পাতা:স্বর্ণকুমারী দেবীর নূতন গ্রন্থাবলী.djvu/৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

సిన দিয়েছ- সে মিথ্যা প্রবঞ্চনা কথনষ্ট তোমাকে বধিতে পারবে না,—ধৰ্ম্মত: তুমি আমারই ।” শরৎকুমার তাহাকে এই প্রথম তুমি বলিয়৷ সম্বোধন করিলেন ; কেবল তাঁহাই নহে, এতক্ষণ তিনি রাজকন্যার সম্মুখে দাড়াইয়া কথা কহিতেছিলেন, এইবার পার্শ্বে আসিয়া বসিয়া, তাহার ঘৰ্ম্মাক্ত হাতখানি আপনার দুই হাতের মধ্যে গ্রহণ করিলেন । রাজকন্যা কোন প্রতিবাদ করিলেন না । তাহার হাতের শিরাবিশিব স্পর্শের মধ্য দিয়া যে ভাব, যে ভাষা অপ্যক্তভাবে আত্মপ্রকাশ করিতেছিল -- স্বরে তাঁহাই পরিস্ফুটভাবে ব্যক্ত করিয়া ডাক্তার তথন কহিলেন—“না রাজকুমারি, তুমি আর কাহারও নও---ধৰ্ম্মতঃ তুমি আমারই । অনেক দিন থেকে আমী এই তুমি বাগদত্ত, তোমাকে আমার কছে থেকে কেহই কেড়ে নিতে পারবে না ।” ইঙ্গর উত্তর রাজকুমারীর নয়ন হইতে অশ্রুবিন্দু পড়িয়া তাহার হস্ত সিক্ত করিতে লাগিল । ৬াক্তারের ইচ্ছ। গুইতেছিল, সাদর-চুম্বনে সে অশ তিনি মুছাইয়া দেন, কিন্তু সে অধিকার এখন ৪ ত তিনি পান নাই । আত্মসংবরণ করিয়া অবনত দৃষ্টি রাজকণ্ঠীর হাতের উপর রাগিয়া তিনি বলিলেন—- “মনে পড়ে কি রাজকণ্ঠা, সে দিনের কথা, যে দিন তুমি আমাকে মালা পরিয়ে দিয়েছিলে ? সেই মালাটির ভিতর দিয়ে তোমীর হৃদম্পানিই কি অামাকে দান কর নি তখন- বল দেখি ?” আজ শরৎকুমার প্রেম-প্রকাশে বালকের গুণন্ত্র সলজ্জ নহেন, আজ তিনি সাহসী, মুক্তকণ্ঠ, বিশ্বস্ত প্রেমিক । রাজকুমারী নীরব হইয়া রহিলেন, সলজ্জ অনুরাগে তাহার মুখ আরক্তিম হইয়া উঠিল। শরৎকুমার একটু ঝুঁকিয় তাহার মুখের দিকে চাহিয়া বলিলেন —“মুর্থ আমি ! সে দিন আমার সৌভাগ্য আমি বুঝতে পারি নি। বুঝলুম যখন—তখন খুবই অসময়, আর তখন থেকেই আমরা দুরে দূরে। কিন্তু স্থানকালের দুরত্ব কি তোমা হ'তে আমাকে কোন দিন বিচ্ছিন্ন করতে পেরেছে।