পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/১৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতীয় জীবনে বেদাস্তের কার্যকারিত 为文建 সুতরাং এখন এই ব্যক্তির জীবনের আলোকে আমি দেখিতেছি যে, দ্বৈতবাদী ও অদ্বৈতবাদীর পরস্পর বিবাদ করিবার কোন প্রয়োজন নাই । উভয়েরই জাতীয় জীবনে বিশেষ স্থান আছে । দ্বৈতবাদী থাকিবেই— অদ্বৈতবাদীর ন্যায় দ্বৈতবাদীরও জাতীয় ধর্মজীবনে বিশেষ স্থান আছে। একটি ব্যতীত অপরটি থাকিত্বে পারে না, একটি অপরটির পরিণতি ; একটি যেন গৃহ, অপরটি ছাদ ; একটি যেন মূল, অপরটি ফল । আর উপনিষদের শকার্থের বিপর্যয় করিবার চেষ্টা অামার নিকট অতিশয় হাস্যাম্পদ বলিয়া বোধ হয় ; কারণ আমি দেখিতে পাই, উহার ভাষাই অপুর্ব । শ্ৰেষ্ঠ দর্শনরূপে উহার গৌরব ছাড়িয়া দিলেও, মানবজাতির যুক্তিপথ-প্রদর্শক ধর্মবিজ্ঞানরূপে উহার অদ্ভূত গৌরব ছাড়িয়া দিলেও ঔপনিষদিক সাহিত্যে মহান ভাবের যেমন অতি অপুর্ব চিত্র আছে, জগতে আর কোথাও তেমন নাই । এখানেই মানবমনের সেই প্রবল বিশেষত্ব—সেই অন্তদৃষ্টিপরায়ণ হিন্দুমনের বিশেষ পরিচয় পাওয়া ষায় । অন্যান্য সকল জাতির ভিতরেই এই মহান ভাবের চিত্র অঙ্কন করিবার চেষ্ট দেখা যায় ; কিন্তু প্রায় সর্বত্রই দেখিবে, তাহারা বাহ প্রকৃতির মহান ভাবকে ধরিবার চেষ্টা করিয়াছে । উদাহরণস্বরূপ মিল্টন, দাস্তে, হোমর বা অন্য যে-কোন পাশ্চাত্য কবির কাব্য আলোচনা করা যাউক, তাহাদের কাব্যে স্থানে স্থানে মহত্বধায়ক অপূর্ব শ্লোকাবলী দেখিতে পাওয়া যায়, কিন্তু সেখানে সর্বত্রই ইন্দ্রিয়গ্রাহ বহিঃপ্রকৃতির বর্ণনার চেষ্টা—বহিঃপ্রকৃতির বিশাল ভাব, দেশকালের অনন্ত ভাবের বর্ণনা । আমরা বেদের সংহিতাভাগেও এই চেষ্টা দেখিতে পাই । কষ্টি প্রভৃতি বর্ণনাত্মক কতকগুলি অপূর্ব ঋঙুমন্ত্রে বাহ প্রকৃতির মহান ভাব, দেশকালের অনস্তত্ব যতদূর উচ্চভাষায় সম্ভব বর্ণনা করা হইয়াgছ ; কিন্তু তাহারা যেন শীঘ্রই দেখিতে পাইলেন যে, এ উপায়ে অনস্তস্বরূপকে ধরিতে পারা যায় না ; বুঝিলেন, তাহাদের মনের যে-সকল ভাব তাহারা ভাষায় প্রকাশ করিতে চেষ্টা করিতেছেন, অনস্ত দেশ অনস্ত বিস্তার ও অনস্ত বাহপ্রকৃতিও সেগুলি প্রকাশ করিতে অক্ষম । তখন র্তাহারা জগৎ-সমস্যা ব্যাখ্যা করিবার জন্য অন্য পথ ধরিলেন। উপনিষদের ভাষা নূতন মূর্তি ধারণ করিল—উপনিষদের ভাষা একরূপ নাস্তিভাবস্তোতক, স্থানে স্থানে অফুট উহা যেন তোমাকু অতীন্দ্রিয় রাজ্যে