পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/২৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

f হিন্দুধর্মের সাধারণ ভিত্তি ২৭৯ যে স্বভাবতই পুর্ণ নহে, সে কোনরূপে উহা লাভ করিলেও উহার নিকট হইতে আবার চলিয়া যাইবে। যদি অপবিত্রতাই মানবের স্বভাব হয়, তবে যদিও ক্ষণকালের জন্য সে পবিত্রতা লাভ করে, তথাপি চিরকালের জন্য তাহাকে অপবিত্রই থাকিতে হইবে। এমন সময় আসিবে, যখন এই পবিত্রতা ধুইয়া যাইবে, চলিয়া যাইবে ,এবং আবার সেই প্রাচীন স্বাভাবিক অপবিত্রতা রাজত্ব করিবে। এজন্য আমাদের সকল দার্শনিক বলেন, পবিত্রতাই আমাদের স্বভাব, অপবিত্রত নহে ; পুর্ণত্বই আমাদের স্বভাব, অপূর্ণত নহে—এইটি স্মরণ রাখিও । মৃত্যুকালে যে মহর্ষি তাহার নিজ মনকে তাহার কৃত উংকৃষ্ট কার্যাবলী ও উৎকৃষ্ট চিন্তারাশি স্মরণ করিতে বলিতেছেন–র্তাহার কথা স্মরণ রাখিও • কই, তিনি তো তাহার মনকে সমৃদয় দোষ-দুর্বলতা স্মরণ করিতে বল্লিতেছেন না । অবশু মামুষের জীবনে দোষ-দুর্বলতা যথেষ্ট আছে ; কিন্তু সর্বদাই তোমার প্রকৃত স্বরূপ স্মরণ কর—ঐ দোষ-দুর্বলতা প্রতিকার করিবার ইহাই একমাত্র উপায় । ভদ্রমহোদয়গণ, আমার বোধ হয়, পূর্বকথিত কয়েকটি মত ভারতের সকল বিভিন্ন ধর্মসম্প্রদায়ই স্বীকার করিয়া থাকেন, আর সম্ভবতঃ ভবিষ্যতে এই সাধারণ ভিত্তির উপর গোড়া বা উদার, প্রাচীন বা নব্যপন্থী, সকলেই সম্মিলিত হইবেন । কিন্তু সর্বোপরি, আর একটি বিযয় স্মরণ রাখা আবশ্বক এবং আমি দুঃখের সহিত বলিতেছি যে, ইহা আমরা সময় সময় ভুলিয়। যাই—ভারতে ধূর্মের অর্থ প্রত্যক্ষানুভূতি, তাহা ন হইলে উহা ধর্ম নামেরই যোগ্য নহে। “এইমতে বিশ্বাস করিলেই,তোমার পরিত্রাণ নিশ্চিত—এ-কথা আমাদিগকে কেহ কখন শিখাইতে পারিবে না ; কারণ আমরা ও-কথায় বিশ্বাসই করি না । তুমি নিজেকে যেরূপ গঠন করিবে, তুমি তাহাই হইবে। তুমি যাহ-তাহ। "তুমি ঈশ্বরানুগ্রহে এবং নিজ চেষ্টায় হইয়াছ। স্বতরাং কেবল কতকগুলি মতামতে বিশ্বাস করিলে তোমার বিশেষ কিছু উপকার হইবে না। ভারতের আধ্যাত্মিক গগন হইতেই এই মহাশক্তিময়ী বাণী আবির্ভূত হইয়াছে— ‘অন্তৰ্ভূতি’ ; আর একমাত্র আমাদের শাস্ত্রই বারবার বলিয়াছেন, ঈশ্বরকে দর্শন করিতে হইবে। খুব সাহসের কথা বটে, কিন্তু উহার একবর্ণও মিথ্যা নয়— > ওঁ কতো ; কত ক্ষর কতোক্ষর কৃতং শ্মর । ঈশ উপ. ১৭