পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/২৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আলমোড়া অভিনন্দনের উত্তর 令畿登 পর বৎসর ধরিয়া মামার মাথায় যে আলোড়ন চলিতেছিল, তাহ যেন শাস্ত হইয়া আসিল, এবং আমি কি কাজ করিয়াছি, ভবিষ্যতেই বা আমার কি কাজ করিবার সঙ্কল্প আছে, ঐ-সকল বিষয়ের আলোচনায় না গিয়া এখন আমার মন--হিমালয় যে এক সনাতন সত্য অনন্তকাল ধরিয়া শিক্ষা দিতেছে, যে এক . সত্য এই স্থানের হাওয়াতে পর্যন্ত খেলিতেছে, ইহার নদীসমূহের বেগশীল আবর্তসমূহে আমি যে এক তত্ত্বের মৃদু অস্ফুটধ্বনি শুনিতেছি—সেই ত্যাগের দিকে প্রধাবিত হইয়াছে। ‘সর্বং বস্তু ভয়ান্বিতং ভুবি নৃণাং বৈরাগ্যমেবাভয়ম্। –এই জগতে সকল জিনিসই ভয়ের কারণ, কেবল বৈরাগ্যই ভয়শূন্ত । ই, সত্যই ইহা বৈরাগ্য-ভূমি। এখন আমার মনের ভাবসমূহ বিস্তারিতভাবে বলিবার সময় বা সুযোগ নাই। অতএব উপসংহারে বলিতেছি যে, এই হিমালয়পৰ্বত বৈরাগ্য ও ত্যাগের সাকার মূর্তিরূপে দণ্ডায়মান, আল্ল মানবজাতিকে এই ত্যাগ অপেক্ষ আর কিছু উচ্চতর ও মহত্তর শিক্ষা দিবার আমাদের নাই। যেমন আমাদের পুর্বপুরুষগণ র্তাহাদের জীবনের শেষভাগে এই হিমালয়ের প্রতি আকৃষ্ট হইতেন, সেইরূপ ভবিষ্যতে পৃথিবীর সর্বস্থান হইতে বীরহাদয় ব্যক্তিগণ এই শৈলরাজের দিকে আকৃষ্ট হইবেন—যখন বিভিন্ন সম্প্রদায়ের বিরোধ ও মতপার্থক্য লোকের স্মৃতিপথ হইতে অন্তহিত হইবে, যখন তোমার ধর্মে ও আমার ধর্মে যে বিবাদ তাহ! একেবারে অন্তহিত হইবে, যখন মানুষ বুঝিবে, এক সনাতন ধর্মই বিদ্যমান—সেটি অন্তরে ব্রহ্মানুভূতি, আর যাহা কিছু সব বৃথা। এইরূপ সত্যপিপাস্ক ব্যক্তিগণ সংসার মায়ামাত্র এবং ঈশ্বর—শুধু "ঈশ্বরের উপাসনা ব্যতীত আৰু সবই বৃথা জানিয়া এখানে আসিবে। বন্ধুগণ, তোমরা অনুগ্রহপূর্বক আমার একটি সঙ্কল্পের বিষয় উল্লেখ করিয়াছ। মামার মাথায় এখনও হিমালয়ে একটি কেন্দ্র স্থাপন করিবার সঙ্কল্প আছে, স্বার অন্যান্য স্থান অপেক্ষ এই স্থানটি এই সার্বভৌম ধর্মশিক্ষার একটি প্রধান কেন্দ্ররূপে কেন নির্বাচিত করিয়াছি, তাহাও সম্ভবতঃ তোমাদিগকে ভালরূপে বুঝাইতে সমর্থ হইয়াছি। এই হিমালয়ের সহিত আমাদের জাতির শ্রেষ্ঠ স্মৃতিসমূহ জড়িত । যদি ভারতের ধর্মেতিহাস হইতে হিমালয়কে বাদ দেওয়া যায়, তবে উহার অতি অল্পই অবশিষ্ট থাকিবে । অতএব এখানে একটি কেন্দ্র চাই-ই চাই—এই কেন্দ্র কর্মপ্রধান হইবে, না-এখানে নিস্তব্ধতা শাস্তি ও ধ্যানশীলতা অধিক মাত্রায় বিরাজ করিবে, শাবু আমি আশা করি, একদিন না একদিন আমি ইহা কার্বে