পাতা:স্বর্ণকুমারী দেবীর নূতন গ্রন্থাবলী.djvu/৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মিলন-রাত্র অবিলম্বে একদিন রাজমাতার সহিত দেখা করিতে গেলেন । s আজ রাজকণ্ঠার জন্মদিন, উৎসব সমারোহ কিছু নাই। রাজ। কেবল প্রাতঃকালে কন্তর শিৱশ,স্বনপূৰ্ব্বক সাশ্রনয়নে বলিলেন, “মুখী হও বংসে!” রাজকন্যাও কাদিতে কঁাদিতে পিতাকে নীরবে প্রণিপাত করিয়া উঠিলেন। ইহার পর আরতি পুজার সময় রাজা সপরিবারে এবং ভূত্যাদি-বর্গের সহিত দেবমন্দিরে গিয়া কন্যার উদ্দেশ্যে সমবেত মঙ্গলপ্রার্থনা করিলেন এবং দ্বিপ্রহর আরতিকালে অীর একবার মহারাণী—রাজকন্তকে সেখানে লইয়া গিয়া পূজা ও ভোগ-শেষে প্রসাদান্ন তাহার মুখে দিয়া প্রিয়তমা নাতিনীর জন্মোৎসবপৰ্ব্ব শেষ করিলেন ; অfরতি পুজার পর পুত্রপৌত্রীকে খাওয়tষ্টষা স্নানাহিক-শেষে রাজমাত। যখন উপরে উঠিলেন, তখন বেলা প্রায় তিনটা । ঠাকুর-ঘরের পাচক অল্প আগে প্রপানান্ন আনিম্ন তাহীর গৃহে রাখিয়া গিয়াছে ; জ্যোতিৰ্ম্ময়ী ঠাকুরমার আগমন-প্রতীক্ষায় ধরে আসিয়া বসিয়াছে । রাজকুমারীর জোর-জবরদস্তী অনুরোধে ঠাকুরমার দিনান্তে একবার করিয়া অল্প গ্রহণ করিতেই হয় । মহারাণী গুহ-দালানে আসিয়া রেলিংয়ের নিকট উৰ্দ্ধমুখী হইয়া দাড়াইয়া, জপমাল্য মাথায় ঠেকাইয়া অtজ প্রথমেই নলিনীব মঙ্গলকামনায় স্বৰ্য্যপ্রণাম করিলেন । তfহায় পর পুলের মঙ্গলভিক্ষা করিয়া, মালাগাছি দেওয়ালের যথাস্থানে টাঙ্গাইক্ষ রাখিয়া, অfহারস্থানে যাইবার মানসে সবে মাত্র *ां दtङ्गाहेब्रां८छ्न-७मन नमब्र-ननौ गांभौ थदब्र দিল—“রায় মশল্প দেখা করতে আইছেন—গো মহারাণি মা ।” ঠাকুরমা দালানে আসিতেই জ্যোতিৰ্ম্ময়ী গৃহের বাহিরে আসিয়াছিল। এই খবর শুনিয়া সে বলিয়৷ উঠিল –“বাইরেই তাকে কিছুক্ষণ বসতে ব’লে দাও ননী। ঠাকুরমা, লক্ষীম, তুমি শীগগির খেয়ে নেও, বেলা পড়ে গেছে, খেয়ে তাকে খবর পাঠালেই হবে ।” ঠাকুরমা বলিলেন- “সেটা ভাল হবে না রাজা” —( মহারাণী নাতনীকে আদর করিয়া যখন তথন রাজা বলিয়া ডাকেন ) “মুজন এসেছেম,--দেখা শেষ ক’রেই খাব এখন, এতই কি খাবার তাড়া " কিন্তু উভয়ের বিবাদ নিম্পত্তি হইতে না হইতে মুজন রায় স্বয়ং দালানে আসিয়া দেখা