পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/২৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

、やめ স্বামীজীর বাণী ও রচনা তথাপি এই বৈচিত্র্য থাকিবার কোন বাধা নাই। সকল ধর্মে ভাল ভাল লোক আছে, এই কারণেই সেই সব ধর্ম লোকের শ্রদ্ধা আকর্ষণ করিয়া থাকে, সুতুরাং কোন ধর্মকেই ঘৃণা করা উচিত নয় । - এখানে এই প্রশ্ন উঠিতে পারে, যে-ধর্ম অন্তায় কার্যের পোষকতা করিয়া থাকে, সেই ধর্মের প্রতিও কি সম্মান দেখাইতে হইবে ? অবশ্য, ইহার উত্তর 'না' ব্যতীত আর কি হইতে পারে ? এইরূপ ধর্মকে যত শীঘ্র সম্ভব দূরীভূত করিতে পারা যায়, ততই ভাল ; কারণ উহা দ্বারা লোকের অকল্যাণই হইয়। থাকে । নীতির উপরই যেন সকল ধর্মের ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত হয়, আর ব্যক্তিগত পবিত্রতা বা শুদ্ধ আচারকে ধর্ম অপেক্ষা উচ্চতর মনে করা উচিত। এখানে ইহাও বলা কর্তব্য যে, ‘আচার’ অর্থে বাহ ও আভ্যন্তর উভয় প্রকার শুদ্ধি। জল এবং শস্ত্রোক্ত অন্যান্য বস্তুসংযোগে শরীরের শুদ্ধিবিধান করা যাইতে পারে । আভ্যন্তর শুদ্ধির জন্য মিথ্যাভাষণ সুরাপান ও অন্যান্ত গহিত কার্য পরিত্যাগ করিতে হইবে, সঙ্গে সঙ্গে পরোপকার করিতে হইবে। মদ্যপান চৌর্য দূতক্রীড়া মিথ্যাভাষণ প্রভৃতি অসংকার্য হইতে যদি বিরত থাকে, তবে তো ভালই—উহ! তো তোমার কর্তব্য। ইহার জন্য তুমি কোনরূপ প্রশংসা পাইতে পার না। অপরেরও যাহাতে কল্যাণ হয়, তাহার জন্য কিছু করিতে হইবে। এখানে আমি ভোজনের নিয়ম সম্বন্ধে কিছু বলিতে ইচ্ছা করি। ভোজন সম্বন্ধে প্রাচীন বিধি সবই এখন লোপ পাইয়াছে ; কেবল এই ব্যক্তির সঙ্গে খাইতে নাই, উহার সঙ্গে খাইতে নাই—এইরূপ একটা অস্পষ্ট ধারণ লোকের মধ্যে রহিয়াছে দেখিতে পাওয়া যায়। শত শত বৎসর পুর্বে আহার সম্বন্ধে যে-সকল স্বন্দর নিয়ম ছিল, এখন ঐগুলির ভগ্নাবশেষরূপে এই স্পৃষ্টাঙ্গুষ্ট বিচারমাত্র দেখিতে পাওয়া যায়। শাস্ত্রে খাদ্যের ত্ৰিবিধ দোষ কথিত আছে : জাতিদোষ—যে-সকল আহার্য-বস্তু স্বভাবতই অশুদ্ধ, যেমন পেয়াজ রগুন প্রভৃতি, সেগুলি খাইলে জাতিদুষ্ট খাদ্য খাওয়া হইল। যে-ব্যক্তি ঐ-সকল খাদ্য অধিক পরিমাণে খায়, তাহার কামের প্রাবল্য হয় এবং সে-ব্যক্তি ঈশ্বর ও মানুষের চক্ষে ঘৃণিত অসং কৰ্মসকল করিতে থাকে। আবর্জন-কীটাদি-পূর্ণ স্থানে আহারকে নিমিত্তদোষ বলে। এই দোষবর্জনের জন্য আহারের এমন স্থান নির্দিষ্ট করিতে হইবে, যে-স্থান খুব পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। আশ্রয়দোষ—অসৎ ব্যক্তি কর্তৃক স্পষ্ট অন্ন পরিত্যাগ করিতে হইবে, কারণ এরূপ অন্ন ভোজন