পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>br স্বামীজীর বাণী ও রচনা চরম প্রমাণ নহে। স্মৃতির কোন অংশ যদি বেদাস্তের বিরোধী হয়, তবে উহ পরিত্যাগ করিতে হইবে, উহার কোন প্রামাণ্য থাকিবে না। আবার এই-সকল স্মৃতি যুগে যুগে ভিন্ন। আমরা শাস্ত্রে পাঠ করি—সত্যযুগে এই এই স্মৃতির প্রামাণ্য ; ত্রেতা, দ্বাপর ও কলি –এই-সকল যুগের প্রত্যেক যুগে আবার অন্যান্ত স্মৃতির প্রামাণ্য । দেশ-কাল-পাত্রের পরিবর্তন অনুসারে আচার প্রভৃতির পরিবর্তন হইয়াছে , আর স্মৃতি প্রধানতঃ এই আচারের নিয়ামক বলিয়া সময়ে সময়ে উহাদেরও পরিবর্তন করিতে হইয়াছে । আমি এই বিষয়টি তোমাদিগকে বিশেষভাবে স্মরণ রাখিতে বলি । বেদান্তে ধর্মের যে মূল তত্ত্বগুলি ব্যাখ্যাত হইয়াছে, তাছা অপরিবর্তনীয়। কেন ?—কারণ মানুষ ও প্রকৃতির মধ্যে যে অপরিবর্তনীয় তত্ত্বসমূহ রহিয়াছে, ঐগুলি তাহাদের উপর প্রতিষ্ঠিত। ঐগুলির কখনও পরিবর্তন হইতে পারে না । আত্মা, স্বর্গ প্রভৃতির তত্ত্ব কখনও পরিবর্তিত হচতে পারে না। সহস্র বৎসর পূর্বে ঐ-সকল তত্ত্ব সম্বন্ধে যে ধারণ ছিল, এখনও তাহাই আছে, লক্ষ লক্ষ বৎসর পরেও ত হাই থাকিবে । কিন্তু যে-সকল ধর্মকার্য আমাদের সামাজিক অবস্থা ও সম্বন্ধের উপর নির্ভর করে, সমাজের পরিবর্তনের সঙ্গে সেই গুলিও পরিবতিত হইয়। যাইবে । সুতরাং সময়-বিশেষে কোন বিশেয বিধিষ্ঠ সত্য ও ফল প্রদ হইবে, অপর সময়ে নহে । তাই আমরা দেখিতে পাই, কোন সময়ে কোন খাদ্য-বিশেষের রিপান রহিয়াছে, অন্য সময়ে তাহ আবার, নিষিদ্ধ। সেই খাদ্য সেই সময়-বিশেষের উপযোগী ছিল, কিন্তু ঋতুপরিবর্তন ও অন্যান্য কারণে উহ। তৎকালের অনুপযোগী হওয়ায় স্মৃতি তখন ঐ খাদ্য-ব্যবহার নিষেধ করিয়াছেন। এই কারণে স্বভাবতই প্রতীত হইতেছে যে, যদি বর্তমানকালে আমাদের সমাজের কোন পরিবর্তন আবশ্যক হয়, তবে ঐ পরিবর্তন করিতেই হইবে ; কিভাবে ঐ-সকল পরিবর্তন করিতে হইবে—ঋষির আসিয়া তাহ দেখাইয়া দিবেন। আমাদের ধর্মের মূল স্ত্যগুলি বিন্দুমাত্র পরিবর্তিত হইবে না, উহার। সমভাবে থাকিবে । তারপর পুরাণ। পুরাণ পঞ্চলক্ষণান্বিত। উহাতে ইতিহাস, স্থষ্টিতত্ত্ব, নানাবিধ রূপকের দ্বারা "দার্শনিক-তত্ত্বসকলের বিবৃতি প্রভৃতি বহু বিযয় স্থাছে । বৈদিক ধর্ম সবসাধারণে প্রচার করিবার জন্য পুরাণ লিখিত হয়। বেদ যে-ভাষায় লিখিত তাঙ্গ অতি প্রাচীন। অতি অল্পসংখ্যক পণ্ডিতই ঐ-সকল গ্রন্থের সময়