাশিত হইয়াছে। এ খবর কিন্তু শাস্তি কাস্তিবাবুকে কোন দিন জানায় নাই, কারণ, সে জানিত—দাদা এ কথা শুনিলে সস্তুষ্ট হইবেন না। হইলে কি হয়--সত্যের মহিম। স্বতঃ প্রকাশিত হইয়া পড়ে। পূর্বেই বলা হইয়াছে, দুই একখানা ছেড়া কাগজের টুকুর কাস্তিবাবুর হাতে আসিয়া পড়ায় তিনি সন্দিগ্ধ হইয়া উঠিলেন,— মাথ নাড়িয়া ভাবিলেন, “শাস্তি দেখছি পরীক্ষার পড়া ছেড়ে চুপচাপ বসে নাই—ভিতরে ভিতরে একটা কাওকারখানা বাধাবীর চেষ্টায় আছে। যাক, এ ক্ষেত্রে আমাকে হার মানাতে পারবে না। দেখা যাকৃ, তার বিস্তার কত দৌড় ।” কান্তিচন্দ্রও স্কুল-কলেজ ছাড়িয়া কবিতা লিখিতে মুরু করিয়াছিলেন, এবার রীতিমত উদ্যমে লিখা আরম্ভ করিলেন। রবিবাবুর কাব্যগ্রন্থে তার সেলফ, আলমারী ভরিয়া গেল এবং অবিলম্বে সাহিত্য-সভার প্রতিষ্ঠা হইল। তাহার পিতা তাবিলেন, নন্‌কে দলে মিশিয়া পিকেটিং করিয়! কোন দিন ছেলে জেলে বাইত—তাছার অপেক্ষা ইহা ভালই হইয়াছে । কাশীরামের মহাভারত এবং কৃত্তিবাসের রামায়ণ তিনি এই সভায় দান করিলেন । শাস্তি তাহান্ন লিখার কথা দাদার কাছে প্রকাশ করে নাই, কিন্তু কাস্তি কবিতা লিখিয়াই সগৰ্ব্বে বোনকে শুনাইতে মাসিত। এ ক্ষেত্রে যশোলাভের প্রত্যাশ সে বড় একটা করিত না ; জাজিত,