পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/২৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

*むbr স্বামীজীর বাণী ও রচনা করেন , বৈষ্ণবেরা তাহাদের সর্বশক্তিমান বিষ্ণুতেই অহরক্ত, আর দেবীর উপাসকগণ দেবীকেই সর্বাপেক্ষা শক্তিসম্পন্ন বলিয়া বিশ্বাস করেন। কিন্তু যদি স্থায়ী ভক্তি লাভ করিতে ইচ্ছা থাকে, তবে এই দ্বেষভাব একেবারে পরিত্যাগ করিতে হইবে। দ্বেষ ভক্তিপথের মহান প্রতিবন্ধক—যে বাক্তি উহা পরিত্যাগ করিতে পারেন, তিনিই ঈশ্বরলাভ করেন। যদিও দ্বেষভাব পরিত্যাজ্য, তথাপি ইষ্টনিষ্ঠার প্রয়োজন। ভক্তশ্রেষ্ঠ হনুমান বলিয়াছেন ঃ শ্ৰীনাথে জানকীনাথে অভেদঃ পরমাত্মনি । তথাপি মম সর্বস্বে রাম: কমললোচনঃ , —আমি জানি যিনি লক্ষ্মীপতি, তিনিই সীতাপতি ; পরমাত্মা-দৃষ্টিতে উভয়ে এক, তথাপি কমললোচন রামই আমার সর্বস্ব। মাহুয়ের প্রত্যেকেরই ভাব ভিন্ন ভিন্ন । এই-সকল বিভিন্ন ভাব লইয়া মানুষ জন্মিয়া থাকে। সে কখনও ঐ ভাবকে অতিক্রম করিতে পারে না । জগং যে কখনও একধর্মাবলম্বী হইতে পারে না, ইহাই তাহার একমাত্র কারণ। ঈশ্বর করুন, জগৎ যেন কখন একধর্মাবলম্বী না হয় । তাহা হইলে জগতে এই সামঞ্জস্তের পরিবর্তে বিশৃঙ্খলা উপস্থিত হইবে স্বতরাং মানুষ যেন নিজ নিজ প্রকৃতির অনুসরণ করে ; আর যদি এমন গুরু পায়, যিনি র্তাহার ভাবাকুযায়ী এবং সেই ভাবের পুষ্টিবিধায়ক উপদেশ দেন, তবেই সে উন্নতি করিতে সমর্থ হইবে । তাহাকে সেই ভাবের বিকাশ-সাধন করিতে হইবে । কোন ব্যক্তি যে পথে চলিতে ইচ্ছা করে, তাহাকে সেই পথে চলিতে দিতে হইবে ; কিন্তু যদি আমরা তাহাকে অন্ত পথে টানিয়া লইয়া যাইতে চেষ্টা করি, তবে তাহার যাহা আছে সে তাহাও হারাইবে ; সে একেবারে অকৰ্মণ্য হইয়া পড়িবে। একজনের মুখ আর একজনের মুখের সঙ্গে মেলে না, সেইরূপ একজনের প্রকৃতি আর একজনের প্রকৃতির সঙ্গে মেলে না। আর তাহাকে তাহার নিজের প্রকৃতি অনুযায়ী চলিতে দিতে বাধা কি ? কোন নদী এক বিশেষ দিকে প্রবাহিত হইতেছে—যদি উহাকে সেই দিকেই একটি নির্দিষ্ট খাতের মধ্য দিয়া প্রবাহিত করা যায়, তবে উহার স্রোত আরও প্রবল হয়, “উহার বেগ বর্ধিত হয় ; কিন্তু উহা স্বভাবতঃ যে দিকে প্রবাহিত হইতেছে, সেই দিক হইতে সরাইয়া অন্যদিকে প্রবাহিত করিবার চেষ্টা কর, তাহা হইলে দেখিবে কি ফল