পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/২১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

3 е с স্বামীজীর রাণী ও রচনা দোষও আছে ; আর দোষগুলি এত বেশী যে, গুণভাগ নগন্য হইয়া যায় । প্রথমত, ঐ শিক্ষায় মানুষ তৈরী হয় না—ঐ শিক্ষা সম্পূর্ণ নাস্তিভাবপুর্ণ। এইরূপ শিক্ষায় অথবা অন্য যে-কোন নেতিমূলক শিক্ষায় সব ভাঙিয়া-চুরিয়া যায়— মৃত্যু অপেক্ষাও তাহা ভয়ানক। বালক স্কুলে গিয়া প্রথম শিথিল—তাহার বাপ একটা মূখ, দ্বিতীয়তঃ তাহার পিতামহ একটা পাগল, তৃতীয়তঃ প্রাচীন আচার্ষগণ সব ভণ্ড, আর চতুর্থত: শাস্ত্র সব মিথ্যা। ষোল বৎসর বয়স হইবার পূর্বেই সে একটা প্রাণহীন, মেরুদণ্ডহীন না’-এর সমষ্টি হইয়া দাড়ায় । ইহার ফল এই দাড়াইয়াছে যে, এইরূপ পঞ্চাশ বৎসরের শিক্ষায়, ভারতের তিনটি প্রেসিডেন্সির ভিতরে মৌলিকচিস্তাযুক্ত একটি মানুষও পাওয়া যায় না । যিনি মৌলিকভাবপুর্ণ, তিনি অন্যত্র শিক্ষালাভ করিয়াছেন, এদেশে নয় ; অথবা তিনি নিজেকে কুসংস্কার হইতে মুক্ত করিবার জন্য প্রাচীন শিক্ষাপ্রণালী অবলম্বন করিয়াছেন। মাথায় কতকগুলো তথ্য ঢুকানো হইল, সারাজীবন হজম হইল না—অসম্বদ্ধভাবে মাথায় ঘুরিতে লাগিল—ইহাকে শিক্ষা বলে না। বিভিন্ন ভাবকে এমনভাবে নিজের করিয়া লইতে হইবে, যাহাতে আমাদের জীবন গঠিত হয়, যাহাতে মানুষ তৈরী হয়, চরিত্র গঠিত হয়। যদি তোমরা পাচটি ভাব হজম করিয়া জীবন ও চরিত্র ঐ ভাবে গঠিত করিতে পারে, তবে যেব্যক্তি একটি গ্রন্থাগারের সবগুলি পুস্তক মুখস্থ করিয়াছে, তাহার অপেক্ষা তোমার অধিক শিক্ষা হইয়াছে বলিতে হইবে । যথা খরশ্চন্দনভারবাহী ভারস্য বেত্তা ন তু চন্দনন্ত –চন্দনভারবাহী গর্দভ যেমন উহার ভারই বুঝিতে পারে, অন্যান্য গুণ বুঝিতে পারে না, ইত্যাদি। যদি শিক্ষা বলিতে কতকগুলি বিষয় জানা মাত্র বুঝায়, তবে লাইব্রেরিগুলিই তে জগতের মধ্যে শ্রেষ্ঠ জ্ঞানী, অভিধানসমূহই তো ঋষি । সুতরাং আদর্শ হওয়া উচিত যে, আমাদের আধ্যাত্মিক ও লৌকিক সর্বপ্রকার শিক্ষা নিজেদের হাতে লইতে হইবে এবং যতদূর সম্ভব জাতীয়ভাবে ঐ শিক্ষা দিতে হইবে। অবশ্য ইহা একটি গুরুতর ব্যাপার-কঠিন সমস্ত । জানি না, ইহা কখন কার্যে পরিণত হইবে কি না । কিন্তু আমাদিগকে কাজ আরম্ভ করিয়া দিতে হইবে । কিভাবে আমাদের কাজ করিতে হইবে ? দৃষ্টান্তস্বরূপ এই মাদ্রাজের কথাই ধর। আমাদিগকে একটি মন্দির নির্মাণ করিতে হইবে—কারণ হিন্দুগণ সকল