দিলেন। জ্যোতিৰ্ম্মী বিরক্তভাবে গৃহমধ্যে লুকাইয়া পড়িল— t A তাহাকে সমাদৃত করিবার অভিপ্রায়ে রাজমাত অগ্রসর হইয়। নিকটে দাড়াইলেন । অভিজাতমহত্বে মহারাণীর হৃদয় পূর্ণ। তিনি ধৰ্ম্মশীলা. উদার এবং সরল প্রকৃতি । মুজন রায় মিত্র নছেন, জানিয়াও তিনি তং প্রতি মন্দভাব পোষণ করিতেন না । স্বজনের মনে যাহাই থাকুক— বাহিক আত্মীয়তার অভাব তিনি কোন দিন দেখান নাই মুখে-দুঃখে সময়ে-অসময়ে খোজ-খবর লইতে আসিয়াছেন । সুতরাং এই বিপদের দিনে তাহার আগমন মহারাণী সহজ ভাবেই গ্রহণ করিলেন ; এবং মনে মনে ইহাতে সস্তুষ্টও হইলেন। স্বজন রায় তাহাকে প্রণাম করিয়া সেই দেবীতুল্য মানমূৰ্ত্তির দিকে চাহিয়া-কি বলিবেন, ভাষা খুজিয়া পাইলেন না। মহারাণী হস্তোত্তোলনে আশীৰ্ব্বাদপূৰ্ব্বক তাহাকে কহিলেন-–“ভাল অtছ ত ঠাকুয়পে৷ ?” মনে সয়তানের ভাব, মুখে স্বজন রায় উত্তর করিলেন---“আর ভাল বৌঠান--বেঁচে আছি, এইমাত্র । মনে কি আর সুখ আছে, মহারাণি !” এই সহানুভূতিবাক্যে মহারাণীর রুদ্ধ অশ্রু উথ লিয়া উঠিতে চাহিল ; অঞ্চলে নয়ন মুছিয়া যথাসাধ্য সংযতভাবে তিনি কহিলেন “এস ভাই, ঘরে গিয়ে বসবে এস ।” অন্তঃপুরের অভ্যর্থনাগৃহে ভিনি র্তাহাকে লইয়া গেলেন । বলা বাহুল্য, এই গৃহ বহুমূল্য আসবাবদ্রব্যlদিতে রাজ্যোচিত সজ্জায় সজ্জিল। স্বদেশী-বিদেশী ভদ্রমহিলাগণ অন্তঃপুরে অসিয়া এই ধরেই বসেন । কিন্তু এই আড়ম্বরপূর্ণ কোমল আস্তরণমণ্ডিত কোঁচচৌকির এক প্রাস্তে গরুড়বাহন একখানি যে ক্ষুদ কাষ্ঠীসন—তাহাই মহারাণীর উপবেশনস্থল – পূর্বেই বলা হইয়াছে, স্বামীয় মৃত্যুর পর হইতে মহারাণী কোমল শস্যা ত্যাগ করিয়াছেন : উভয়ে এই কক্ষে প্রবেশ করিবার পর স্বজন রায় অশ্র-আনতমুখী রাজমাতার হাত ধরিয়া তাহাকে উক্ত আসনে বসাইয়া নিজে নিকটের মখমলচৌকি একখানায় বসিয়া বলিলেন—“কেঁদে না বৌঠান, কেঁদো না ; তোমার এ ভাইটি যতক্ষণ আছে, ততক্ষণ কোন ভয়-ভাবনা নেই, ধনপ্রাণ দিযে আমি অতুলকে উদ্ধারের চেষ্টা করছি ; ভেবে না।” সেই আশ্বাসবাণীতে রাজমাতার সম্পূর্ণ বিশ্বাস জন্মিল কি না কে জানে, তবে অকূলপাথরে ভাসিলে মজ্জমান ব্যক্তি কুটfখওকেও আশ্ৰয়ৰূপে গ্রহণ করিতে চায়। তিনি স্বজনের প্রতি কৃতজ্ঞ দৃষ্টিপাত করিম।