পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/২৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

&守br স্বামীজীর বাণী ও রচনা হইয়া যায়। যদি তুমি বলে—“আমার মধ্যেও শক্তি আছে, তোমার ভিতর শক্তি জাগিবে ; আর যদি তুমি বলে—“আমি কিছুই নই, ভাবে য়ে তুমি কিছুই নও, দিবারাত্র যদি ভাবিতে থাকে। যে তুমি কিছুই নও, তবে তুমি কিছু না হইয়া দাড়াইবে । এই মহান তত্ত্বটি তোমাদের মনে রাখা কর্তব্য । আমরা সেই সর্বশক্তিমানের সস্তান, আমরা সেই অনন্ত ব্ৰহ্মাগ্নির স্ফুলিঙ্গ। আমরা ‘কিছু না কিরূপে হইতে পাবি ? আমরা সব করিতে প্রস্তুত, সব করিতে পারি, আমাদিগকে সব করিতেই হইবে । আমাদের পুর্বপুরুষগণের হৃদয়ে এই আত্মবিশ্বাস ছিল, এই আত্মবিশ্বাসরূপ প্রেরণাশক্তিই তাহাদিগকে সভ্যতার উচ্চ হইতে উচ্চতর সোপানে আরূঢ় করাইয়াছিল, আর যদি এখন অবনতি হইয়া থাকে,যদি আমাদের ভিতর দোষ আসিয়া থাকে, তবে অামি তোমাদিগকে নিশ্চয় করিয়া বলিতেছি—যে দিন আমাদের দেশের লোক এই আত্মপ্রত্যয় হারাইয়াছে, সেইদিন হইতেই এই অবনতি আরম্ভ হইয়াছে। নিজের উপর বিশ্বাস হারানোর অর্থ ঈশ্বরে অবিশ্বাস। তোমরা কি বিশ্বাস কর, সেই অনন্ত মঙ্গলময় বিধাতা তোমাদের মধ্য দিয়া কাজ করিতেছেন ? তোমরা যদি বিশ্বাস কর যে, সেই সর্বব্যাপী অন্তর্যামী প্রত্যেক অণুতে পরমাণুতে, তোমাদেব দেহে মনে আত্মায় ওতপ্রোতভাবে রহিয়াছেন, তাহা হইলে কি তোমরা নিরুৎসাহ হইতে পারো ? আমি হয়তো একটি ক্ষুদ্র জলবুদবুদ, তুমি হয়তো একটি পর্বতপ্রায় তরঙ্গ ৷ হইলই বা ! সেই অনন্ত সমুদ্র যেমন তোমার আশ্রয়, আমারও সেইরূপ । সেই প্রাণ, শক্তি ও আধ্যাত্মিকতার অনন্ত সমুদ্রে তোমারও যেমন অধিকার আমারও তেমনি । আমার জন্ম হইতেই—আমারও যে জীবন আছে তাহী হইতেই—স্পষ্ট প্রতীয়মান হইতেছে যে, পর্বতপ্রায় উচ্চ তরঙ্গস্বরূপ তোমার ন্যায় আমিও সেই অনন্ত জীবন, অনন্ত শিব ও অনন্ত শক্তির সহিত নিত্যসংযুক্ত । অতএব হে ভ্রাতৃগণ, তোমাদের সন্তানগণকে—তাহাদের জন্ম হইতেই এই জীবনপ্রদ, মহত্ত্ববিধায়ক, উচ্চ মহান তত্ত্ব শিক্ষা দিতে আরম্ভ কর। তাহাদিগকে অদ্বৈতবাদ শিক্ষা দিবার প্রয়োজন নাই, তাহাদিগকে দ্বৈতবাদ বা যে-কোন বাদ ইচ্ছা শিক্ষা দাও ; আমরা পুর্বেই দেখিয়াছি, আত্মার পুর্ণত্বরূপ এই অপুর্ব মতটি ভারতে সর্বসাধারণ—সকল সম্প্রদায়ই বিশ্বাস করিয়া থাকে। ' ' আমাদের শ্রেষ্ঠ দার্শনিক কপিল বলিয়াছেন, যদি পবিত্রতা আত্মার স্বরূপ না হয়, তবে আত্মা কখনই পরে পবিত্রতা লাভ করিতে সমর্থ হইবে না ; কারণ