পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/১৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতীয় মহাপুরুষগণ Σ & ξύ কিন্তু ভারতের জীবনীশক্তি তখনও নষ্ট হয় নাই, তাই আবার ভগবানের আবির্ভাব হইল। যিনি বলিয়াছিলেন, “যখনই ধর্মের গ্লানি হয়, তখনই আমি আসিয়া থাকি, তিনি আবার আবির্ভূত হইলেন । এবার তাহার আবির্ভাব হইল দক্ষিণাত্যে । সেই ব্রাহ্মণযুবক, র্যাহার সম্বন্ধে কথিত আছে যে, ষোড়শ বর্ষে তিনি তাহার সকল গ্রন্থ রচনা শেষ করিয়াছিলেন, সেই অদ্ভুত প্রতিভাশালী শঙ্করাচার্যের অভু্যদয় হইল। এই ষোড়শবর্ষীয় বালকের রচনা আধুনিক সভ্য জগতে এক বিস্ময়! আর তিনিও ছিলেন বিস্ময়জনক । তিনি চাহিয়াছিলেন সমগ্র ভারতকে তাহার প্রাচীন পবিত্রভাবে লইয়া যাইতে ; কিন্তু ভাবিয়া দেখ—এই কার্য কত কঠিন ও কত বিরাট ! সে-সময়ে ভারতের অবস্থা যাহা দাড়াইয়াছিল, সে সম্বন্ধে তোমাদিগকে কিছু আভাস দিয়ুছি। তোমরা যে-সকল বীভৎস আচারের সংস্কার করিতে অগ্রসর হইতেছ, সেগুলি সেই অধঃপতনের যুগ হইতে আসিয়াছে। তাতার বেলুচি প্রভৃতি দুর্দান্ত জাতিসকল ভারতে আসিয়া বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করিয়া আমাদের সহিত মিশিয়া গেল, এবং তাহাদের জাতীয় আচারগুলিও সঙ্গে লইয়া আসিল । এইরূপে আমাদের জাতীয় জীবন অতি ভয়ানক পাশবিক আচারসমূহ দ্বারা কলুষিত হইল। উক্ত ব্রাহ্মণযুবক বৌদ্ধদের নিকট হইতে দায়স্বরূপ ইহাই প্রাপ্ত হইয়াছিলেন, আর সেই সময় হইতে বর্তমানকাল পর্যন্ত সমগ্র ভারতে এই অবনত বৌদ্ধধর্ম হইতে বেদান্তের পুনবিজয় চলিতেছে, এখনও এ-কার্য চলিতেছে, এখনও উহা শেষ হয় নাই। মহান দার্শনিক শঙ্কর আসিয়া দেখাইলেন, বৌদ্ধধর্ম ও রেদান্তের সারাংশে বিশেষ প্রভেদ নাই। তবে বুদ্ধদেবের শিষ্যপ্রশিযুগণ র্তাহার উপদেশের তাৎপর্য বুঝিতে না পারিয়া নিজেরা পতিত হয় এবং আত্মা ও ঈশ্বরের অস্তিত্ব অস্বীকার করিয়া নাস্তিক হইয়া পড়ে—শঙ্কর ইহাই দেখাইলেন ; তখন সকল বৌদ্ধই তাহাদের প্রাচীন ধর্ম গ্রহণ করিতে লাগিল। কিন্তু তাহারা ঐ-সকল অনুষ্ঠানপদ্ধতিতে অভ্যস্ত হইয়াছিল ; সেগুলির কি হইবে, ইহাই এক মহাসমস্ত হইল । ভুখন মহাহভব রামাহজের অত্যুদয় হইল । শঙ্কর মহামনীষী ছিলেন বটে, কিন্তু বোধ হয় তাহার হৃদয় মস্তিষ্কের অনুরূপ ছিল না। রামানুজের হৃদয় শঙ্করের হৃদয় অপেক্ষ উদার ছিল। পতিতের দুঃখে ৰ্তাহার হৃদয় কাদিল, তিনি তাহদের দুঃখ মৰ্মে মৰ্মে অনুভব করিতে লাগিলেন।, কালে যে-সকল