পাতা:স্বর্ণকুমারী দেবীর নূতন গ্রন্থাবলী.djvu/৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ዓ8 সত্যই ত! ঠিকই ত এই সামান্ত একটি কথায় তাহার মনের সব কথাই কি সুন্দরবাপে সে প্রকাশ করিয়া বলিয়াছে। সে যে নিতান্ত বালিকা ; তাহার ক্ত্যেষ্ঠ কণ্ঠ কন্যা না হষ্টয়া পুল হইলে হাসি যে তাঙ্গর পুত্রবধু হইতে পারিত। স্বল্পবয়স্ক এই বালিকার পক্ষে তিনি রাজা ছাড়া আর কি হইতে পারেন—কিছুই না—কেহই না । তিনি চক্ষু মুদ্রিত করিলেন, তাহার অন্তরাত্মা বলিয়া উঠিল ; "এ কি অসংযম । চিরদিন যে কাৰ্য নিন্দনীয় ভাবিয়াছ, আজ কি ভুলে নিজেই সেই ভুল করিতে প্রবৃত্ত--ছি ছি!” রাজা চক্ষু খুলিয়া নক্ষত্রখচিত আকাশের দিকে দৃষ্টিপাত করিলেন ; জ্যোতিৰ্ম্মণ্ডলীও যেন একবাক্যে বলিয়। উঠিল—“হইতেই পারে না, ইহা হষ্টতেই পারে ন—তোমার মধ্যে যতক্ষণ এতটুকুও মনুষ্যত্ব আছে,--ততক্ষণ ইহা হইতেই পারে না।” রাজা এইবার একটু হাসিলেন-হাসিয়া অপেন মনে বলিয়া উঠিলেন,--"ভিখারীর শূঙ্গ ঝোলা তবে তোলাই থাক। সে দিন এ গানটি যে গেয়েছিল, সে ঠিকষ্ট ইঙ্গিত করেছিল। ভূত্য র্তাহার পাশে সেতারটি রাখিয়া গিয়াছিল—তিনি বাজাইয়া গান ধfরলেন ; বিপ্ন তপ্রায় গানটির অনেকগুলি কলি হঠাৎ তfঙ্গর মনে আসিয়া পড়িল মুরলা কি বাণ ! আtহ মরি কি বাজিল তা’ ত জানি না ! স্বপূtঝর সুরে সুরে, মনে প্রাণ গেল পুরে ? যখন থ’মিল তান জাগিল চেতন । কে পথিক এসেছিল কোন পথ দিয়ে ? দূরে বা দাড়ীয়ে কাছে গেল বাজাইয়ে ? কোন ত সন্ধান তীয় খুঁজে না মিলিল আররেখে ত গেল ন মবি একটুকু চিন । সপ্তর্ষি এক পাশ্ব হইতে ঘুরিয়া অঙ্গ পাশে গেল, ওরায়েন মাথার উপর চড়িল, সন্ধ্যা-তারা চলিয়া পড়িল, রাজা একমনে গাহতে লাগিলেন জ্যোতিৰ্ম্ময়ী কিছুক্ষপ হইতে পিঠের দিকে আসিয়া দাড়াইয়াছিলেন । গানের শেধ কলি হইতে রাজা যখন প্রথম কলিতে ফিরিয়া আসিয়া শম্ রক্ষা করিলেন—তখন রাণীও র্তাহার পিঠে হাত রাখিল । রাজা সচকিতে ফিরিয়া চাঙ্গয় বলিয়া উঠিলেন— "এই যে রাণি ? অায়, বোস, কখন ফিল্গুলি ? কেমন দেথলি ?” "এইমাত্র ফিরেছি ? বেশ দেখলুম, বাবা ! তুমি স্বর্ণকুমারী দেবীর গ্রন্থাবলী ত গেলে না । রাত হয়ে গেছে—এখন খেতে চল— বাবুল্লা !" বাবুর রাণীর আদুরে ডাক । সেভারটা পাশে রাখিয়া রাজা জিজ্ঞাসা করিলেন, “হাসি কি এসেছেন ?” রাণী একটু মুচকি হাসিয়া বলিল,-“ন, তারা সবাই বাড়ী গেলেন । অtনি তার হাসিকে আনবার কথা বলতে পাৰ্বলুম না, আনলেই ভাল হোত -नां ?” রাজা কচি মেয়েটির মত তাহাকৈ কাছে টানিয়া লইয়। তাহার মস্তক অস্ত্ৰাণ করিয়া বলিলেন,— "আনিস নি ভালই হয়েছে, রাত হয়ে গেছে।” জোতিৰ্ম্ময়ী পিতার চোখের উপর তাহার হাসিমাথা চোখের ঔজ্জ্বল্য ঢালিয়া বলিল,--"বাবা । একটা কথা বলব ?” রাজা আন্দাজে বুঝিলেন--কি কথা ; একটু হাসিয়া বলিলেন, “বলতে পারিস।” "ঠাকুরমাকে কবে অস্েিত বলব, বাবা ? হাসির ম। ৫ই ফাৰুনে দিন ফেলেছেন।” রাজা কন্যায় গালে একটি মৃদু আঘাত করিয়া বলিলেন,-“অারে পাগলি, —তোরা তোদের নিজের ময্যাদা ভুলে যাস্, কিন্তু আমরা যে ভুলতে পরিনে । হাসির সঙ্গে আমার বিবাহ অসম্ভব, সে আমার কন্তীতুল্য ।” রাজকুমারী এতদিন ধরিয়! মনে মনে যে কল্পনাপ্রাসাদ নিৰ্ম্মাণ করিতে ছলেন, সহসা তাহ চুরমার হইয় গেল ! মৰ্ম্মাহত হইয়া তিনি কিছুক্ষণ চুপ করিয়া রহিলেন, তাহার পর একটু সরিয়া বসিয়া বলিলেন,—“তুমি এই রকম ভাবে কথা ক'চ্ছ, যেন বয়সে তোমাদের দু'জনের মধ্যে আকাশ-পাতাল তফাৎ। সত্যি ত অণর তা নয়—তোমার আর এমনি কি বয়স, বাবা ! তোমাদের বিয়েট। কিছুতেই অশোভন হবে না । তোমার এই অস্বীকারে স্ত্রীজাতির প্রতি মৰ্য্যাদা কিছুই প্রকাশ পাচ্ছে না ; তুমি যে নিজেকে কি রকম খাট ক’রে দেখছ, তাষ্ট শুধু বোঝা যাচ্ছে। তোমার মত স্বামিলাত কি সৌভাগ্যের বিষয় নয় ;–র্তারা ত সকলেই তোমায় জন্ত হা-প্রত্যাশ ক’রে অাছেন ।” - রাজা বলিলেন,--“কি যে বলিস, পাগলি, কখনই না, কখনই না, আমি জানি তা ঠিক নয়। সকলে আমার জন্ত হা-প্রত্যাশ ক’রে আছেন—কি যে অদ্ভুত কথা ।” জ্যোতিৰ্ম্ময়ী ইহার অর্থ বুঝিলেন,—বুঝিয়া বলিলেন,—“আমি ঠিক বলছি, বাবা, সববাই তোমাকে