পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমেরিক ও ইওরোপে সাড়ে তিন বৎসর কাল বেদান্ত প্রচার করির ১৮৯৭ খৃঃ ১৫ই জামুঙ্গারি স্বামীজী সিংহলের রাজধানী কলম্বো বন্দরে অবতরণ করেন। ঐ দিনই এক অভিনন্দনের উত্তরে একটি সংক্ষিপ্ত ভাষণ দেন। পরদিন অপরাহ্লে 'ফ্লোরাল হলে’ স্বামীজী যে বক্তৃতা দেন, তাহাই 'কলম্বো হইতে আলমোড়া বক্তৃতাবলীর প্রথম বস্তৃত । যে সামান্ত কার্য আমাদ্বারা হইয়াছে, তাহা আমার নিজের কোন শক্তিবলে হয় নাই ; পাশ্চাত্যদেশে পর্যটনকালে আমার এই পরম-পবিত্র প্রিয় মাতৃভূমি হইতে যে উৎসাহবাক্য, যে শুভেচ্ছা, যে আশীর্বাণী লাভ করিয়াছি, উহ! সেই শক্তিতেই হইয়াছে। অবশ্য কিছু কাজ হইয়াছে বটে, কিন্তু এই পাশ্চাত্যদেশ-ভ্রমণে বিশেষ উপকার হইয়াছে আমার ; কারণ পুর্বে যাহা হয়তো হৃদয়ের আবেগে বিশ্বাস করিতাম, এখন তাহা আমার পক্ষে প্রমাণসিদ্ধ সত্য হইয়া দাড়াইয়াছে। পুর্বে সকল হিন্দুর মতো আমিও বিশ্বাস করিতাম — ভারত পুণ্যভূমি, কর্মভূমি । মাননীয় সভাপতি মহাশয়ও তাহ বলিয়াছেন ; আজ আমি এই সভায় দাড়াইয়া দৃঢ়তার সহিত বলিতেছি—ইহা সত্য, সত্য, অতি সত্য ! যদি এই পৃথিবীর মধ্যে এমন কোন দেশ থাকে, যাহাকে পুণ্যভূমি নামে বিশেষিত • করা যাইতে পারে—যদি এমন কোন স্থান থাকে, যেখানে পৃথিবীর সকল জীবকেই তাহার কর্মফল ভোগ করিবার জন্য আসিতে হইবে— যেখানে ঈশ্বরের অভিমুখী জীবমাত্রকেই পরিণামে আসিতে হইবে—যেখানে মনুষ্যজাতির ভিতর সর্বাপেক্ষ অধিক ক্ষম, দয়া, পবিত্রত, শান্তভাব প্রভৃতি সদগুণের বিকাশ হইয়াছে—যদি এমন কোন দেশ থাকে, যেখানে সর্বাপেক্ষা অধিক আধ্যাত্মিকতা ও অন্তর্দৃষ্টির বিকাশ হইয়াছে, তবে নিশ্চয়ই বলিতে পারি, তাহা অামাদের মাতৃভূমি—এই ভারতবর্ষ। - - অতি প্রাচীনকাল হইতেই এখানে বিভিন্ন ধর্মের সংস্থাপকগণ আবিষ্কৃত হইয়া সমগ্র পৃথিবীকে বারংবার সনাতন ধর্মের পবিত্র আধ্যাত্মিক বন্যায় ভাসাইয়া দিয়াছেন। এখান হইতেই উত্তর-দক্ষিণ পূর্ব-পশ্চিম—সর্বত্র দার্শনিক জ্ঞানের প্রবল তরঙ্গ বিস্তৃত হইয়াছে। আবার এখান হইতেই তরঙ্গ উখিত হইয়া সমগ্র পৃথিবীর জড়ৰাণী সভ্যতাকে শাখ্যাত্মিকতায় পূর্ণ করিবে। অন্যান্ত