পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/২২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কলিকাতা অভিনন্দনের উত্তর આ છ જે মুখ হইতে এমন কোন কথা বাহির হইয়া থাকে, যাহা দ্বারা জগতে কোন ব্যক্তি কিছুমাত্র উপকৃত হইয়াছে, তাহাতে আমার কোন গৌরব নাই, তাহ তাহারই। কিন্তু যদি আমার জিহব। কখন অভিশাপ বর্ষণ করিয়া থাকে, যদি আমার মুখ হইতে কখন কাহারও প্রতি ঘৃণাস্থচক বাক্য বাহির হইয়া থাকে, তবে তাহ। আমার, তাহার নহে। য়াহ। কিছু দুর্বল, যাহা কিছু দোষযুক্ত সবই আমার । যাহা কিছু জীবনপ্রদ; যাহা কিছু বলপ্রদ, যাহা কিছু পবিত্র, সকলই তাহার প্রেরণা, তাহারই বাণী এবং তিনি স্বয়ং। সত্যই বন্ধুগণ, জগৎ এখনও সেই মহামানবকে জানিতে পারে নাই। আমরা জগতের ইতিহাসে শত শত মহাপুরুষের জীবনী পাঠ করিতেছি । এখন আমরা যে-আকারে সেই-সকল জীবনী পাই, সেগুলিতে শত শতাব্দী যাবৎ শিষ্যপ্রশিষ্যগণের পরিবর্তন-পরিবর্ধনরূপ লেখনী-মুলনার পরিচয় পাওয়া যায়। সহস্ৰ সহস্ৰ বংসর যাবৎ প্রাচীন মহাপুরুষগণুের জীবনচরিতগুলি ঘষিয়া-মজিয়া কাটিয়া-ছাটিয় মন্থণ করা হইয়াছে, কিন্তু তথাপি যে-জীবন আমি স্বচক্ষে দেখিয়াছি, র্যাহার ছায়ায় আমি বাস করিয়াছি, র্যাহার পদতলে বসিয়া আমি সব শিথিয়াছি, সেই রামকৃষ্ণ পরমহংসের জীবন যেমন উজ্জল ও মহিমান্বিত, আমার মতে আর কোন মহাপুরুষের জীবন তেমন মহে । বন্ধুগণ ! তোমাদের সকলেরই ভগবানের শ্ৰীমুখ-নিঃস্বত গীতার সেই প্রসিদ্ধ বাণী জানা আছে : যদ যদা হি ধৰ্মস্ত গ্লানির্ভবতি ভারত । অভু্যত্থানমধৰ্মস্ত তদাত্মানং স্বজাম্যহম্ ॥ পরিত্রাণায় সাধুনাং বিনাশায় চ দুষ্কৃতাম্। ধর্মসংস্থাপনার্থায় সম্ভবামি যুগে যুগে ৷ —যখনই যখনই ধর্মের গ্লানি ও অধর্মের অত্যুথান হয়, তখনই আমি শরীরধারণ করি। সাধুগণের পরিত্রাণ, দুষ্টের দমন ও ধর্মসংস্থাপনের জন্য আমি যুগে যুগে জন্মগ্রহণ করি । এই সঙ্গে আর একটি কথা তোমাদিগকে বুঝিতে হইবে, বিষয়টি এখন আমাদের সম্মুখে উপস্থিত। এইরূপ একটি ধর্মের প্রবল বন্যা আসিবার পূর্বে সমাজের সর্বত্র ঐক্ষপ্ত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র তরঙ্গ-পরম্পরার আবির্ভাব দেখিতে পাওয়া যায় । ইহাদের মধ্যে একটি তরঙ্গ-প্রথমে যাহার অস্তিত্বই হয়তো কাহারও 4-58