--না পারবে ? এই কয় বংসরের অন্ধকার কারাগার তোমারই স্মৃতির আশালোকে রঙীন হয়ে ছিল না কি ? আর অীজ এত দিন পরে আমি যখন ফিরে এসে তোমার কাছে দাড়িয়েছি, এই মুখের দিনে, শুভক্ষণে, তুমি কি আম হ’তে দূরে স’রে যাবে ? অসম্ভব । অসম্ভব!” সহসা এইখানে শরৎকুমারের বাক্যরোধ হইয়া গেল। তাঁহার অস্তলীন গুপ্ত নিরাশ আশার স্বর্ণকুমারী দেবার গ্রন্থাবলী অন্তরাল হইতে ব্যঙ্গের-স্বরে সহসা বলিয়া উঠিল— সংসারে অসম্ভব যা—তাও ত অনেক সময় সম্ভব হয়েই দাড়ায় ?” শরৎকুমার তখন হতাশভাবে রাজকতার হাতখানি সবলে দুই হাতের মধ্যে চflপয়া ধরিলেন, তাহার পর মুহূৰ্ত্তকাল স্তন্ধ থাকিয়। নবশক্তি সঞ্চয়পূর্বক বলিলেন—“আমি কি ভুল কথা বলছি, প্রণাপ বকৃছি - রাজকুমারি ? বল, তুমিই বল ? সে দিন মাণিক-প্রাসাদে লতাকুঞ্জ-ভবনে আমাকে বিদায় দেবার কালে নীরব ভায়ায় তুমি কি বল নি-যে, তুমি আমারই ? আমি কি তোমাকে ভুল বুঝেছিলাম হৃদয়েশ্বরি ? কখনই না, হ’তে পারে না তা । দাবী তাদের নয়, দাবী আমারই । তোমার একটি জন্মদিনে মাল্যদানে আমাকে মনে মনে পতিরূপে বরণ ক’রে নিয়েছিলে তুমি, আর তোমার আজকের জন্মদিনে আমি প্রকাশুভাবেই তোমাকে ভাবা পত্নী ব’লে লরণ ক’রে নেব, এই আশা ক'রে তোমার কাছে ভিক্ষণ-নত হয়ে দাড়িয়েছি। দাও সে ভিক্ষণ, সে অধিকার আমাকে, বল তুমি আমারই ।” এতক্ষণ পরে শরৎকুমারের হাতের মধ্য হইতে ধীরে ধীরে হাত ছাড়াইয়া লইয়া রাজকণ্ঠ বলিলেন -- “তাতে কি আমাদের কৰ্ত্তব্যভঙ্গ হবে না? প্রেমের চেয়ে কি ধৰ্ম্মের কৰ্ত্তব্য আরও বড় নয় ডাক্তণরদা ! সমস্ত মহাপুরুষেরা তাদের কার্য্যে আমাদের যে এই শিক্ষা দিয়েছেন—-ও দিচ্ছেন। বল দণ ও ডাক্তারদা, কৰ্ত্তব্যপালনে অণমাকে বল দাও।” শরৎকুমার উঠিয় দাড়াইয়া উত্তরে দৃঢ়স্বরে বলিলেন—"বিশ্বাস কর রাজকুমারি—প্রাণান্ত হ’লেও তোমার কৰ্ত্তব্য-পথের বাধা অামি হ’ব না । কিন্তু আমি ত মনে করিনে যে, ফকিতে প’ড়ে তুমি যে কথা দিয়েছ -তা পালন করা তোমার কৰ্ত্তব্য ।” জ্যোতিৰ্ম্ময়ী বলিলেন –-“কুরুগণ ফাকি দিয়েই পাণ্ডবদের পাশায় হারিয়ে কথা নিয়েছিল—তবু ত পাণ্ডবেরা বনগমনে দ্বিধা করেন নি ? অামার মনকে ত বোঝাতে পারছিনে—ভুল শপথ ব’লে আমি স’রে পড়তে পারি। একমাত্র উপায় আমি দেখছি, ধাদের কাছে আমি শপথে বাধা—তায়া ধদি দয়া ক’রে আমাকে মুক্তি দেন ।” “ন। যদি দেন—ত হ’লে ?" “ত হ’লে ভগবান যা করেন । তার ইচ্ছাই তা হ'লে মেনে নেব । অামি ত আসলে কথা দিয়েছি র্তাকেই । আমার সৰ্ব্বস্ব পণে র্তার কাছ থেকেই