পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/২৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বামীজীর বাণী ও রচনা چئ=Rby: পান-বিষয়ে যথার্থ শুদ্ধতা রক্ষা করিতে অবহেলা করিয়াই এই কষ্ট পাইতেছি —আমরা শাস্ত্রাচুমোদিত ভোজন-পান-প্রথা ভুলিয়া গিয়াছি । আরও কয়েকটি প্রশ্ন আছে, সেগুলিও অামি আপনাদের সমক্ষে উপস্থিত করিতে চাই । আর এই সমস্যাগুলির সমাধানই বা কি, কিরূপেই বা সেগুলি কার্যে পরিণত করা যাইতে পারে, সে সম্বন্ধে আমি ভাবিয়া চিন্তিয়া কি সিদ্ধান্তে উপনীত হইয়াছি, তাহাও আপনাদিগকে বলিতে চাই। কিন্তু দুঃখের বিষয়, সুশৃঙ্খলভাবে সভার কার্য আরম্ভ হইতেই বিলম্ব হইয়াছে, আর এখন অনেক রাত্রি হইয়া গিয়াছে । সুতরাং আমি মাননীয় সভাপতি মহাশয়ের এবং আপনাদের রাত্রির অণহারের আর অধিক বিলম্ব ঘটাইতে ইচ্ছা করি না। অতএব । আমি জাতিভেদ ও অন্যান্য বিষয় সম্বন্ধে আমার বক্তব্য ভবিষ্কৃতের জন্য রাখিয় দিলাম। আশা করি, ভবিষ্যতে আমরা সকলেই অপেক্ষাকৃত শান্ত ও সুশৃঙ্খলভাবে সভায় যোগদান করিতে চেষ্টা করিব । ভদ্রমহোদয়গণ, আর একটি কথা বলিলেই আমার আধ্যাত্মিক তত্ত্বসম্বন্ধে বক্তব্য শেষ হইবে । ভারতে ধর্ম অনেক দিন ধরিয়া নিশ্চল হইয়া আছে— আমরা চাই উহাকে গতিশীল করিতে। আমি প্রত্যেক ব্যক্তির জীবনে এই ধর্ম প্রতিষ্ঠিত করিতে চাই । অতীতকালে বরাবর যেরূপ হইয়া আসিয়াছে, তেমনি এখনও রাজপ্রাসাদে এবং দরিদ্রের পর্ণকুটিরে ধর্ম যেন সমভাবে প্রবেশ করে। এই জাতির সাধারণ উত্তরাধিকার এবং জন্মগত সৰ্বজনীন স্বত্বরূপে প্রাপ্ত ধর্মকে প্রত্যেক ব্যক্তির দ্বারে মুক্তহস্তে লইয়া যাইতে হইবে । ঈশ্বরের রাজ্যে বায়ু যেমন সকলের অনায়াসলভ্য, ভারতের ধর্মকেও ঐরূপ স্বলভ করিতে হইবে। ভারতে আমাদিগকে এইভাবেই কাজ করিতে হইবে, কিন্তু ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সম্প্রদােয় গঠন করিয়া এবং মতানৈক্য লইয়া বিবাদ করিয়া নহে । আমি তোমাদিগকে কার্য-প্রণালীর আভাস এইটুকু দিতে চাই যে, যে-সকল বিষয়ে আমাদের সকলের একমত, সেইগুলি প্রচার করা হউক।--যে-সকল বিষয়ে মতভেদ আছে, সেগুলি আপনা-আপনি দূর হইয়া যাইবে । আমি যেমন বরাবর বলিয়াছি, গৃহে যদি শত শত শতাব্দীর অন্ধকার থাকে, এবং যদি আমরা সেই ঘরে গিয়া ক্রমাগত চীংকার করিয়া বলিতে থাকি, ‘উ: কি অন্ধকার কি অন্ধকার ? তবে কি অন্ধকার দূর হইবে ? আলোক লইয়া আইস, অন্ধকার চিরকালের জন্য চলিয়া যাইবে । মানুষের সংস্কারসাধন করিবার ইহাই রহস্য।