পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/২১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨ ૦ 8 স্বামীজীর রাণী ও রচনা জীবনযাপন করে, পাশ্চাত্যদেশের আইন দরিদ্রকে গরীবখানায় ( poorhouse ) যাইতে বাধ্য করে ; মানুষ কিন্তু খাদ্য অপেক্ষা স্বাধীনতা ভালবাসে, স্বতরাং সে গরীবখানায় না গিয়া সমাজের শক্ৰ—চোর ডাকাত হইয়া দাড়ায়। ইহাদিগকে শাসনে রাখিবার জন্য আবার অতিরিক্ত পুলিস ও জেল প্রভৃতির বন্দোবস্ত করিতে সমাজকে অতিশয় বেগ পাইতে হয়। সভ্যতা নামে পরিচিত ব্যাধি যতদিন সমাজ-শরীর অধিকার করিয়া থাকিবে, ততদিন দারিদ্র্য থাকিবেই, সুতরাং দরিদ্রকে সাহায্যদানেরও আবশ্বকতা থাকিবে। এখন হয় ভারতের মতো নির্বিচারে দান করিতে হইবে, যাহার ফলে অন্তত: সন্ন্যাসিগণকে —র্তাহারা সকলে অকপট না হইলেও —আহার সংগ্ৰহ করিবার জন্য শাস্ত্রের দু-চারটা কথাও শিক্ষা করিতে বাধ্য করিয়াছে ; অথবা পাশ্চাত্যজাতির মতো বিধিবদ্ধভাবে দান করিতে হইবে, যাহার ফলে অতি ব্যয়সাধ্য দারিদ্র্য-দুঃখনিবারণ-প্রথার উৎপত্তি হইয়াছে এবং যে-অাইন ভিক্ষুককে চোর-ডাকাতে পরিণত করিয়াছে। এই দুইটি ছাড়া পথ নাই । এখন কোন পথ অবলম্বনীয়, একটু ভাবিলেই বুঝা যাইবে । কলিকাতা অভিনন্দনের উত্তর ১৮৯৭ খৃ: ফেব্রুআরির শেষ সপ্তাহে মাস্ত্রাজ হইতে ৰুলিকাতায় পৌছিলে স্বামীজী বিপুলভাবে অভ্যর্থত হন । ২৬শে ফেব্রুমারি শোভাবাজার রাজবাটীতে কলিকাতাবাসিণের পক্ষ হইতে তাহাকে এক অভিনন্দন-পত্র প্রদত্ত হয়। সভাপতি রাজা বিনয়কৃষ্ণ দেব বাহাদুরের সংক্ষিপ্ত ভাষণের পর অভিনন্দনের উত্তরে স্বামীজী বলেন : t মানুষ নিজের মুক্তির চেষ্টায় জগৎপ্ৰপঞ্চের সম্বন্ধ একেবারে ত্যাগ করিতে চায়, মানুষ নিজ আত্মীয় স্বজন স্ত্রী-পুত্র বন্ধু-বান্ধবের মায়া কাটাইয়া সংসার হইতে দূরে—অতি দূরে পলাইয়া যায় ; চেষ্টা করে দেহগত সকল সম্বন্ধ—পুরাতন সকল সংস্কার ত্যাগ করিতে, এমন কি সে নিজে যে সার্ধ-ত্রিহস্ত-পরিমিত দেহধারী মানুষ, ইহাও ভুলিতে প্রাণপণ চেষ্টা করে ; কিন্তু তাহার অন্তরের অন্তরে সর্বদাই সে একটি মৃদ্ধ অস্ফুট ধ্বনি শুনিতে পায়, তাহার কর্ণে একটি স্বর সর্বদা