পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/২০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

〉。8 স্বামীজীর রাণী ও রচনা ঋষি-মুনি ছিলেন—আমাদিগকে তাহাদের কার্যকলাপ ভক্তিশ্রদ্ধার দৃষ্টিতে দেখিতে হইবে । તુ, তোমাদিগকেও ঋষি-মুনি হইতে হইবে। ইহাই কৃতকার্য হইবার গোপন রহস্য । অল্পাধিক পরিমাণে সকলকেই ঋষি হইতে হইবে । ‘ঋষি’ শব্দের অর্থ কি ? বিশুদ্ধস্বভাব ব্যক্তি। আগে শুদ্ধচিত্ত হও—তোমাতেই শক্তি আসিবে । কেবল “আমি ঋষি বলিলেই চলিবে না ; যখনই তুমি যথার্থ ঋষিত্ব লাভ করিবে, দেখিবে—-অপরে তোমার কথা কোন না কোন ভাবে শুনিতেছে । তোমার ভিতর হইতে এক আশ্চর্য শক্তি আসিয়া অপরের মনের উপর প্রভাব বিস্তার করিবে ; তাহার বাধ্য হইয়া তোমার অতুবতী হইবে, বাধা হইয়া তোমার কথা শুনিবে, এমন কি তাহাদের অজ্ঞাতসারে নিজেদের ইচ্ছার বিরুদ্ধেও তোমার সংকল্পিত কাজে সহায়ক হইবে। ইহাই ঋষিত্ব । * অবশ্য যাহা বলিলাম তাহাতে কার্যপ্রণালী বিশেষ কিছু বর্ণন করা হইল না। বংশপরম্পরাক্রমে পূর্বোক্ত ভাব লইয়া কাজ করিতে করিতে বিশেষ বিশেষ কার্যপ্রণালী আবিষ্কৃত হইবে । বিবাদ-বিসংবাদের যে কিছুমাত্র প্রয়োজন নাই, তাহা দেপাইবার জন্য আমি দুই-একটি কথার আভাস দিলাম মাত্র । আমার অধিকতর দুঃপের কারণ এই যে, আজকাল বিভিন্ন জাতির মধ্যে পরস্পর ঘোর বাদ-প্রতিবাদ চলিতেছে। এটি বন্ধ হওয়| চাই। কোন পক্ষেরই ইহাতে কিছু লাভ নাই। উচ্চতর বর্ণের, বিশেষত: ব্রাহ্মণের ইহাতে লাভ নাই ; কারণ একচেটিয়া অধিকারের দিন গিয়াছে। প্রত্যেক অভিজাত জাতির । কর্তব্য—নিজের সমাধি নিজে খনন করা ; আর যত শীঘ্র তাহার এ-কার্য করে, তদ্রুতই তাহদের পক্ষে মঙ্গল । যত বিলম্ব হইবে, ততই তাহারা পচিবে আর ংসও তত ভয়ানক হইবে । এই কারণে ব্রাহ্মণজাতির কর্তব্য—ভারতের অন্যান্য সকলজাতির উদ্ধারের চেষ্টা করা ; ব্রাহ্মণ যদি উদ্ধারের চেষ্টা করেন এবং যতদিনই ইহা করেন, ততদিনই তিনি ব্রাহ্মণ ; তিনি যদি শুধু টাকার চেষ্টায় ঘুরিয়া বেড়ান, তবে তাহাকে ব্রাহ্মণ বলা যায় না। আবার তোমাদেরও প্রকৃত ব্রাহ্মণকেই সাহায্য করা উচিত, তাহাতে স্বৰ্গলাভ হইবে ।" কিন্তু অনুপযুক্ত ব্যক্তিকে দান করিলে স্বৰ্গলাভ ন হইয়া বিপরীত ফল হয়—আমাদের শাস্ত্র এই কথা. বলে। এই বিষয়ে তোমাদিগকে সাবধাম হইতে হইবে।