পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/১৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>やbr স্বামীজীর বাণী ও রচনা পৃথিবীকে কিছু না কিছু দিয়া আসিতেছি, অজ্ঞ ব্যক্তিগণ য়াহাই ভাবুক না কেন । t 象 তবে ভারতের দান—ধৰ্ম, দার্শনিক জ্ঞান ও আধ্যাত্মিকতা ; ধর্মজ্ঞান বিস্তার করিতে, ধর্মপ্রচারের পথ পরিষ্কার করিতে সৈন্যদলের প্রয়োজন হয় না । জ্ঞান ও দার্শনিক সত্য শোণিতপ্রবাহের মধ্য দিয়া লইয়া যাইতে হয় না। জ্ঞান ও দার্শনিক তত্ত্ব রক্তাক্ত নরদেহের উপর দিয়া সদৰ্পে অগ্রসর হয় না, ঐগুলি শান্তি ও প্রেমের পক্ষদ্বয়ে ভর করিয়া শাস্তভাবে আসিয়া থাকে, আর এইরূপই বরাবর হইয়াছে। অতএব দেখা গেল, ভারতকেও বরাবর পৃথিবীকে কিছু না কিছু দিতে হইয়াছে। লণ্ডনস্থ জনৈক মহিলা আমাকে জিজ্ঞাসা করিয়াছিলেন, ‘তোমরা হিন্দুরা কি করিয়াছ ? তোমরা কখন একটি জাতিকেও জয় কর নাই ? ইংরেজ জাতির পক্ষে—বীর, সাহসী, ক্ষত্রিয়প্রকৃতি ইংরেজ জাতির পক্ষে এ কথা শোভা পায় ; তাহাদের পক্ষে একজন অন্তকে জয় করিতে পারিলে তাহাই শ্রেষ্ঠ গৌরব বলিয়া বিবেচিত হয় । তাহাদের দৃষ্টিতে উহা সত্য বটে, কিন্তু আমাদের দৃষ্টিতে ঠিক বিপরীত । যখন আমি আমার মনকে জিজ্ঞাসা করি, ‘ভারতের শ্রেষ্ঠত্বের কারণ কি ? উত্তর পাই, “কাবণ এই যে, আমরা কখনও অপর জাতিকে জয় করি নাই । ইহাই আমাদের গৌরব । তোমরা আজকাল সর্বদাই “আমাদের ধর্ম পরধর্ম-বিজয়ে সচেষ্ট নহে? বলিয়া উহার নিন্দ শুনিতে পাও ; আর আমি দুঃখের সহিত বলিতেছি, এমন ব্যক্তিগণের নিকট শুনিতে পাও, যাহাদের নিকট অধিকতর জ্ঞানের আশা করা যায়। আমার মনে হয়, আমাদের ধর্ম যে অন্যান্য ধর্ম অপেক্ষা সত্যের অধিকতর নিকটবর্তী, ইহাই তাহার একটি প্রধান যুক্তি ; আমাদের ধর্ম কখনই অপর ধর্ম জয় করিতে প্রবৃত্ত হয় নাই, উহা কখনই রক্তপাত করে নাই, উহা সর্বদাই আশীৰ্বাণী ও শাস্তিবাক্য উচ্চারণ করিয়াছে, সকলকে উহা প্রেম ও সহানুভূতির কথাই বলিয়াছে। এখানে—কেবল এখানেই পরধর্ম-সহিষ্ণুতা-বিষয়ক ভাবসমূহ প্রথম প্রচারিত হয় ; কেবল এইখানেই এই পরধর্ম-সহিষ্ণুত ও সহানুভূতির ভাব কার্যে পরিণত হইয়াছে। অন্যান্য দেশে ইহা কেবল মতবাদে পর্যবসিত। এখানে-- কেবল এখানেই হিন্দুরা মুসলমানদের জন্য মসজিদ ও খ্ৰীষ্টানদের জন্য চার্চ নির্মাণ করিয়া দেয়। অতএব হে ভদ্রমহোদয়গণ, আপনারা বুঝিতেছেন—আমরা আমাদের ভাব জগতে অনেকবার বহন করিয়াছি, কিন্তু অতি ধীরে, নীরবে ও