পাতা:স্বর্ণকুমারী দেবীর নূতন গ্রন্থাবলী.djvu/৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S)8 র্তাহাব অনেকটা বিলম্ব হইয়া পড়িল, পৌছিবার পর যে ঘটনা ঘটিল, তাঙ্গ পাঠক জানেন । শরৎকুমার রাজীকে চেকের কথা জানাষ্টতে সেই দিনষ্ট কলিকাতায় যান করিলেন । দে গুদানেরও যাইতে ইচ্ছা ছিল ; কিন্তু লাটের খাজনা সংগ্রহের আয়োজনে ব্যস্ত থাকায় থাইতে পারিলেন না । সন্তোষ-সংক্রাপ্ত ঘটনা পুলিসকে জানান ইষ্টবে কি না — এ সম্বন্ধে রাজাদেশ কি, তাত জানিয়া দেওয়ানকে লিখিবার ভfর তিনি ডাক্তারকেই প্রদান করিলেন । অনাদি শরৎকুমারেব সঠিত গেল না । সম্বোষের প্রলাপলকো ডাকাতী সম্বা শ্ব তlইfর যে সন্দেহ জন্মিয় ছিল--তান্ত বি মুলে কোন সত্য আছে কি না, সন্ধানের জ্য সে প্রসাদপুরে বহিয়৷ গেল। সে থfতাপীন। শরৎকুমাব সন্তোম্বে দেরাজ হইতে উদ্ধার করিয়াছিলেন, শলদাহ করিয়া আসিয়া অনাদি সেইখন পণ্ডিতে বসিয়া গেল । ডাক্তারের সঙ্গে এইরূপ বোঝাপড়া রহিল যে, অনাদি দুই এক দিনের মধ্যেই কলিকতায় যাইবে , তবে যদি এথানে স্তর ও কিছুদিন থাকা দরকার বোঝে ত পরে সে খবর ডাক্তারকে জানাইবে । চেক চুরীর সবদে গাঙ্গুলী-মহাশয় রাজার সমস্ত চেক মিলাইসে সিলেন । চেকের মুড়ি শুদ্ধ চুরী গিয়াছে—সুতরী- কেবল নম্বর মিলাইয়। চুরী-চেক ধরা নিতাস্ত সহজ কার্য নহে । যাই উক, অনেক কষ্টে চুরী চেকেব নথব যদি বা ধরা পড়িল--কিন্তু কোন নামে চেক কাটিয়াছে—টাকাই বা কত, তাই ত বুঝা গেল না । তবে প্যাঙ্কে গিয়া তিনি আশ্বস্ত শুইলেন ”ে, সে নম্বরের চেক কেহ ভাঙ্গাইয়া লয় নাই । মুক্তির নিশ্বাস ফেলিয়া খাম চরণ তাহীদের আদেশ দিয়া আসিলেন :ে , সে নম্বর চেক কেই ভাঙ্গাইতে অসিলে টাকা ন দিয়া চেক আটকাইয়। রাথিয়া যেন ঠাই1দের খবর পাঠান হয়। রাজার মাথার উপর হইতে খুব একটা বিপদ কাটিয়া গেল । ইহাতে সকলেষ্ট বেশ একটু স্মৃত্তি বোধ করিলেন । অন্ধ-চুবীর গবব বাজাদেশে এ পর্যাস্ত পুলিসে জানান হয় নাই – সেকের কথা ও বাজ অপ্রকাশ রাথিতে অণজ্ঞা দিলেন । আসল কথা, প্রকাশ করিলেই ছেলেদের প্রতি পুলিস জুলুম আরম্ভ করিবে,—তখন তিনি ইচ্ছা করিলেও সে নির্যাতন হইতে তাহাদিগকে বক্ষণ করিতে পরিবেন না । স্বর্ণকুমারী দেবীর গ্রন্থাবলী চতুর্দশ পরিচ্ছেদ মাণিকতলার রাজপ্রাসাদে অপরাহ কালে রাজকুমারীর পাঠগৃহের বারান্দায় দাড়াইয়া পণ্ডিত মহাশয় কুন্দের সঙ্গিত গল্প করিতেছিলেন । ভট্টগঘ মহাশয়ের হাতে ছিল শিকলি-বাধা তাহার ময়না পার্থীটি। সেটিকে তিনি কুন্দের দিকে বাড়াষ্টয়া ধরিয়া বলিলেন,--“লও কুন্দ, এটি আমার প্রাণপাপী, তোমার জন্তে এনেছি * • পণ্ডিত মহাশয় অনুসন্ধানে জানিয়াছেন যে, ইংবাজী অনুকরণে আংটদানে কস্তাকে বাগদত্তা করিয়া রাখা ব্রাহ্ম-পদ্ধতি । কিন্তু কুন্দের সংস্পর্শে আসিয়াও টোলের প্রাক্তন সংস্কার হইতে তিনি সম্পর্ণভাবে এখনও মুক্তিলাভ করিতে পারেন নাই— চটি জুতা পরা পা দুখানি বিলাতি ষ্টিরাপের মধ্যে দিয়া ঘোড়ায় চড়ার কায়দাতে এখনও তিনি অনভ্যস্ত, তএব নব্য সম্প্রদায়ের মত আংটদানে cngaged হইতে র্তাহার লজ্জাবোধ হইতে লাগিল । মূল্যবান আংটা দিতে পারিলেও বা এ লজ্জাকুণ্ঠ বিসর্জন দিতে পারিতেন,-- একটা সামান্য আংটী পরাইতে পরাইতে কি ভাষায় তিনি র্তাহার অসামান্ত প্রেম প্রকাশ কfরবেন ? এই অকূল আকুল চিন্তাতরঙ্গে দোল পাইতে খাইতে র্তাহার মনতরী সহসা কুল দেখিতে পাইল,—কুন্দকে উপহার দিবার জন্ত তিনি র্তাহার আদরের ময়না পাখাটি লইর অসিলেন, ইহার মত মূল্যবান জিনিস তাহার আর কি আছে ! কুন্দ কিন্তু ইহার মূল্য ঠিক বুঝিল না ; সে রাগ করিয়া কহিল,--“আপনার পার্থী আপনি রাখুন, আমি চাইনে । অামি জ’লে মরছি এখন নিজের দুঃখে, এই সময় আবার আপনি এলেন জালাতন করতে ।” কুন্দের নিকট এ রকম কথা শোনা পণ্ডিত মহাশয়ের অভ্যাস হুইয়া গিয়াছে, তিনি ইহাতে দমিলেন ন।-- কেবল বাড়ান হাতটা টানিয়া যথাস্থানে রাখিয়া পার্থীটাব মাথায় হাত বুলাইতে লাগিলেন ; পার্থী মধুরকণ্ঠে “কুন্দ কুন্দ” বলিয়া নাচিতে আরম্ভ করিল। পণ্ডিত মহাশয় কহিলন,-“কি হয়েছে, কুন্দ ! কিসের দুঃখ ?” কুন দুঃখের স্বরে কহিল,- "বড় বিপদে পড়েছি, পণ্ডিত মশায় ।” সে স্বরে কৃত্রিমতা ছিল না ; পণ্ডিত মহাশয় নিজেকেই বিপদগ্ৰস্ত বিবেচনা করিলেন—উৎকণ্ঠিতভাবে কছিলেন,–“কি বিপদ! বড় যে ভাবনা