পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/১২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমার স্মরনীতি S 6 ఫి তাহারা অতীতের দিকে দৃষ্টিপাত করিয়া বলিতেন—হিন্দুগণ, তোমরা এতদিন যাহা করিয়াছু, তাহা ভালই হইয়াছে ; কিন্তু হে ভ্রাতৃগণ, আমাদিগকে আরও ভাল কাজ করিতে হইবে । তাহার এ-কথা বলেন নাই যে, তোমরা এতদিন মন্দ ছিলে, এখন তোমাদিগকে ভাল হইতে হইবে । র্তাহারা বলিতেন, তোমরা ভালই ছিলে, কিন্তু এখন তোমাদিগকে আরও ভাল হইতে হইবে। এই দুই প্রকার কথার ভিতর বিশেষ পার্থক্য আছে । আমাদিগকে আমাদের প্রকৃতি অনুযায়ী উন্নতির চেষ্টা করিতে হইবে । বৈদেশিক সংস্থাগুলি জোর করিয়া আমাদিগকে যে প্রণালীতে চালিত করিবার চেষ্টা করিতেছে, তদনুযায়ী কাজ করার চেষ্টা বৃথা ; উহা অসম্ভব । আমাদিগকে যে ভাঙিয়া চুরিয়া অপর জাতির মতো গড়িতে পারা অসম্ভব, সেজন্য ঈশ্বরকে ধন্যবাদ। আমি অন্যান্য জাতির সামাজিক প্রথার নিন্দ করিতেছি না । তাহদের পক্ষে উহা ভাল হইলেও আমাদের পক্ষে নহে। তাহাদের পক্ষে যাহা অমৃত, আমাদের পক্ষে তাহা বিষবং হইতে পারে। প্রথমে এইটিই শিক্ষা করিতে হইবে । অন্য ধরনের বিজ্ঞান ঐতিহ্য ও পদ্ধতি অনুযায়ী গঠিত হওয়াতে তাহাদের আধুনিক সমাজবিধি প্রথা একরূপ দাড়াইয়াছে। আমাদের পশ্চাতে আবার অন্য ধরনের ঐতিহ্য এবং সহস্ৰ সহস্ৰ বংসরের কর্ম রহিয়াছে, সুতরাং আমরা স্বভাবতই আমাদের সংস্কার অনুযায়ী চলিতে পারি, এবং আমাদিগকে সেইরূপই করিতে হইবে। তবে আমি কি প্রণালীতে কাজ করিব ? আমি প্রাচীন মহান আচার্যগণের উপদেশ অনুসরণ করিতে চাই। আমি তাহাদের কাজের বিশেষ আলোচনা করিয়াছি এবং তাহারা কি প্রণালীতে কাজ করিয়াছিলেন, ঈশ্বরেচ্ছায় তাহা আবিষ্কার করিয়াছি। সেই মহাপুরুষগণ সমাজসমূহ সংগঠন করিয়াছিলেন, তাহারা উহাতে বিশেষভাবে বল, পবিত্রত ও জীবনীশক্তি সঞ্চারিত করিয়াছিলেন । র্তাহারা অতি বিস্ময়কর কাজ করিয়াছিলেন । আমাদিগকেও ঐরূপ কার্যসমূহ করিতেই হইবে । এখন অবস্থাচক্রের কিছু পরিবর্তন হইয়াছে, সেজন্য কার্যপ্রণালীর সামান্ত পরিবর্তন করিতে হইবে, আর কিছু নয় । জামি দেখিভূেছি—ব্যক্তির পক্ষে যেমন, প্রত্যেক জাতির পক্ষেও তেমনি জীবনের একটি বিশেষ উদেশ্ব থাকে । উহাই তাহার জীবনের কেন্দ্রস্বরূপ । উহাই যেন তাহাঁর জীবনসঙ্গীতের প্রধান স্বর, অন্যান্ত হয় যেন সেই প্রধান