পাতা:স্বর্ণকুমারী দেবীর নূতন গ্রন্থাবলী.djvu/৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

$8 তথন স্তব্ধ বিস্ময়ে দেখিলেন-অণকাশের মেঘজলি একেবারেই কাটিয়া গিয়াছে, দিগ বিদিক দিব্যালোকপুর্ণ । এষ্ট আলোকচিত্রেয় দর্শনে বালিকাল সলয়ে সহসা প্রফুল্লতার স্পন্দন উঠিল । ইঙ্গ। কি বিধাতুপুরুষের কৃপা-ইঙ্গিত নহে ? কাটিলে কাটিলে—তাহার করুণায় এমনই করিম। তাছাদের ও বিপদ-মেঘ কাটিয়া যাইবে। এতক্ষণ পরে মুষ্টি খুলিয়া চেকখান। তিনি পড়িয়া দেখিলেন । সুজন রায় মিথ্যা বলেন নাই, সত্যই এ দশ হাজারের চেক, বিদ্রোঙ্গী দলের নেতার নামে রাজা বাহfদুরের দান । জ্যোতিৰ্ম্মল্পী চেকপীনা ছিড়িয় খণ্ড খণ্ড করিয়া মাটীত ফেলিক্স দিলেন ; তাহার পর মুক্তির নিশ্বাস ত্যাগ করিম। অtলার মনে মনে বলিলেন, -"ধন্ত তুমি বিপদৃহলি! ধন্য তুমি দয়াময় ! ধষ্ঠ তোমার প্রেম-করুণা ৷” একটা অপুৰ্ব্ব অস্থ প্রদাদে তাঙ্গার প্রাণ, মন, আত্মা ভরিয়া গেল, কি নিদারুণ ত্যাগপণে বালিকা যে ভগবানের প্রসন্নতা লাভ করিয়াছেন, সে কথা তাহার মনে আসিল না ; কোনরূপ আক্ষেপছঃথে তাহfব দীন-মহিমা গ্লানিম’ন গুইল না, জোতিৰ্ম্মল্পী কৃতার্থস্মন্ত, আনন্দ-পরিতৃপ্ত ঈদয়ে গুণ গুণ করিয়া গান ধরি। লন— "cন্তামীর মহিমা অনন্ত অসীম ; ধন্স ধষ্ঠ তুমি ষ্টে দয়াময় ! জয় জয় তব জয় । তোমার প্রসাণ-জ্যোতি --- অতি মধুর ধ্রুব অতি বিপদ দুঃখ ভীতি, সব তাহে লীন হয় ! জয় জয় তব জয় ।” কথন যে দিবসের শেষ আলোকটুকু সন্ধ্যার অন্ধকারে অত্মসমৰ্পণ করিল, কখন যে কৃষ্ণ প্রতিপদের চোর চাঁদ গাছের উদ্ধে উঠিয়া পড়িয়া অন্ধকারের প্রাণে স্বকীয় আলোক-রাজ্যের প্রতিষ্ঠ স্থাপন করিল,—সঙ্গীত-বিঘোর, ধ্যানমগ্ন জ্যোতিৰ্ম্ময়ীর উল্মীলিত নেত্রেও তাতার সজ্ঞান প্রতিবিম্ব পড়িল না । গানের মুরে সুরে বালিক। তথন বিশ্ব-বীণার প্রীতি-ঝঙ্কাররব শুনিতেছিলেন, বাহিরের আলোকের সহিত অন্তরীলোকের অবিচ্ছেদ্য মিলন-মুখ অনুভব করিতেছিলেন। সহসা সঙ্গীতের সে পরমোচ্ছ্বাস গুন্ধ, শিহরিত করিয়া তুলিয়া অদূর হইতে কে ডাকিল ৮-“রাজকুমারি ” এ কাহার কুণ্ঠধ্বনি ? এবং স্বর্ণকুমারী দেবীর গ্রন্থাবলী পরমুহুর্বেই তাহীর চক্ষুতfরকায় বিভাসিত হইয়া উঠিল এ কাচার মূৰ্ত্তি ? এ যে ডাক্তারদা ! শরৎকুমার নিকটে আসিয়া পরিপূর্ণ আনন্দ অ!গ্রহে উiহার দিকে হস্ত প্রসারিত করিয়া দিলেন । কিন্তু কৈ, রাজকতা ত প্রতিদানে এত দিনের পর তাহার আগমনে আনন্দ প্রকাশপুৰ্ব্বক স্বাগত-সমদরে তঁহার হস্তে হস্তীর্পণ করিলেন না ? শরৎকুমীরের প্রসারিত শুষ্ঠ ভস্ম নৈরাশু-ব্যথায় ধীরে ধীরে অবনত হইয় পড়িল,—অশ ভারাক্রান্ত জলদপণ্ডের ষ্ঠায় মুহূৰ্ব পূর্বেই প্রফুল্লমূৰ্ত্তি বিষগ্লমান হইয়া উঠিল । কিন্তু কিছু পরেই মেঘের মতই আবার— সহfম্নভূতি করে তfহার মনের সে অভিমান-অন্ধকার বিদূরিত হইল । তাহার মন বলিল, জ্যোতিৰ্ম্ময়ী যে এখন মৰ্ম্মপীড়িত, এখন ত তাহার আনন্দ প্রকাশের সময় নছে। তিনি অশ্বস্তচিত্তে তখন কছিলেন--- রাজ কুমারি । সুসংবাদ এনেছি—রাজা বাহাদুর মুক্তিলাভ করেছেন ।” রাজকন্তার বিকর্ণ মুখ কাস্তি সহসা উজ্জল হইয়া উঠিল ; সশস্ত্রপুরিত বিস্ময়ানন্দে শরৎকুমারের প্রতিধ্বনির মতই তিনি কছিলেন,—“মুক্তিলাভ করেছেন ?" উত্তর হইল,--“হ। রাজকন্যা । তথাপি এত বড় স্ব-খবরে রাজকুমারী যেন পূর্ণ ভাবে আস্থী-স্থাপন করিতে পারিলেন না, বিশ্বাসে সংশয় ঢালিয়া অt বীর তিনি কহিলেন,—“সভা বলছেন ডাক্তালদা, কি ক’রে জানলেন ? কোথায় পেলেন এ খবর ?” শরৎকুমার একটু মিষ্টমধুর হাসিয়া উত্তর করিলেন, —“সন্দেহের কোনই কারণ নেই রাজকুমারি ! প্রিভি কাউন্সিলে আমাদের জয় হয়েছে,—ম্যাজিষ্ট্রেটের নিকট তার এসেছে।” কৃতজ্ঞতা-উচ্চাসে জ্যোতিৰ্ম্ময়ীর হৃদয়নিভৃতে আবার ধ্বনিত হইল, “ধন্ত তুমি দয়াময় ! ধন্য তোমার প্রেম-করুণ!” কিছুক্ষণ উভয়ে স্তব্ধ হইয়া রছিলেন, পরে জ্যোতিৰ্ম্মন্ধী সহসা বলিয়া উঠিলেন—“শুনেছিলুম, আপনিও বন্দী হয়েছেন, কিন্তু মুক্তির খবর. ত কৈ পাই নি, বুঝতেন যদি—কতটা --” রাজকুমারী এইথানেই থামিয়া গেলেন তাহার মনে পড়িয়া গেল— তিনি অন্তের বাগদত্ত । শরৎকুমার আনন্দ-আর্দ্রস্বরে কহিলেন –“এভ কাছে থেকেও এত দিন যে এক লাইনও চিঠি পাঠাতে পারিনি,---এতে কি আমারও কম কষ্ট গেছে—