পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/১৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতীয় জীবনে বেদাস্তের কার্যকারিতা \రిసె হে নাস্তিকগ্নণ, তোমরা ঈশ্বরের উপর কর্তৃত্ব করিতে সাহস কর কিসে? কারণ তোমরা কি জান না, প্রত্যেকটি আত্মাই পরমাত্মস্বরূপ ? নিজেদের চরকায় তেল দাও, তোমাদের ঘাড়ে এক বোঝা কর্ম রহিয়াছে । হে নাস্তিকগণ, সমগ্র জাতি তোমাদিগকে গাছে তুলিয়া দিতে পারে, সমাজ তোমাদের উচ্চ প্রশংসা করিয়া আকাশে তুলিয়া দিতে পারে, আহাম্মকেরা তোমাদের সুখ্যাতি করিতে পারে, কিন্তু ঈশ্বর নিত্রিত নহেন , ইহলোকে বা পরলোকে নিশ্চয়ই তোমাদের শান্তিমূলক ব্যবস্থা হইবে । প্রত্যেক নরনারীকে—সকলকেই ঈশ্বরদৃষ্টিতে দেখিতে থাকে । তোমরা কাহাকেও সাহায্য করিতে পার না, কেবল সেবা করিতে পারে। প্রভুর সন্তানদিগকে, যদি সৌভাগা হয় তবে স্বয়ং প্রভুকে সেবা কর । যদি প্রভুর অতু গ্রহে তাহার কোন সস্তানের সেবা করিতে পারে, তবে ধন্য হইবে । নিজেদের খুব বড় কিছু ভাবিও না । ধন্য যে তোমবা সেবা করিবার অধিকার পাইয়াছ, অপরে পায় নাই। উপাসনাবোধে ঐটুকু কর । দরিদ্র ব্যক্তিদের মধ্যে আমি যেন ঈশ্বরকে দেখি, নিজ মুক্তির জন্য তাহাদের নিকটে গিয়া তাহাদের পুজা করিব—ঈশ্বর তাহণদের মধ্যে রহিয়াছেন । কতকগুলি লোক যে দুঃখ পাইতেছে, তাহা তোমার আমার মুক্তির জন্য—যাহাতে আমরা রোগী, পাগল, কুষ্ঠ, পাপী প্রভৃতি রূপধারী প্রভূর পূজা করিতে পারি। আমার কথাগুলি বড় কঠিন হইতেছে, কিন্তু আমাকে ইহা বলিতেই হইবে, কারণ তোমার আমার জীবনের ইহাই শ্রেষ্ঠ সৌভাগ্য যে, আমরা প্রভুকে এই-সকল বিভিন্ন রূপে সেবা করিত্বে পারি। কাহারও কল্যাণ করিতে পারে—এ ধারণা ছাড়িয়া দাও । তবে যেমন বীজকে জল মুক্তিক বায়ু প্রভৃতি তাহার বৃদ্ধির প্রয়োজনীয় জিনিসগুলি যোগাইয়া দিলে উহা নিজ প্রকৃতির নিয়মাতুযায়ী যাহা কিছু আবশ্বক গ্রহণ করে এবং নিজের প্রকৃতি অনুযায়ী বাড়িতে থাকে, তোমরাও সেইভাবে অপরের কল্যাণসাধন করিতে পারে । জগতে জ্ঞানালোক বিস্তার কর ; আলোক-আলোক লইয়া আইস । প্রত্যেকে জ্ঞানালোক প্রাপ্ত হউক ; যতক্ষণ না সকলেই ভগবানের নিকট পৌছায়, ততক্ষণ যেন তোমাদের কাজ শেষ না হয়। দরিদ্রের নিকট জ্ঞানালোক বিস্তার কর, ধনীদের নিকট আরও অধিক আলোক লইয়া যাও, কারণ দরিদ্র অপেক্ষ ধনীদের অধিক আলোক প্রয়োজন। অশিক্ষিত ব্যক্তিদের নিকট আলোক।