পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/১৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতীয় মহাপুরুষগণ ○盤や প্রেমোন্মত্ততা ! , তখন সংসারের আর কিছু মনে থাকে না, ভক্ত তখন সংসারে কৃষ্ণ—একমাত্র সেই কৃষ্ণ ব্যতীত আর কিছুই দেখেন না, তখন তিনি সর্বপ্রাণীতে কৃষ্ণ দর্শন করেন, তাহার নিজের মুখ পর্যন্ত তখন কৃষ্ণের মতো দেখায়, তাহার আত্মা তখন কৃষ্ণবর্ণে রঞ্জিত হইয়া যায়। মহাহভব কৃষ্ণের ঈদৃশ মহিমা । কৃষ্ণজীবনের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অবাস্তর কথা লইয়া সময় নষ্ট করিও না ; তাহার জীবনের মূখ্য অংশ যাহা, তাহাই অবলম্বন কর । কৃষ্ণের জীবনচরিতে হয়তো অনেক ঐতিহাসিক অসামঞ্জস্য আছে, অনেক বিষয় হয়তো প্রক্ষিপ্ত হইয়াছে, এ সবই সত্য হইতে পারে, কিন্তু তাহা হইলেও ঐ সময়ে সমাজে যে এক অপুর্ব নূতন ভাবের অভু্যদয় হইয়াছিল, তাহার অবশুই ভিত্তি ছিল । অন্ত যে-কোন মহাপুরুষের জীবন আলোচনা করিলেই দেখিতে পাই যে, তিনি তাহার পূর্ববর্তী কতকগুলি ভাবের প্রতিধ্বনিমাত্র ; আমরা দেখিতে পাই যে, তিনি র্তাহার নিজ দেশে, এমন কি সেই সময়ে যে-সকল শিক্ষা প্রচলিত ছিল, শুধু সেগুলিই প্রচার করিয়া গিয়াছেন । এমন কি, সেই মহাপুরুষ আদে ছিলেন কি না, সে সম্বন্ধেই গুরুতর সন্দেহ থাকিতে পারে । কিন্তু কৃষ্ণের উপদেশ বলিয়া কথিত এই নিষ্কাম কর্ম ও নিষ্কাম প্রেমতত্ত্ব জগতে অভিনব মৌলিক ভাব নহে, ইহ প্রমাণ কর দেখি । যদি না পারে, তবে অবশ্যই স্বীকার করিতে হইবে ষে, কোন এক ব্যক্তি নিশ্চয়ই এই তত্ত্বগুলি উদ্ভাবন করিয়াছিলেন । ঐ তত্ত্বগুলি অপর কোন ব্যক্তির নিকট হইতে গৃহীত বলিয়া স্বীকার করিতে পারা যায় না। কারণ কষ্ণের সুবির্ভাবকালে সর্বসাধারণের মধ্যে ঐ তত্ত্ব প্রচারিত ছিল বলিয়া জানা যায় না। ভগবান কৃষ্ণই ইহার প্রথম প্রচারক, র্তাহার শিষ্য বেদব্যাস উক্ত তত্ব জনসাধারণের মধ্যে প্রচার করিলেন। মানবভাষায় এরূপ "শ্রেষ্ঠ অাদর্শ আর কখনও চিত্রিত হয় নাই । আমরা তাহার গ্রন্থে গোপীজনবল্লভ সেই সুন্দাবনের রাখালরাজ অপেক্ষ আর কোন উচ্চতর আদর্শ পাই না। যখন তোমাদের মস্তিষ্কে এই উন্মত্তত প্রবেশ করিবে, যখন তোমরা মহাভাগ৷ গোপীগণের ভাব বুঝিবে, তখনই তোমরা জানিতে পারিবে প্রেম কি বস্তু ! যখন সমগ্র জগং তোমাদের দৃষ্টিপথ হইতে অস্তৰ্হিত হইবে, যখন তোমাদের হৃদয়ে অন্য কোন কামনা থাকিবে না, যখন তোমাদের সম্পূর্ণ চিত্তশুদ্ধি হইবে, আর কোনও লক্ষ্য থাকিবে না, এমন কি যখন তোমাদের সত্যানুসন্ধান পৃহা