পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/১০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমার সমরনীতি ఫిd একটা কথু চারিদিকে প্রচারিত হইতেছে যে, আমি আমেরিকা ও ইংলণ্ডে যে সামান্ত কাজ করিয়াছি, থিওজফিস্টগণ তাহাতে আমার সহায়তা করিয়াছিলেন । আমি তোমাদিগকে স্পষ্ট ভাষায় বলিতেছি, এ-কথা সর্বৈব মিথ্যা । এই জগতে উদার ভাব এবং ‘মতভেদ সত্ত্বেও সহানুভূতি’-সম্বন্ধে আমরা অনেক লম্বা লম্বা কথা শুনিতে পাই । বেশ কথা, কিন্তু আমরা কার্যতঃ দেখিতে পাই, যতক্ষণ একজন অপর ব্যক্তির সব কথায় বিশ্বাস করে, ততক্ষণই ঐ ব্যক্তি তাহার প্রতি সহানুভূতি করিয়া থাকে। যখনই সে তাহার সহিত কোন বিষয়ে ভিন্নমতাবলম্বী হইতে সাহসী হয়, তখনই সেই সহানুভূতি চলিয়া যায়, ভালবাস। উড়িয়া যায় । আরও অনেকে আছে, তাহদের নিজেদের এক একটা স্বাৰ্থ আছে। যদি কোন দেশে এমন কিছু ব্যাপার ঘটে, যাহাতে তাহাদের স্বার্থে আঘাত লাগে, তবে তাহদের ভিতর প্রভূত ঈর্ষা ও ঘৃণার আবির্ভাব হয় ; তাহাৱা তখন কি করিবে, কিছুই ভাবিয়া পায় না । হিন্দুরা নিজেদের ঘর নিজের পরিষ্কার করিবার চেষ্টা করিতেছে, তাহাতে খ্ৰীষ্টান মিশনরীদের ক্ষতি কি ? হিন্দুরা প্রাণপণে নিজেদের সংস্কারসাধনের চেষ্টা করিতেছে—তাহাতে ব্রাহ্মসমাজ ও অন্যান্য সংস্কার-সভাগুলির কি অনিষ্ট হইবে ? ইহার কেন হিন্দুদের সংস্কারচেষ্টার বিরোধী হইবেন ? ইহার কেন এইসব আন্দোলনের প্রবলতম শক্র হইয়া দাড়াইবেন ? কেনু ?—আমি এই প্রশ্ন করিতেছি। আমার বোধ হয়, তাহাদের ঘৃণা ও ঈর্ষার পরিমাণ এত অধিক যে, এ-বিষয়ে তাহাদের নিকট কোনরূপ প্রশ্ন করা সম্পূর্ণ নিরর্থক। প্রথমে থিওজফিস্টদের কথা বলি। চার বৎসর পুর্বে যখন থিওজফিক্যাল সোসাইটির নেতার নিকট গমন করি—তখন আমি একজন দরিদ্র অপরিচিত সন্ন্যাসী মাত্র, একজনও বন্ধু-বান্ধব নাই, সাত সমুদ্র তের নদী পার হইয়া আর্মকে আমেরিকায় যাইতে হইবে, কিন্তু কাহারও নামে লিখিত কোন প্রকার পরিচয়পত্র নাই। আমি স্বভাবতই ভাবিয়াছিলাম, ঐ নেতা যখন একজন মার্কিন এবং ভারতপ্রেমিক, তখন সম্ভবতঃ তিনি আমাকে আমেরিকায় কাহারও নিকট পরিচয়পত্র দিতে পারেন। কিন্তু তাহর নিকট গিয়া ঐরূপ পরিচয়পত্র প্রার্থনা কুরায় তিনি জিজ্ঞাসা করিলেন, ‘তুমি কি আমাদের সোসাইটিতে যোগ দিবে ? আমি উত্তর দিলাম, ‘না, আমি কিরূপে আপনাদের সোসাইটিতে