পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/২৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

良8之 স্বামীজীর বাণী ও রচনা বিলাসিতা ভারতে প্রবেশ করিয়া আমাদের মজ্জা মাংস পর্যন্ত শুষিয়া ফেলিবার চেষ্টা করিতেছে এবং সমগ্র ভারতীয় জাতিকে কপটতায় পুর্ণ করিয়া ফেলিবার উপক্রম করিতেছে, সেই বিলাসিতার স্থানে ত্যাগের আদর্শ ধরিয়া সমগ্র" জাতিকে সাবধান করিবার জন্য একটু কৃচ্ছসাধন প্রয়োজন। আমাদিগকে ত্যাগের আদর্শ অবলম্বন করিতে হইবেই হইবে। প্রাচীনকালে এই ত্যাগ সমগ্র ভারতকে জয় করিয়াছিল, এখনও এই ত্যাগই আবার ভারতকে জয় করিবে । এই ত্যাগ এখনও ভারতীয় সকল আদর্শের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ও গরিষ্ঠ । ভগবান বুদ্ধ, ভগবান রামানুজ, ভগবান রামকৃষ্ণ পরমহংসের জন্মভূমি, ত্যাগের লীলাভূমি এই ভারত—যেখানে অতি প্রাচীনকাল হইতে কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ চলিতেছে, যেখানে এখনও শত শত ব্যক্তি সর্বত্যাগ করিয়া জীবন্মুক্ত হইতেছেন, সেই দেশ কি এখন , তাহার আদর্শ জলাঞ্জলি দিবে ? কখনই নহে। হইতে পারে— পাশ্চাত্য বিলাসিতার আদর্শে কতকগুলি ব্যক্তির মস্তিষ্ক বিকৃত হইয়াঁ গিয়াছে, হইতে পারে—সহস্ৰ সহস্র ব্যক্তি এই ইন্দ্রিয়ভোগরূপ পাশ্চাত্য গরল আকণ্ঠ পান করিয়াছে, তথাপি আমার মাতৃভূমিতে সহস্ৰ সহস্র ব্যক্তি নিশ্চয়ই আছেন, র্যাহীদের নিকট ধর্ম কেবল কথার কথা মাত্র থাকিবে না, র্যাহারা প্রয়োজন হইলে ফলাফল বিচার না করিয়াই সর্বত্যাগে প্রস্তুত হইবেন । আর একটি বিষয়ে আমাদের সকল সম্প্রদায় একমত—সেটি আমি তোমাদের সকলের সমক্ষে বলিতে ইচ্ছা করি । এই বিষয়টিও বিরাট । ধর্মকে সাক্ষাৎ করিতে হইবে—এই ভাবটি ভারতের বিশেষ সম্পত্তি । ‘নায়মাত্মা প্রবচনেন লভ্যো ন মেধয়া ন বহুনা শ্রীতেন ।” —অধিক বাক্যব্যয়ের দ্বারা অথবা কেবল বুদ্ধিবলে বা অনেক শাস্ত্র পাঠ করিয়া এই আত্মাকে লাভ করা যায় না। শুধু তাহাই নহে, জগতের মধ্যে একমাত্র আমাদের শাস্ত্রই ঘোষণা করেন, শাস্ত্রপাঠের দ্বারাও আত্মাকে লাভ করিতে" পারা যায় না, বৃথা বাক্যব্যয় ও বক্তৃতা দ্বারাও আত্মজ্ঞানলাভ হয় না ; আত্মাকে প্রত্যক্ষ অনুভব করিতে হইবে । গুরু হইতে শিষ্যে এই শক্তি সংক্রামিত হয়। শিষ্যের যখন এই অন্তদৃষ্টি হয়, তখন তাহার নিকট সব পরিষ্কার হইয়া যায়, তিনি তখন সাক্ষাং আত্মোপলব্ধি করেন । * * আর এক কথা । বাঙলা দেশে এক অদ্ভুত প্রথা দেগ্নিতে পাওয়া যায়— উহার নাম কুলগুরুপ্রথা। আমার পিতা তোমার গুরু ছিলেন–এখন আমিও